পূ্র্ব বর্ধমান: মহামারীতে গ্রাম উজাড় হয়ে যায়। কলেরাতে গ্রামে বহু মানুষের মৃত্যুর হয়েছে। প্রাণে বাঁচাতে অনেকেই অন্য গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে ছিল। গ্রামের সবাই চলে গেলেও কিন্তু গ্রামেই পড়ে থাকেন তাদের আরোধ্যা দেবী শ্মশানকালী।
ঘটনার ক্রম কমপক্ষে দু’শোবছর আগে। গ্রামের নাম ছিল শালকো।কিন্তু মহামারীতে শালকো গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও গ্রামের আরোধ্যাদেবী গ্রামের নাম বা ইতিহাস নিশ্চিহ্ন হতে দেয় নি।গ্রামের নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে মা কালীর নাম।
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের (Aushgram in East Burdwan) জঙ্গলমহল। এখানেই ছিল শালকো গ্রাম।কিন্তু কালের অঘোর নিয়মে গ্রাম এখন ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের কাছে মা পূজিতা হন শালকো কালী নামে। স্থানীয় বাসিন্দা পবিত্র মুখার্জি বলেন, মহামারীতে গ্রাম ছেড়ে শালকো গ্রামের বাসিন্দারা পাশ্ববর্তী জালিকাঁদর,গোয়ালারা,আদুরিয়া সহ বিভিন্ন গ্রামে চলে যান। একমাত্র গ্রামে পড়ে থাকেন শশ্মানকালী।গ্রামের লাহা বংশের আরোধ্যা দেবী ছিলেন শ্মশানকালী। কালীমাকে লাহারা অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলেও মা যেতে চায় নি। স্থানীয় মানুষ গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার পর বসতি এলাকা অরণ্যে ঢেকে যায়। গ্রামের ইতিহাসও নিবিড় অরণ্যে ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু গ্রামের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বিরাজমান হয়ে আছে শালকো।
আরও পড়ুন: স্বপ্নাদেশে জুকী কালী মায়ের আবির্ভাব
মা এখামে আবদ্ধ বা মন্দিরের মধ্যে থাকতে পছন্দ করেন না।তাই এখানে কোন মন্দির বা পাকা আচ্ছাদন তৈরি করা হয় নি।আগে শালপাতার আচ্ছাদনে মায়ের পুজো হত।এখন চারদিক খোলা একটি টিনের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তাতেই মায়ের পুজো হয়।
আদুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা তুহিন কোনার বলেন,আমরা অনেকবার মায়ের মন্দির তৈরির চেষ্টা করেছিলাম।কিন্তু ব্যর্থ হই।মা খোলামেলা, মুক্ত অবস্থায় থাকতে পছন্দ করেন। আর মায়ের পুজোর সময় পিছনে দিকে শালপাতা দিয়ে ঢাকতে হয়।সচরাচর এখানে কেউ আসতে চায় না।গা ছম ছম ও ভয় করে।তাই প্রতি অমবস্যায় কয়েকজন মিলে একসঙ্গে পুজো দিতে যায়। শ্মশানকালী রাত ১২টার পর পুজো হয়। আবার সকালে নবমী পুজো শেষ করে মায়ের বিসর্জন দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নাড়ুগোপাল মণ্ডল বলেন, কার্তিক মাসের কালী পুজোয় আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা তো বটেই।পাশাপাশি দূরদূরান্তর মানুষজন পুজোর রাতে ভিড় করেন।
আরও অন্য খবর দেখুন
https://kolkatatvonline.in/scroll/worshiped-of-goddes-kali-in-digha-kolkatatv-online-district-news/