একবালপুর থানা (Ekbalpur Police Station) এলাকার ময়ূরভঞ্জ রোড থেকে বুধবার টাকা হাতানোর ঘটনা নতুন দিকে মোড় নিল। ওই ঘটনায় আরও দুই পুলিশ (Police) কনস্টেবলকে গ্রেফতার (Arrest) করেছে একবালপুর থানার পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। একই সঙ্গে আরও তিনজনকে পাকড়াও করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ছজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার পুলিশ সূত্রে যা জানানো হয়েছিল, তার সঙ্গে বৃহস্পতিবার দেওয়া পুলিশের বিবরণের বিস্তর ফারাক রয়েছে।
বুধবার পুলিশ জানিয়েছিল, মহম্মদ আরবাজ এবং গুলরেজ খান নামে দুই তরুণকে পুলিশ ধরে। তাঁদের কাছে পাওয়া ব্যাগ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা মিলেছে। আরবাজরা এত টাকা কোথা থেকে পেলেন, তা তাঁরা জানাতে পারেননি। ফলে তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে জানতে পারা যায়, ওই টাকা থেকে পুলিশ বেশ কিছু টাকা সরিয়ে নেয়। দুই পুলিশ কর্মীকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়।
এদিন পুলিশ জানায়, আরবাজ আর্থিক লেনদেন এবং ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। আরবাজ পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর বন্ধু গুলরেজ আগের দিনের সংগৃহীত ৩৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাচ্ছিলেন একটি স্কুটিতে চেপে। তাঁরা সংস্থার ডিরেক্টরের বাড়ি থেকে ওই টাকা নেন। তাঁদের সঙ্গে ডিপোজিট স্লিপ এবং দুটি চেকও ছিল। ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাছেই মযূরভঞ্জ রোডে একবালপুর থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে দুজন তাঁদের স্কুটি আটকায়। তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করা হবে বলে জানানো হয়। এরপর আরবাজদের তারা ভিক্টোরিয়া ইন হোটেলের একটি ঘরে নিয়ে আসে। ইতিমধ্যে পুলিশ পরিচয় দিয়ে আরও দুই ব্যক্তি ওই ঘরে আসে। পরে চারজন মিলে তাঁদের মারধর করে এবং টাকার ব্যাগ জোর করে ছিনিয়ে নেয়। শেষে আরবাজদের একবালপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।
আরবাজ পুলিশের কাছে পরে অভিযোগ জানান। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় তিনি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যে থানার অফিসারদের কাছে সব কথা বুঝিয়ে বলে উঠতে পারেননি। অনেকক্ষণ পরে সংস্থার ডিরেক্টররা খবর পেয়ে থানায় আসেন। তাঁরা আরবাজের কাছ থেকে সব শুনে অফিসারদের জানান। তখন পুলিশের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়। তদন্তে নেমে অফিসাররা জানতে পারেন, দুই কনস্টেবল প্রভাত বেরা এবং স্বপন কুমার বিশ্বাস, সিভিক ভলান্টিয়ার টোটন শেখ আর শেখ চাঁদ নামে একজন এই ঘটনায় জড়িত। তারা টাকাও ছিনতাই করেছে। রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ আরও জানায়, এই ঘটনায় যুক্ত আশরফ ইলাহি এবং আকবর হোসেন নামে দুজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে নগদ ৩০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিন সকলকে আদালতে পেশ করা হয়।