কলকাতা: রাজ্যপাল নন, রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রীই। এই মর্মে বিধানসভায় বিল আসছে। বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আনা এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত আরও তীব্র হবে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শিক্ষাকাঠামো অনুসারে যে কোনও রাজ্য নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হয়ে থাকেন সেই রাজ্যের রাজ্যপাল। রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক পদমর্যাদায় এই পদটি লাভ করেন। একই রকম ভাবে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতি হয়ে থাকেন পরিদর্শক তথা ভিজিটর। সেই হিসেবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদি। কলকাতা, যাদবপুরের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনখড়।
কিন্তু রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মমতা সরকারের আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক। একাধিক ইস্যুতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। সেই তালিকা থেকে বাদ যায়নি শিক্ষাও। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, ‘এমন আচার্যের উপস্থিতির জন্যই রাজ্যে শিক্ষায় দুরবস্থা তৈরি হচ্ছে। কোনও বিল পাঠালে তা আটকে রাখছেন। কোনও সহযোগিতা করছেন না।’
আরও পড়ুন: Nehru Statue Damaged In MP: সাতনায় নেহরুর মূর্তি ভাঙচুর, গ্রেফতার ৬
আর পাঁচটা বিষয়ের মতো শিক্ষাক্ষেত্রেও বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ তুলে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের তোপের মুখে পড়েছে। কখনও উপাচার্যদের বৈঠক ডাকাকে ঘিরে, কখনও উপাচার্য নিয়োগের প্রশ্নে আপত্তি তোলায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল। আজ পর্যন্ত রাজ্যপালের ডাকা কোনও বৈঠকেই উপাচার্যরা হাজির হননি রাজ্য সরকারের আপত্তির কারণেই। সম্প্রতি রাজ্যপাল অভিযোগ করেছেন, বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সম্মতি ছাড়ায় বেআইনিভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার একতরফাভাবে।
সে ব্যাপারেও রাজ্য সরকার সমালোচনা করতে ছাড়েনি রাজ্যপালকে। এই আবহেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কিছুদিন আগে প্রকাশ্যেই প্রস্তাব দেন, রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করা হোক। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলা হবে। অবশেষে সেই প্রস্তাবেই বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়ল। এর পর বিধানসভায় এ ব্যাপারে বিল আনতে হবে। সেই বিল পাস হওয়ার পরে যাবে রাজ্যপালের কাছে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য।
আরও পড়ুন: Salt Lake: হকার ইউনিয়নের নামে জুলুমবাজি সেক্টর ফাইভে, বন্ধ ১২০০ দোকান