শিলিগুড়ি: মাথাভাঙা এবং চোপড়ার ঘটনায় (Chopra Incident) শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুললেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে (Siliguri) বোস বলেন, রাজ্য সরকার মহিলাদের উপর এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহায্য করছে এবং দুষ্কৃতীদের মদত দিচ্ছে। কোনও সভ্য সমাজে এই ঘটনা সহ্য করা যায় না। অবিলম্বে এসব বন্ধ করতে হবে। কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।
রাজ্যপাল জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) কাছে আমি অন্তত ২২বার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছে। সংবিধানের ১৬৭ ধারা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর নিজের থেকেই রাজ্যপালকে সমস্ত ঘটনা জানানো উচিত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তা করেন না। আমি বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দরকার হলে অ্যাকশন নেব।
রাজ্যপাল এদিন পুলিশকেও একহাত নেন। তিনি বলেন, আমি খবর পেয়েছে, অনেক পুলিশ অফিসার দুর্নীতিগ্রস্ত, অকর্মণ্য। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। শিলিগুড়ি থেকে রাজ্যপালের এদিন সড়কপথে চোপড়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেই সফর বাতিল করেন। কারণ হিসেবে রাজ্যপাল বলেন, ওই মহিলা আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। আমি চোপড়ায় যেতে রাজিও হয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কলকাতায় এসে আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি তাঁর কথায় রাজি হয়েছি। তাই আমি চোপড়ায় গেলাম না।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছি, শিলিগুড়িতে জানালেন রাজ্যপাল
বোস বলেন, রাজ্যে যা খুশি, তাই চলছে। জঘন্য কাজ চলছে। আমাকে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেই হবে। সোমবার রাতেও রাজ্যপাল চোপড়া এবং মাথাভাঙার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলার রাস্তায় রক্তস্নান চলছে। গ্রামে গ্রামে মৃত্যুর নৃত্য হচ্ছে। সরকারের যারা এর জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। এই জঙ্গলরাজ চলতে পারে না। তা থামাতেই হবে। দেশের সংবিধান অত্যন্ত পোক্ত। এ ধরনের নোংরামো বন্ধ করার পক্ষে সংবিধান যথেষ্ট।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি সার্কিট হাউসে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করলেন মাথাভাঙার নির্যাতিতা। দীর্ঘক্ষণ রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন নির্যাতিতা। ওই মহিলারা পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বোস। রাজ্যপালের সঙ্গে কলকাতার রাজভবনে গিয়ে দেখা করার কথা হয়েছে তাঁদের। শিলিগুড়ি থেকে তিনি ফের দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন। দিল্লি যাওয়ার আগে তিনি বলেন, যে সমাজ মহিলাদের রক্ষা করতে পারে না, সেই সমাজকে সভ্য বলে গণ্য করা হয় না।
দেখুন ভিডিও