যীশু খ্রিস্ট (Jesus Christ) এক যুগাবতার, মানবতার প্রতীক। খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু হিসেবে বলা হয়ে থাকে যীশুখ্রিস্টকে। তবে শুধু খ্রিস্টধর্মালম্বীদের কাছে নয়, গোটা বিশ্বেই পূজিত তিনি। কিন্তু যীশুখ্রিষ্টকে ঘিরে নানান কাহিনি সামনে আসে। কিন্তু যীশু খ্রিস্টের আসল নাম কি? জানা গেছে ইয়েশু নাজেরিন (Yeshu Nazareen) হল তাঁর প্রকৃত নাম।
যীশু যেখানে থাকতেন, সেখানে ইংরেজি ভাষার চল ছিল না। সেখানকার মানুষের কথ্য ভাষা ছিল আরামাইক। তাই এই ধর্মাবতারের নামের পিছনে সেখানকার ভাষার ছাপ রয়েছে। পরবর্তীতে যীশু বড় হয়ে উঠেছিলেন সম্ভবত গ্যালিলের নাজারেথ অঞ্চলে। সেখানকার ইহুদি জনগোষ্ঠীর মানুষ আরামাইক ভাষায় কথা বলতেন।
যীশুখ্রিস্টের ‘খ্রিস্ট’ (Christ) নামের অর্থ বলতে বোঝায় ঈশ্বরের অভিষিক্ত ব্যক্তিকে (God’s anointed one)। এখানে প্রশ্ন উঠতেই পারে, তাহলে ইয়েশু নাজেরিন কীভাবে যীশু হলেন?
আরও পড়ুন: আমেরিকার অবনতির দিন শেষ, শপথ নিয়ে বললেন ট্রাম্প
বিশেষজ্ঞরা তথ্য অনুযায়ী, যখন নিউ টেস্টামেন্ট গ্রিক ভাষায় অনুবাদ করা হয় তখন ধ্বনিগত সমস্যার কারণে সেই নামটি উচ্চারণ করা যায়নি। সেই নামটি ইয়েশুকে লেসাস বলে পরিচিত করে। সেই প্রথম নামের বিকৃতি। এরপর নিউ টেস্টামেন্ট যখন ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করা হয় তখন লেসাসকে লেসুস হিসেবে তুলে ধরা হয়। এর পরবর্তী সময়ে ১৭ শতকে জে ধ্বনির ব্যবহার দেখা যায়। সেটাই পরবর্তীতে যীশু নামে পরিচিত হয়।
নিউ টেস্টামেন্টের লেখকরা যীশুতে “sh” এর জায়গায় গ্রীক “s” ধ্বনি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তারপরে এটিকে ভাষায় পুংলিঙ্গ করার জন্য নামের শেষে একটি চূড়ান্ত “s” যুক্ত করেছিলেন। যখন, বাইবেলটি (bible) মূল গ্রীক থেকে ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল, তখন অনুবাদকরা যীশুর নামকে “ঈসাস” হিসেবে অনুবাদ করেছিলেন।
এমনকি আরও বড় কথা হল ২৫ ডিসেম্বর নাকি তাঁর জন্মদিন নয়। অর্থাৎ যে ২৫ ডিসেম্বর যীশুখ্রিস্টের জন্মদিন বলে শ্রদ্ধাভরে পালন করে থাকে গোটা বিশ্ব, সেটি নাকি তাঁর জন্মদিন নয়! পুঁথি বলছে, পোপ জুলিয়াস নিজের সুবিধার্থে চতুর্থ শতাব্দীতে এই তারিখ বেছে নেন। তার পর থেকেই যীশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে সকলে এই দিনটিকে জানে।
যীশু নামের বানান নিয়েও দ্বন্দ্ব আছে। কারণ “যীশু” এই বানানটি ঠিক কোথা থেকে এসেছে তা নির্ণয় করা কঠিন। তবে ইতিহাসবিদের অনুমান করেন যে নামের এই সংস্করণটি সুইৎজারল্যান্ড থেকে এসেছে। সুইস জার্মানে, “J” উচ্চারিত হয় ইংরেজি “Y” এর মত, অথবা ল্যাটিন “Ie” যেমন “Iesus” এর মতো। সেই অনুযায়ী Iesus হয়ে যায় আধুনিক নাম Jesus.
দেখুন অন্য খবর: