অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন শুক্রবার নয়ডার ফুটবল হাউসে। মোট ৩৪টি রাজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা ভোট দেবেন। তিনটি পদের জন্য নির্বাচন হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট, সহসভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ। প্রেসিডেন্ট পদে লড়াই করছেন দুই প্রাক্তন ফুটবলার। বাইচুং ভুটিয়া এবং কল্যাণ চৌবে। তবে স্ট্রাইকার বনাম গোলকিপারের এই লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন কল্যাণ চৌবেই। ৪৫ বছর বয়সী কল্যাণ এর আগে ফুটবল ফেডারেশনের কোনও পদে থাকা তো দূরের কথা, কোনও রাজ্য সংস্থার কোনও পদেও ছিলেন না। তাঁর নাম প্রস্তাব করেছে গুজরাত, সমর্থন করেছে অরুণাচল প্রদেশ। আর বাইচুংয়ের নাম প্রস্তাব করেছে অন্ধ্র প্রদেশ, সমর্থন করেছে রাজস্থান। বাইচুংয়ের রাজ্য সিকিম যেমন তাঁকে সমর্থন করেনি, তেমনই কল্যাণের রাজ্য বাংলা-ও তাঁকে সমর্থন করেনি। তবে কে কাকে ভোট দেবে সে অবশ্য অন্য কথা।
লড়াই হচ্ছে সহসভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ পদেও। সহসভাপতি পদে লড়ছেন কর্নাটকের এন এ হ্যারিস এবং রাজস্থানের মানবেন্দ্র সিং। আর কোষাধ্যক্ষ পদে লড়াই করছেন অন্ধ্র প্রদেশের গোপালকৃষ্ণ কোসারাজু এবং অরুণাচল প্রদেশের কিপা অজয়। এই তিন লড়াইয়ের বাইরে কোনও নির্বাচন হচ্ছে না। কার্যকরী কমিটির ১৪টি পদের জন্য ১৪জনই মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। তারা বিনা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে গেছেন। বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই নির্বাচনে নেই। আই এফ এ-র সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে নির্বাচনে দাঁড়াবার কথা ভাবলেও পরে আর নির্বাচনে দাঁড়াননি। তবে কল্যাণ প্রেসিডেন্ট হলে তিনি তো বাংলারই লোক হবেন। প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির পর আবার একজন বাঙালি ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন।
এমনিতে প্রেসিডেন্ট পদে বাইচুং ও কল্যাণের লড়াইটা দুই ফুটবলারের মধ্যে হলেও আসলে তা নয়। কল্যাণ নিজে বিজেপির সক্রিয় সদস্য। গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে লড়াই করেন। ফেডারেশন নির্বাচনে তাঁর লড়াইয়ের পিছনে বিজেপির আশীর্বাাদ আছে। বাইচুংয়ের অবশ্য এই সৌভাগ্য হয়নি। তাই আদতে দুই ফুটবলারের লড়াই হলেও রাজনীতির গন্ধ কিন্তু থেকে যাচ্ছে। খলিফা জিয়াউদ্দিনের পর ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে যখন প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি প্রেসিডেন্ট হন তখন তিনি রাজীব গান্ধী মন্ত্রিসভার সদস্য। আবার ২০০৮ সালের অক্টোবরে প্রিয়রঞ্জন অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর সে বছর ডিসেম্বরে যিনি প্রেসিডেন্ট হন সেই প্রফুল প্যাটেল ছিলেন মনমোহন সিং মন্ত্রিসভার সদস্য। এ বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রফুল প্যাটেলকে সরে যেতে হয়। তাই প্রিয়রঞ্জন এবং প্রফুলের মতো কল্যাণও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের মসনদে আবার শুর হতে চলেছে রাজনীতির মানুষের শাসন।