পূর্ব মেদিনীপুর : মন্দারমণির (Mandarmani) কয়েক হাজার মানুষের রুটিরুজি কঠিন প্রশ্নের মুখে। প্রায় ১৪০টি অবৈধ হোটেল ভাঙার নির্দেশ প্রশাসনের। মানচিত্রে দিঘার পাশাপাশি মন্দারমণি একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। গত কয়েক বছরে পূর্ব মেদিনীপুরের এই সমুদ্র নগরীতে পর্যটকদের আনাগোনা ভীষণভাবে বেড়ে যাওয়ার এখানে আরও বেড়েছে হোটেল ও দোকানের সংখ্যাও। তবে অভিযোগ, মন্দারমণিতে গত কয়েক বছরে গড়ে ওঠা বেশ কিছু হোটেল, রিসর্ট, দোকান বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এবার মন্দারমণিতে ১৪০টি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই নির্দেশেই এবার মাথায় হাত মন্দারমণির পর্যটন ব্যবসায়ীদের। বহু মানুষের রুটি-রুজিও প্রশ্নের মুখে। হোটেল ভাঙা নিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে স্তম্ভিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, কোনওরকম বুলডোজার চলবে না।
১১ নভেম্বর সিআরজেড (কোস্টাল রেগুলেটেড জ়োন ম্যানেজমেন্ট অথরিটি)-র জেলা কমিটির তরফে মন্দারমণি এবং সংলগ্ন আরও চারটি মৌজায় ১৪০টি হোটেল, লজ, রিসর্ট এবং হোমস্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০ নভেম্বরে মধ্যে ওই সব বেআইনি নির্মাণ ভেঙে জায়গা পরিষ্কার করতে হবে, নির্দেশ দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০২২ সালে এই বেআইনি হোটেলগুলি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কারণ, হোটেলগুলি উপকূল বিধি না মেনেই গড়ে উঠেছিল। এর মধ্যে শুধু দাদনপাত্রবাড়েই রয়েছে ৫০টি হোটেল, সংলগ্ন সোনামুইয়ে ৩৬টি, সিলামপুরে ২৭টি, মন্দারমণিতে ৩০টি হোটেল এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুর মৌজায় একটি লজ রয়েছে। এ সবই ভাঙা পড়ার কথা। ডিসেম্বর মাস থেকে মন্দারমণিতে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু তার আগেই শতাধিক হোটেল এবং দোকান ভেঙে ফেলার এই নির্দেশে বেশ চিন্তার ভাঁজ পড়ছে হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁদের রুজি-রুটির দিকটি তুলে ধরেই বিকল্প ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: শীতের শুরুতেই ধরাছোঁয়ার বাইরে শাক-সবজি! কেন মূল্যবৃদ্ধি?
আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে মোট ১৪৪টি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস জারি করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষস্তরের কোনও আধিকারিক, এমনকী, মুখ্যসচিবও জানতেন না। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মমতা। এ নিয়ে হোটেল মালিকদের সঙ্গেই দ্রুতই বৈঠকে বসবেন মুখ্যসচিব।
অন্য খবর দেখুন