রাজস্থান: শেষ হল পাতালপুরীর লড়াই। অবশেষে ৭০০ ফুট গভীর কুয়ো (Borewell) থেকে উদ্ধার (Rescue Operation) করা হল তিন বছরের শিশুকন্যাকে। ১০ দিন অন্ধকার কুয়োতে আটকে থাকার পর বাবা-মায়ের কোলে ফিরে এল রাজস্থানের (Rajasthan) ছোট্ট চেতনা (Chetana)। কিন্তু আফশোস একটাই, চেতনা আজ নিথর, তাঁর শরীরে নেই প্রাণটুকুও। এভাবে হয়তো সন্তানকে ফিরে পেতে চায়নি তাঁর মা। তাই দিনের পর দিন প্রশাসনের কাছে কাতর কণ্ঠে আবেদন জানিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের কি অদ্ভুত পরিহাস! মেয়েকে ফিরে পেলেও সে আর কোনওদিন চোখ মেলে তাকাবে না, ডাকবে না ‘মা’ বলে।
২০২৪-এর ২৩শে ডিসেম্বর দুপুর দু’টো নাগাদ খেলতে খেলতে ৭০০ ফুট গভীর কুয়োতে পড়ে যায় চেতনা। রাজস্থানের কোটপুতলির কিরাতপুরার বড়িয়ালি ধানি এলাকায় ঘটে এই ঘটনা। ওই দিন বিকেল থেকেই তাঁকে উদ্ধার করার চেষ্টা শুরু হয়। কেটে যায় একটা লম্বা রাত। তখনও পৃথিবীর আলো থেকে বহু দূরে ছিল তিন বছরের ওই ফুটফুটে শিশুকন্যা। পরের দিন পাইলিং মেশিন দিয়ে কুয়োর পাশে গর্ত খুঁড়ে ফের শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। কিন্তু তাতেও চেতনাকে উদ্ধার করা যায়নি। এভাবেই এক এক করে কেটে যায় ১০ দিন। মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর মা ঘোলা দেবী।
আরও পড়ুন: একাদশ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ, গৃহ শিক্ষককে ১১১ বছরের কারাদণ্ড
বুধবার, বছরের প্রথম দিন, ভোরবেলা থেকে চেতনাকে উদ্ধার করার কাজ শুরু হয়। মঙ্গলবার তাঁর অনেক কাছে পৌঁছে যায় উদ্ধারকারী দল। তাই বুধবার সকাল থেকেই একটা ক্ষীণ আশা ছিলই। প্রত্যাশামতো এদিন বিকেলে চেতনাকে ৭০০ ফুট গভীর কুয়ো থেকে বের করে আনা হয়। প্রথমে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায় শিশুকন্যাকে। তাই তৎক্ষণাৎ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে চেতনা।
আপনাদের হয়তো ২০০৬ সালের প্রিন্সের কথা মনে আছে! ২১শে জুলাই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে একইভাবে খেলতে খেলতে ৬০ ফুট গর্তে পড়ে গিয়েছিল চার বছরের প্রিন্স কুমার। টানা ৫০ ঘন্টার চেষ্টায় তাঁকে সুস্থভাবে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। এককথায় পাতালপুরীর লড়াইটা লড়তে পেরেছিল প্রিন্স। কিন্তু চেতনা আজ হেরেই গেল। খালি হল মায়ের কোল। বছরের প্রথম দিনটা যে এরকম একটা দুঃসংবাদ দিয়ে শেষ হবে, তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেনি কেউই।
দেখুন আরও খবর: