উত্তরকাশী: ১৭ দিন, ৪০০ ঘণ্টা। এগুলো নিছক কোনও সংখ্যা নয়। ৪১ জন শ্রমিক, আসলে ৪১ জন মানুষ ওই ১৭ দিন কিংবা ৪০০ ঘণ্টা নরকে কাটালেন এবং অবশেষে বেঁচে ফিরে এলেন। বদ্ধ সুড়ঙ্গ, সেখানে যতই অক্সিজেন, খাবার-দাবার পাঠানো হোক, যে কোনও মুহূর্তে আবার ধস নামলেই নির্ঘাত মৃত্যু। কিন্তু রাখে হরি মারে কে? ৪১ জনকেই উদ্ধার করা হল। যা খবর পাওয়া যাচ্ছে, কেউই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েননি। এতদিন আতঙ্কে দুঃখে চোখের জল ফেলেছেন, শ্রমিকদের আত্মীয় পরিজনদের চোখে আজ আনন্দাশ্রু।
ঝাড়খণ্ডের বিজয় হোরো প্রথম সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসেন। এরপর ধীরে ধীরে সবাই। ‘অপারেশন জিন্দেগি’র চূড়ান্ত পর্ব চলল সন্ধে ৭.৪৯ থেকে রাত ৮.৩৮। ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি।
আরও পড়ুন: মৃত্যুকূপ থেকে বেরিয়ে এলেন প্রথম শ্রমিক
উত্তরকাশীর সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গে ধস নামে সেই ১২ নভেম্বর। ১৩ নভেম্বর যখন গোটা দেশ দিওয়ালির উৎসব করছে, আসমুদ্রহিমাচল যখন আলোর রোশনাইতে মেতে, ওই ৪১টি ভারতীয় প্রাণ নিকষ কালো অন্ধকারে আটকে। শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টায় কোনও কোনও ত্রুটি ছিল না অবশ্য। কিন্তু বারবার ধাক্কা খেতে হয়েছে, এমনকী আমেরিকা থেকে আনা খনন যন্ত্র পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রাণ বাঁচাল মানুষই। ইঁদুর যেমনভাবে গর্ত করে, সেভাবেই শেষ ১২ মিটার খনন করে ১২ জনের দল। আহার-নিদ্রা ভুলে টানা খনন করে এতগুলো প্রাণ বাঁচালেন তাঁরা। তাঁরাই এই উদ্ধারকার্যের আসল নায়ক।