কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) সিটের (SIT) কোনও আধিকারিককে কলকাতা বা রাজ্যের পুলিশ (Police) হেনস্থা করতে পারবে না বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) জানিয়ে দেন, এই আদালতের অনুমতি ছাড়া সিটের প্রধান বা অন্য কোনও আধিকারিকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। কোথাও কোনও অভিযোগ দায়ের করা যাবে না। এমনকি নিম্ন আদালতও এক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না। সিবিআইয়ের মতো ইডির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৮ অক্টোবর।
বিচারপতি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে চলতে হবে। তবে ৪ অক্টোবর সিবিআই অধিকর্তা প্রবীণ সুদকে আদালতে হাজিরার থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারপতি। তাঁকে হলফনামাও দাখিল করতে হবে না। তাঁর নির্দেশ, ১৮ অক্টোবরের মধ্যে সিবিআইকে ওএমআর শিট নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে।
আরও পড়ুন: বিচারক নিয়োগে দেরি কেন, আইনমন্ত্রীকে বিকেলেই তলব আদালতে
এদিন, এজলাসে বিচারপতি এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে তিনি বলেন, আমি রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখব বিচার তরান্বিত করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে। এজলাসে বসে তিনি চিঠিও লিখে ফেলেন। তবে মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের অনুরোধে বিচারপতি চিঠি পাঠাবেন না বলে জানান। তিনি বলেন, রাজ্যের মুখ্যসচিবের মাধ্যমে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা দিতে চাই, কলকাতা বা রাজ্য পুলিশ যেন সিবিআইয়ের সিটের আধিকারিকদের টাচ না করে।
বুধবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুরুতেই বিচারপতি জানতে চান, এদিন ইডি কারও বাড়িতে অভিযান করতে গিয়েছে কি না। এরব জবাবে অবশ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার আইনজীবীরা নিরুত্তর থাকেন। আদালতের নির্দেশ মেনে এদিনও হাজির ছিলেন সিবিআইয়ের সিট প্রধান অশ্বিন শেনভি। তাঁর কাছে বিচারপতির প্রশ্ন, আপনারা কি তদন্ত করতে গিয়ে কোনও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন?
শেনভি: আমরা তদন্ত করতে গিয়ে বিচারাধীন বন্দিদের কাছে হেনস্থার শিকার হচ্ছি। কুন্তল ঘোষ আমার নামে অভিযোগ করেছেন। এরপরই বিচারপতি আলিপুর সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে মিশে থাকার অভিযোগ আনেন। শেনভি বলেন, ওই বিচারক চার জন সাক্ষীকে জেলে পাঠান। ফলে তাঁরা এখন আর গোপন জবানবন্দি দিতে চাইছেন না। তাঁরা ফের গ্রেফতারির ভয় পাচ্ছেন।
বিচারপতি: ইডি বা সিবিআই তাঁদের গ্রেফতার করতে পারবে না। চাইলে তাঁরা এখন জবানবন্দি দিতে পারেন।
শেনভি: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলায় পর্ষদ ওএমআর শিটের কোনও ডিজিটাইস কপি রাখেনি।
বিচারপতি: আপনারা কি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগ পেয়েছেন।
শেনভি: এখনও পাইনি। তদন্ত চলছে।
বিচারপতি: এই বিষয়ে আপনি ইডির সহযোগিতা নিতে পারেন।
শেনভি: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জন্য আমরা তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি না।
বিচারপতি: কোন বিচারপতি? অনিরুদ্ধ বোস?
সিবিআইয়ের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য: না, দীনেশ মাহেশ্বরী।
বিচারপতি: আমি প্রয়োজনে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখব। আমি এই দুর্নীতির নিরসন চাই।