সামশেরগঞ্জ: বাবার মৃত্যুশোক নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক( Higher Secondary) পরীক্ষা (Exam) দিলেন সামশেরগঞ্জের (Samserganj) নিশা।অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর কঠিন জেদের কাছে হার মেনেছে শোকও। বাবার মৃত্যু (Death) খবর বুকে চেপে বৃহস্পতিবার সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুর হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল ,কাঞ্চনতলা জেডিজে ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী নিশা দাস।
ফরাক্কার মামরেজপুরের শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র দাস নিশার বাবা। পেশায় ব্যবসায়ী। বেশ কিছুদিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন তিনি। বেঙ্গালুরু তাঁর চিকিৎসা চলছিল। বুধবার রাতেই বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে মৃত্যু হয় বছর চল্লিশের বিকাশের। রাতেই দেহ নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ির পথে রওনা দেন পরিজনরা। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়িতে পৌঁছয় বিকাশের নিথর দেহ।
আরও পড়ুন:Civic Volunteer Teacher | সিভিক ভলান্টিয়ারদের অঙ্ক-ইংরেজি পড়ানোতে ‘না’, জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী
বুধবার রাতেই অবশ্য বাবার মৃত্যুসংবাদ পেয়ে যায় নিশা।বাবাকে নিয়ে একটা দুশ্চিন্তা ছিলই। তবু মন শক্ত করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে।মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা।প্রথম দিনের পরীক্ষা নিশার ভালোই হয়েছে। কিন্তু বুধবার রাতেই বেঙ্গালুরু থেকে ফোন পেয়ে মুহূর্তের মধ্যে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।বাড়ির অনেকেই বেঙ্গালুরুতে ছিলেন। যাঁরা সামশেরগঞ্জের বাড়িতে ছিলেন, তাঁদের উদ্বেগ ছিল, বৃহস্পতিবার নিশা পরীক্ষা দেবে কি করে? প্রতিবেশিরাও সে কথাই ভাবছিলেন। কিন্তু সকলকে অবাক করে দিযে নিশা জানায়, বৃহস্পতিবার সে পরীক্ষা দেবেই।বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে।
বাবার মৃত্যুশোক চেপে রেখেই সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে নিশা। বাড়ি থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে একাই পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যায় সে। হল থেকে বেরিয়ে নিশা জানায়, পরীক্ষা ভালোই হয়েছে। তবে বাড়িতে ফেরার জন্য ছটফট করছিল সে।হল থেকে বেরনোর সময় সে আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেনি। তার জেদকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন বাসুদেবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজাউর রহমান সহ অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বাড়ি ফিরে বাবার মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে নিশা।