মালদা: প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ (Allegations of corruption) তুলে প্রশাসনের দারস্থ হল উপপ্রধান সহ সদস্যরা। সরকারি প্রকল্পের (Government projects) আত্মসাৎ করছে প্রধান। এই অভিযোগ তুলে সরব বিজেপির উপপ্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যরা। এমনই ঘটনা সামনে এসছে মালদহের মানিকচক ব্লকের (Manikchak Block) ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। (Dharampur Gram Panchayat)
জানা গিয়েছে, এই পঞ্চায়েত কংগ্রেস ও বিজেপির মিলিতভাবে পরিচালিত। দশ আসন বিশিষ্ট এই ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত (Dharampur Gram Panchayat)। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস (Congress) ও বিজেপির (BJP) ঝুলিতে যায় চারটি করে আসন। দুটি আসন যায় তৃণমূলের (TMC) ঝুলিতে। প্রধান হন কংগ্রেস সদস্য কোদবাণু বিবি এবং উপপ্রধান হয় বিজেপি সদস্য লতিকা মন্ডল। তবে এই প্রধানের বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন উপপ্রধান সহ পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যরা।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যু সোনারপুরে
উপপ্রধান লতিকা মন্ডল ও সদস্যদের অভিযোগ, এসবিএম প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৬০টি কাজ ধরা হয় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাজুড়ে। কিন্তু জায়গা না পাওয়ার কারণে প্রায় ২০টি কাজ হয়েছে। তাই জায়গার অভাবে প্রায় ৪০ টি কাজ বাকি রয়েছে। প্রতিটি কাজের জন্য ৪৫ হাজার টাকা করে অর্থ সরকারিভাবে ধার্য করা হয়। কিন্তু অভিযোগ এই কাজগুলোতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকা পুরোটই পঞ্চায়েতের পকেটে ঢুকছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তাদের আরও অভিযোগ, পুরনো কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি জায়গার অভাবে। এরইমধ্যে ফের এই এসবিএম প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১০০ টিরও বেশি নতুন কাজের টেন্ডার করছে প্রধান। আর এতে যুক্ত রয়েছে পঞ্চায়েতের সরকারি কর্মীরাও। তৃণমূলকে সাথে নিয়ে এই সরকারি প্রকল্পের আবারও বিশাল অংকের দুর্নীতির পরিকল্পনা রয়েছে বলে অভিযোগ উপপ্রধান সহ সদস্যদের।
এই অভিযোগে মানিকচক ব্লক প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। তবে এই অভিযোগ যে সঠিক নয়, তা দাবি করছে পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুরজিৎ মন্ডল। তিনি জানান, ৪৮টি কাজের টেন্ডার করা হয়েছিল। ৪২টি কাজ হয়েছে। এই কাজের অধীনে নলকূপ বসানো থেকে শুরু করে কুয়ো, ট্যাঙ্ক ও স্বচ্ছতার ওপর বিভিন্ন রকম কাজ করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে ছয়টি কাজ বাকি রয়েছে। সমস্ত কাজই সঠিকভাবে হয়েছে। নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে উপপ্রধান এই ধরনের একটা ষড়যন্ত্র সৃষ্টি করেছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও কংগ্রেসের প্রধান কোদবাণু বিবি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মানিকচক ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মতিউর রহমান জানিয়েছেন, কংগ্রেসের প্রধানকে কিভাবে দমানো যায়, কিভাবে মানুষের কাজ করতে না দেওয়া যায়, সেই ধরনের চেষ্টা করা হয়। এই ধরনের সরকারি কাজ জেলা ও ব্লক প্রশাসনের সরকারি আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে হয়। তাই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা সঠিক নয়। এই ধরনের সরকারি কাজে প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সমস্তটাই ভিত্তিহীন। এই প্রকল্পের সমস্তটাই জেলা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখেন। প্রশাসনকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
দেখুন অন্য খবর