লন্ডন: শেষ এক বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেট (Test Cricket) আঙিনায় এক নতুন শব্দ শোনা যাচ্ছে, তা হল ‘বাজবল ক্রিকেট’ (Bazball Cricket)। যত দিন যাচ্ছে, তত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই শব্দ। ছোট করে বলতে গেলে, ইংল্যান্ডের (England) জাতীয় দল এখন যে কায়দায় টেস্ট ম্যাচ খেলে তাকেই বলা হচ্ছে বাজবল ক্রিকেট। এর অর্থ প্রথাগত টেস্ট খেলার ধারণার তোয়াক্কা না করে ভয়ডরহীন, আগ্রাসী, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা। বেন স্টোকস (Ben Stokes) অধিনায়ক এবং ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (Brendon McCullum) কোচ হওয়ার পর থেকে শুরু হয়েছে এই বাজবল। এবং সেখান থেকেই ইংল্যান্ডের উত্থান।
নতুন কোচ-ক্যাপ্টেন নিয়োগের আগে প্রায় দু’ বছরে ১৭টা টেস্ট খেলে একটা জিতেছিল ইংল্যান্ড। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তৎকালীন অধিনায়ক জো রুট (Joe Root) নেতৃত্ব ছেড়ে দেন। এরপর ভোল পাল্টে যায় দলের। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে ২০২২-এর গ্রীষ্মে সাত টেস্টের ছ’টাই জেতেন স্টোকসরা। ওই ছ’টি টেস্টেই প্রতিপক্ষের ২০টা উইকেট ফেলেন দেন ইংলিশ বোলাররা। ব্যাটাররা এক অভূতপূর্ব গতিতে রান করতে শুরু করেন। কাল, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে প্রাচীনতম ক্রিকেট দ্বৈরথ অ্যাশেজ সিরিজ (Ashes Series)। তার আগে ফের চর্চায় বাজবল ক্রিকেট।
আরও পড়ুন: Ravichandran Ashwin | TNPL | একই বলে দু’বার রিভিউ! টিএনপিএলে আজব কাণ্ড ঘটালেন অশ্বিন
প্রশ্ন হল, ‘বাজবল’ শব্দটা এল কোথা থেকে, এর উৎস কী? নামী ক্রীড়া সংবাদমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিক ইনোফোর ইংল্যান্ড শাখার সম্পাদক অ্যান্ড্রু মিলার এক পডকাস্টে প্রথম এই শব্দ উচ্চারণ করেন। ম্যাককালামের ডাকনাম ‘বাজ’। তিনি তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক হিসেবে দলের মধ্যেও এই মনোভাব আমদানি করেন তিনি। ‘আন্ডারডগ’ মাইন্ডসেট থেকে টেনে বের করেন কিউয়িদের। ইংল্যান্ডের হেড কোচ হওয়ার পর দলে সেই মানসিকতাই চারিয়ে দিয়েছেন ম্যাককালাম। সে কারণেই নাম ‘বাজবল ক্রিকেট’।
প্রথম দিকে কিন্তু খোদ ম্যাককালামেরই এই শব্দ নিয়ে আপত্তি ছিল। তাঁর মনে হয়েছিল, তাঁর ম্যানেজমেন্টে ইংল্যান্ড দলের ক্রিকেট দর্শনের সবটা ওই শব্দে প্রকাশ পায় না। কিন্তু আপত্তি সত্ত্বেও ওই শব্দটাই ক্রমশ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। বেন স্টোকস জানিয়েছেন, এই স্টাইলের ক্রিকেট খেলার কথা ম্যাককালামের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই আলোচিত হয়। তিনি নিজেও এমন কিছু ভাবছিলেন, কোচের সম্মতি পেয়ে যান। পরেরটা ইতিহাস। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দল হিসেবে পরপর তিন ম্যাচে ২৫০-র বেশি রান তাড়া করে জেতে ইংল্যান্ড। এবং প্রথম ইংলিশ টেস্ট দল হিসেবে টানা চার ম্যাচে লাস্ট ইনিংসে ব্যাট করে জেতে। এই অ্যাশেজ সিরিজে প্যাট কামিন্স স্টিভ স্মিথদের মোকাবিলা করতে হবে এই বাজবল ক্রিকেটের।