খড়গপুর: বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের খড়গপুরের বাংলোয় বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ দেখাল কুড়মি (Kurmi) সমাজ। শ’দুয়েক কুড়মি সম্প্রদায়ের লোক এদিন শাবল-কোদাল নিয়ে বাংলোর গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে যান। অভিযোগ, সেখানে ভাঙচুরও চালানো হয়। কুড়মি সমাজের নেতা অজিত মাহাত জানান, দিলীপ ঘোষ ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই বিক্ষোভ চলবে।
গত রবিবার জঙ্গলমহলে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় কুড়মি সমাজ।তা নিয়ে বিজেপি নেতার সঙ্গে কুড়মিদের বচসাও হয়। প্রায় আধ ঘণ্টা দিলীপের গাড়ি ঘেরাও করে রাখা হয়। তারপরই তিনি হুমকি দেন, কুড়মিদের কাপড় খুলে নেওয়া হবে। দিলীপ বলেন, আমি কুড়মিদের জন্য অনেক করেছি, আমরা তাঁদের আন্দোলনের পাশে আছি। দিলীপের ওই মন্তব্যের জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তোলেন কুড়মিরা। অজিত মাহাত আগেই জানিয়েছিলেন, বুধবার ৫০ হাজার বাইক নিয়ে দিলীপের বাংলো ঘেরাও করা হবে। সেইমতোই এদিন কুড়মিরা মিছিল করে দিলীপের বাংলোয় যান বিক্ষোভ দেখাতে।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumdar | মুখ্যমন্ত্রীর হাতের বাইরে রাজ্য প্রশাসন, মমতাকে বিঁধলেন সুকান্ত
বিজেপি নেতা অবশ্য এদিন খড়গপুরে ছিলেন না। তিনি দিল্লিতে আছেন। সেখানে তিনি বলেন, তৃণমূলের মদতে শ’দুয়েক লোক আমার বাংলোয় হামলা চালিয়েছে। বলেছিল, ৫০ হাজার লোক আসবে। কোথায় ৫০ হাজার লোক? তৃণমূল পিছন থেকে অজিত মাহাতকে মদত দিচ্ছে। তৃণমূল অবশ্য দিলীপের এই অভিযোগ মানতে নারাজ।
দিলীপের হয়ে আগেই কুড়মি সমাজের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, আমরা কুড়মি আন্দোলনের পাশে আছি। দিলীপদা যদি ভুল কিছু বলেন, তার জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু তাতেও অনড় কুড়মি সমাজ।
বিজেপির মহিলা মরচ রাজ্য সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র অবশ্য দিলীপ ঘোষের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন,দিলীপদা অশ্লীল কিছু বলেননি। মহিলাদের কাপড় খোলার কথাও বলেননি। শাসকদলের চক্রান্তের কথা বলেছেন। ফাল্গুনী আরও বলেন, এই আন্দোলনে আমাদের সহযোগিতা ও সহমর্মিতা রয়েছে। শাসকদলের মদতেই কুড়মিরা এসব করছে।
গত তিন-চার দিন ধরেই কুড়মিরা আন্দোলন চালাচ্ছে দিলীপের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে। কোথাও পথ অবরোধ হচ্ছে, আবার কোথাও দিলীপের কুশপুতল পোড়ানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কুড়মি মাহাত জনগোষ্ঠী ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিভিন্ন বিদ্রোহে ভূমিকা রয়েছে। চুয়াড় বিদ্রোহ থেকে শুরু করে ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্যন্ত অনেক কুড়মি মাহাত শহীদ হয়েছেন। ভারতের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্ৰামে চুয়াড় বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন রঘুনাথ মাহাত। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহ করেছিলেন তা চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত।