চণ্ডীগড়: লুধিয়ানা জেলা আদালতে বিস্ফোরণের মূলচক্রী জার্মানিতে ধরা পড়ল। বার্লিনের কাউন্টার-টেরর এজেন্সির কাছে সন্দেহভাজন সম্পর্কে বিশদ রিপোর্ট পাঠিয়েছিল পঞ্জাব পুলিস। তার ভিত্তিতেই বার্লিন পুলিস গ্রেফতার করে ‘শিখ ফর জাস্টিস'(SFJ)-এর এক শীর্ষ নেতাকে। এই নিয়ে লুধিয়ানা বিস্ফোরণের মামলায় ২ জন গ্রেফতার হল। এর আগে লুধিয়ানা পুলিসেরই এক মহিলা কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। ধৃত মহিলা পুলিসকর্মী নিহত ‘বম্বার’-এর বান্ধবী।
পঞ্জাব পুলিসের দাবি, ২৩ ডিসেম্বর লুধিয়ানা আদালতে বিস্ফোরণের ঘটনায় মূলচক্রী বার্লিনে থাকা এসএফজে-র অন্যতম শীর্ষ নেতা জসবিন্দার সিং মুলতান। লুধিয়ানা পুলিসের রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে ভারতে আরও বিস্ফোরক আনার ছক কষেছিলেন মুলতান। আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে বিস্ফোরক আনিয়ে লুধিয়ানা আদালতের কায়দায় একাধিক বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল।
আদালতে বিস্ফোরণের তদন্তকারী এক অফিসার জানান, বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রচুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নিহত বম্বারের মোবাইল ফোনটিও পুলিস উদ্ধার করে। সেই ফোনের সূত্র ধরেই বিস্ফোরণ ষড়যন্ত্রে লিপ্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিস। তদন্ত করতে গিয়েই জসবিন্দার সিং মুলতানের জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্তকারীদের সামনে আসে। শিখ ফর জাস্টিসের এই নেতার বিরুদ্ধে একাধিক তথ্যপ্রমাণ পুলিসের হাতে আসে। এর পরই বার্লিন পুলিসের কাছে সেই রিপোর্ট পাঠিয়ে, গ্রেফতারের আর্জি জানানো হয়েছিল।
পঞ্জাব পুলিসের দাবি, গত অক্টোবরে তরণ-তারণ জেলার খেমকরণ অঞ্চলে চোরাপথে আগ্নেয়াস্ত্রও পাঠিয়েছিল এই মুলতান। কিন্তু, নির্দিষ্ট গন্তব্যে সেই বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছনোর আগেই পঞ্জাব পুলিস ও বিএসএফের যৌথ দল ২০ অক্টোবর তা উদ্ধার করে। খেমকরণ ভারত-পাকিস্তান সীমান্তক লাগোয়া। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় ২২টি পিস্তল, ৪৪টি ম্যাগাজিন, ১০০ রাউন্ড গুলি। অস্ত্রের সঙ্গেই ছিল এক কেজির মতো হেরোইন। তদন্তকারীরা বলছেন, পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সঙ্গে যোগ রয়েছে মুলতানের।
২৩ ডিসেম্বর লুধিয়ানা জেলা দায়রা আদালতের তৃতীয় তলের শৌচালয়ে বিস্ফোরণে গগনদীপ সিং নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। জখম হন আরও ৫ জন। গগনদীপ ছিলেন পঞ্জাব পুলিসের প্রাক্তন হেড কনস্টেবল। মাদক মামলায় জড়িয়ে পড়ায় তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, এই গগনদীপই ছিলেন বম্বার। তার কাছে ২ থেকে ৩ কেজি আরডিএক্স ছিল। ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলে, বিস্ফোরক রাখার সময় কোনও ভাবে বিস্ফোরণ ঘটে যায়। তদন্তকারীরা দাবি করেন, লুধিয়ানা বিস্ফোরণের পিছনে আইএসআইয়ের হাত রয়েছে।