ইকুয়েডর—২ কাতার-০
(এনার ভ্যালেন্সিয়া-২)
রাজধানী দোহা থেকে চল্লিশ কিলোমিটার উত্তরে আল বায়েত স্টেডিয়াম। সেখানে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বর্ণাঢ্য উদ্বোধন হল কাতার বিশ্ব কাপের। কিন্তু উদ্বোধনী ম্যাচে ইকোয়েডরের কাছে হেরে গেল এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতার। এই প্রথম আয়োজক দেশ হেরে গেল তাদের প্রথম ম্যাচে। তবে ফিফা র্যাংকিংয়ে ৪৪ নম্বর কাতার অনেক পিছিয়ে লাতিন আমেরিকার ইকোয়েডরের থেকে, যদিও র্যাঙ্কিংয়ে তারা আছে পঞ্চাশ নম্বরে। কাতার এই প্রথম বিশ্ব কাপে খেলল। আর ইকোয়েডর এর আগেও বিশ্ব কাপে খেলেছে। ২০০৬ সালে জার্মানি বিশ্ব কাপে তারা প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। প্রথম ম্যাচের নিরিখে বলা যায়, ইকোয়েডর কিন্তু এবারেও প্রিকোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার দাবিদার। এ গ্রুপে তাদের সঙ্গে আর আছে নেদারল্যান্ডস এবং সেনেগাল। আফ্রিকার দেশ সেনেগালের অধিনায়ক সাদিও মানে চোটের জন্য টুর্নামেন্টের বাইরে ছিটকে গেছেন। অবশ্যই দুর্বল হয়েছে তাঁর দল। সুযোগটা কিন্তু নিতে পারে ইকোয়েডর। প্রাক বিশ্ব কাপে ইকোয়েডর ভাল ফল করেছিল। তারা ছিল চার নম্বরে। ব্রাজিল, আর্জেন্তিনা এবং উরুগুয়ের পরেই। প্রথম ম্যাচে ইকোয়েডর তাদের সেই মুন্সিয়ানা জাহির করল।
কাতারের কোচ ফেলিক্স স্যাঞ্চেজ স্পেনের লোক। ২০১৭ সাল থেকে তিনি আছেন কাতারের দায়িত্বে। সে দেশের এক নম্বর টিম আল সাদের তেরোজন ফুটবলারকে রেখেছেন ২৬ জনের স্কোয়াডে। আর ইকোয়েডরের বেশির ভাগ প্লেয়ার খেলে ইউরোপে। তাদের এক সঙ্গে জড়ো করে টিমটা গড়তে কোচ গুস্তাভো আলফারোকে বেশ কসরত করতে হয়েছে। আলফারো আদতে আর্জেন্তিনার মানুষ। ষাট বছর বয়সী এই কোচের ফুটবল দর্শন হল শুরু থেকেই বিপক্ষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া। সেই দশফন থেকেই কিক অফের সঙ্গে সঙ্গেই ইকোয়েডর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল কাতারের উপরে। তিন মিনিটে তারা একটা গোলও করে ফেলে। কিন্তু ভার-এর সাহায্যে ইতালিয়ান রেফারি সেই গোল বাতিল করেন। তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়া, যিনি দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন (৩৭) গোলটা করে ফেললেন ১৭ মিনিটে। একটা ওভারহেড লব ফলো করে বক্সের মধ্যে ঢুকে গোলকিপার আল সাহেবকে কাটিয়ে গোলে শট নেওয়ার সময় তাঁর পা ধরে টেনে দেন কাতার গোলকিপার। নিজেই পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ভ্যালেন্সিয়া।
৩১ মিনিটে ইকোয়েডের অধিনায়কের দ্বিতীয় গোলটি খুব সুন্দর। বাঁ দিক থেকে কাইসেডো একটা উঁচু লব করেছিলেন ভ্যালেন্সিয়াকে লক্ষ্য করে। সেই লব-টাকে ফলো করে হেড করে গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া। নেদারল্যান্ডসের ফেরেনবাচে খেলেন ইকোয়েডর আধিনায়ক। সেই টিমের হয়ে নিয়মিত গোলও করেন। বিশ্ব কাপের প্রথম ম্যাচে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন ভ্যালেন্সিয়া। বিরতির পর কাতার আক্রমণে আসার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইকোয়েডর ডিফেন্স তাদের গোল করার জায়গা দেয়নি।