হাওড়া: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বৃহস্পতিবার ভর দুপুরে হাওড়ায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল মারামারি চলল। মুখ্যমন্ত্রী এদিনই চাকলা যাওয়ার পথে ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে বলেন, হাওড়া কার্নিভ্যাল বন্ধ হবে না। আজ থেকেই তা চালু হবে। আমি এসব পছন্দ করি না। মুখ্যমন্ত্রী ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনায় বসারও নির্দেশ দেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে থোড়াই কেয়ার। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সামনেই ফের শিবপুরের বিধায়ক তথা ক্রীড়ী প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির অনুগামীদের সঙ্গে হাওড়া পুরসভার প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর অনুগামীদের হাতাহাতি চলল। চলল চেয়ার ছোড়াছুড়ি, স্লোগান, পাল্টা স্লোগান। প্রসাশককেও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মারামারি থামাতে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সামনেই মাঠে নামেন খোদ হাওড়ার পুলিশ কমিশনার। তাঁর সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।
হাওড়ার ইকো পার্কে দিন পাঁচেক আগে শুরু হয়েছে ক্রিসমাস কার্নিভ্যাল। এর উদ্যোক্তা হাওড়া পুরসভা। বুধবার শিবপুরের বিধায়ক এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনোজ তিওয়ারি দলবল নিয়ে মেলা চত্বরে আসেন। মনোজের বক্তব্য, কার্নিভ্যালে বেআইনিভাবে পার্কিং ফি নেওয়া হচ্ছে, রীতিমতো তোলাবাজি চলছে বলে অনেকে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। তা নিয়ে খোঁজ করতে আসি আমি। অভিযোগ, মন্ত্রীর অনুগামীদের হাতে প্রশাসকের সিএ বেদম মার খান। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল গোলমাল হয়। পরিস্থিতি এমন চরমে পৌঁছয় যে, কার্নিভ্যাল কমিটি মেলা বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: বালুহীন উত্তরে দল চালাতে কোর কমিটি মমতার
এই গোলমালের কথা পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর কানে। তিনি ঘনিষ্ঠ মহলে দলের দুই গোষ্ঠীর কোন্দল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিন চাকলা যাওয়ার পথে ডুমুরজলা হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে তিনি দুই গোষ্ঠীকেই বার্তা দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটা মানুষের মেলা। কেন তা বন্ধ হবে। প্রশাসককে বলেছি, পার্কিংয়ের বিষয়টি পুলিশ দেখবে। গতকালের ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। আমি মেলা আজই চালু করার কথা ঘোষণা করছি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো অরূপ বিশ্বাস আসেন ইকো পার্কে। তাঁর সামনেই ফের দুই গোষ্ঠীর মারামারি শুরু হয়। পরে অবশ্য কার্নিভ্যাল আবার শুরু হয়। মঞ্চে মন্ত্রীর পাশে প্রশাসক এবং ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী দুজনেই ছিলেন। মঞ্চে বসে দুজনেই বলেন, ঝামেলা মিটে গিয়েছে। পরে অরূপ জানান, এটি চলবে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। হাওড়ার বাসিন্দারা শাসকদলের এই কাদা ছোড়াছুড়িতে মজা দেখছেন।