শান্তিনিকেতন: এ যেন অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস (Academy of Fine Arts)। অবাধ নাট্যচর্চার প্রাণকেন্দ্র।
গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) এক স্বপ্ন ছিল সংস্কৃতি চর্চা। অর্থাৎ, নাটক, কবিতা, গান, শিল্পকলার মাধ্যমে নবজাগরণ আসবে যুগে যুগে। কবির এই ভাবনার ধারক ও বাহক হিসাবে তৃতীয় ধারার নাটককে (Third Form Theater) আরও জনপ্রিয় করার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে শান্তিনিকেতনের (Shantiniketan) পঞ্চবন আর্ট রিসর্ট (Panchaban Art Resort)।
যখন বাঙালির (Bengali) ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি-সংস্কৃতি, লোকাচার পাশ্চাত্যের জাঁতাকলে মিশ্র সংস্কৃতির রূপ নিচ্ছে, তখন সেই সংস্কৃতিকে বাঙালি সভ্যতার বাহক করতে লাগাতার নাট্যচর্চায় ব্রতী হয়েছে শান্তিনিকেতনের এই আর্ট রিসর্ট।
আরও পড়ুন: বাংলা গানের ধূমকেতু কবির সুমন ৭৫
এখনও পর্যন্ত একটানা ৩৩টি তৃতীয় ধারার নাটক করেছে তারা৷ বড়দিন থেকে প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার বিভিন্ন নাট্যগোষ্ঠীর নাটকগুলি পরিবেশিত হয়৷ তাদের সংকল্প এভাবেই পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত ‘খাপছাড়া মঞ্চে’ এই নাটকের ধারা অব্যাহত থাকবে। বোলপুর-শান্তিনিকেতন ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে কলাকুশলী, নাট্যকারেরা অংশ নেন এখানে৷ এছাড়া, ওপার বাংলা থেকেও শিল্পীরা এসে এই মঞ্চকে সমৃদ্ধ করেছেন৷ নাট্যচর্চা ছাড়াও এখানে চিত্র প্রদর্শনী, শিল্পকর্মের প্রদর্শনী নিয়মিত হয়ে আসছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যে কেউ এখানে এসে কবিতা পাঠ, গান, নাটক, শ্রতিনাটক, নৃত্যচর্চা করতে পারবেন৷ তাঁর জন্য অবাধ দ্বার খোলা এখানে।
আর্ট রিসর্ট কর্তৃপক্ষের মত, নাটকের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ করে বহু দেশে বহু সময় বিপ্লব এসেছে। এসেছে সভ্যতার জোয়ার। প্রখ্যাত নাট্যকার শেক্সপিয়ার (William Shakespeare) যখন তাঁর সৃষ্ট নাটক মঞ্চস্থ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বিশ্বজুড়ে, তার বহু আগে থেকেই বাংলার লোকসংস্কৃতিতেই এই ধারা ছিল। এছাড়া, পৃথিবীর ইতিহাসে তৃতীয় ধারার নাটক দিন বদলের কথা বলে। মৌলবাদ নয়, চায় মৌলিকতা। তাই পঞ্চবন আর্ট রিসর্ট তৃতীয় ধারার নাটকের প্রসার ও প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে।