কলকাতা: নিজের সুরক্ষার জন্য দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশের সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। আর কোনও দিন রাজনীতিতে ফিরবে না মা। এমনই জানালেন হাসিনার ছেলে সাজিব ওয়াজেদ জয় (Hasina’s son Sajib Wazed Joy)। কী কারণে তিনি সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন জয়। তিনি বলেন, এত পরিশ্রম করার পরেও যে ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন হল, তাতে তিনি হতাশ এবং বীতশ্রদ্ধ।
ছাত্রদের আন্দোলন ঘিরে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা-সহ বিভিন্ন জেলায় আন্দোলনকারী, বিএনপি, জামাত, পুলিশ এবং আওয়ামি লিগের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩০০। এদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে হাসিনার পদত্যাগের পরই তালিবানি কায়দায় তাঁর বাসভবনে চলল লুঠতরাজ। হাসিনা দেশ ছাড়তেই সেনার দখলে বাংলাদেশ। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। বাংলাদেশের (Bangladesh Agitation) পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুক পোস্টে হাসিনা-পুত্র সাজিব ওয়াজেদ জয় সেনার উদ্দেশে আর্জি জানিয়ে লেখেন, দেশের মানুষ এবং দেশকে নিরাপদে রাখার। দেশকে, দেশের সংবিধানকে নিরাপদ রাখা। সংবিধানকে রক্ষা করা। তিনি আরও বলেন, এক মিনিটের জন্যও কোনও অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আসতে দেবেন না। এটা নজর রাখা আপনাদের দায়িত্ব।
জয় দাবি করেছেন যে রবিবার থেকেই ইস্তফা দেওয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিলেন শেখ হাসিনা। পরিবারের সদস্যরা জোর করার পর নিজের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করেন হাসিনার ছেলে। হাসিনা দেশ ছেড়ে দেওয়ার পরও স্বাভাবিক হয়নি সে দেশের পরিস্থিতি। বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে জয় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আবার পাকিস্তানের মতো হয়ে যাব। আমাদের এই যে ১৫ বছরের উন্নয়ন…সব শেষ হয়ে যাবে। এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশ আর কোনও দিন ফিরে আসবে না। আমি সেটা চাই না, আপনারাও সেটা চান না। যতদিন আমার পক্ষে সম্ভব, আমি সেটা হতে দেব না।
আরও পড়ুন: হাসিনার সঙ্গে দেখা ডোভালের, আশ্রয় ভারত নাকি ব্রিটেনে?
হাসিনার বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। সেই সব অভিযোগ খারিজ করে জয় জানান, উনি বাংলাদেশের হাল পরিবর্তন করে দিয়েছেন। উনি যখন দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন, সেইসময় বাংলাদেশ গরিব দেশ ছিল। বাংলাদেশকে তখন সবাই ব্যর্থ দেশ হিসেবে দেখত। বর্তমানে বাংলাদেশকে রাইজিং টাইগার হিসেবে বিবেচনা করা হত। উনি খুব হতাশ হয়ে পড়েছেন। কড়া হাতে আন্দোলন দমনের যে অভিযোগ উঠেছিল হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়। তিনি বলেন, এখানে পুলিশকে পিটিয়ে মারা হচ্ছিল। গতকাল পর্যন্ত ১৩ জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। জনতা যদি পুলিশকে এ ভাবে পিটিয়ে মারে তো পুলিশ কী করবে?
প্রসঙ্গত, হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণের পর সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন শেখ হাসিনা। তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টিও বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে দেখভাল করা হচ্ছে বলে খবর। এখন একটাই প্রশ্ন, হাসিনা ভারতে থাকবেন না লন্ডনে থাকবেন। সূত্র বলছে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে পারেন তিনি।
দেখুন ভিডিও