ভারতীয় রেলকে (Indian Railway) দেশবাসীর লাইফ লাইন বলা হয়ে থাকে। প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে রেল (Rail) পরিষেবা দিয়ে থাকে। তা সে দূর পাল্লার ট্রেন (Express Train) হোক বা লোকাল ট্রেন (Local Train), কম সময়ে এবং কম খরচে কোনও পরিবহন ব্যবস্থা দূর-দূরান্তরে পৌঁছে দিতে পারবে না। ট্রেনে তো কম-বেশি সকলেই চড়েছেন। কিন্তু কখনও কি খেয়াল করেছেন, ট্রেনের একেবারে শেষ বগিতে “X” চিহ্ন বা ক্রস চিহ্ন আঁকা রয়েছে। আপনার মনে কখনও কি প্রশ্ন জেগেছে কেন এই চিহ্ন আঁকা? যদি থেকে থাকে তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই রহস্য-
ভারতের যাত্রীবাহী ট্রেনগুলির শেষ বগির পিছনে উজ্জ্বল হলুদ বা সাদা রঙ দিয়ে “X” আঁকা হয়। এই ‘ক্রস’ চিহ্ন বুঝিয়ে দেয় এটিই ট্রেনের শেষ বগি। এর পরে আর কোনও বগি নেই। কোনও প্লাটফর্ম দিয়ে ট্রেনে চলে যাওয়ার পরে এই চিহ্ন দেখেই রেল কর্মীরা বুঝতে পারেন যে ট্রেনটির সব বগিই অক্ষত রয়েছে। কোনও বগি পথে আলাদা হয়ে যায়নি। ট্রেনটি যে অক্ষত রয়েছে তা এই চিহ্ন দেখে বোঝা হয় দিনের বেলায়।
কিন্তু এই ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ট্রেনের শেষ বগিতে একটি এলইডি আলো রাখা হয়। যেটি আবার দপদপ করে জ্বলতে, নিভতে থাকে। দূর থেকে যাতে লক্ষ্য করা যায় তাই এই ব্যবস্থা। শুধু দিনের আলো কমে যাওয়ার পরেও নয়, কুয়াশায় মোড়া আবহওয়া থাকলেও এই আলো রেলকর্মীদের নিরাপত্তার সঙ্কেত দেয়।
কিন্তু, যদি ট্রেনের পিছনের বগিতে “X” চিহ্নটি দেখা না যায়, সেই ক্ষেত্রে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়। কারণ, সেই ক্ষেত্রে ট্রেনের শেষ বগিটি ট্রেন থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই, রেল ক্রসিং-এ সবুজ পতাকা দেখানোর দায়িত্বে থাকা গার্ড এক্স চিহ্নটির দিকে লক্ষ্য রাখেন। ট্রেনের সমস্ত বগি সংযুক্ত রয়েছে কিনা, সেই দিকে নজর রাখেন।
শেষ কোচে “X” চিহ্ন না থাকলে, স্টেশন মাস্টার সেই বিষয়ে সতর্কতা জারি করেন। শেষ বগিতে “X” চিহ্ন দেখেই স্টেশন মাস্টার ট্রেন ছাড়ার অনুমতি দেন।
এই বিষয়টা এতটাই জরুরি যে ‘ক্রস’ চিহ্ন, এলইডি আলো থাকার পাশাপাশি শেষ বগিতে ইংরেজিতে “এলভি” লেখা থাকে। যার অর্থ— ‘লাস্ট ভেহিকল’ বা বা ‘শেষ বাহন’ হলুদ রঙের উপর কালো দিয়ে ছোট সাইন বোর্ডে এই লেখা থাকে। এই সাইনবোর্টটি সাধারণত গাড়ির পিছনে সংযুক্ত থাকে।