Sunday, June 8, 2025
Homeআজকেপুজো আসছে, মা আসছে, এই তো সময় উবুন্তু বলার

পুজো আসছে, মা আসছে, এই তো সময় উবুন্তু বলার

মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন, তার কিছু টুকরো ঝলক

Follow Us :

শরৎ ছড়িয়ে গেছে বাংলার প্রতি ঘরে। কলকাতার রাস্তায়, পাড়ায় আলো ঝকমক, মফসসলেও সেই আলোর রোশনাই, জেলা সদরেও এখন একই আয়োজন। এই আয়োজন সেই সময়েই যখন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রায় সব কর্তারা জেলে। রাজ্যপালের সঙ্গে তুমুল আকচাআকচি এবং তাঁর গোয়ার্তুমির ফলে একগুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো শিকেয় উঠেছে। কামদুনির অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়েছে বা সাজা কমেছে। রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা পুজোর সময় মদের দোকান খোলা কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। রাজ্যে এলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, না, হেলিপ্যাডে না উদ্বোধনী মঞ্চে, কোথাও দেখা গেল না চিত্রম বিচিত্রম রাজ্যপালকে। ওনার বোধহয় বিসর্জনের বাজনা বেজেছে। আনিস খান ইনসাফ এখনও পায়নি। চাকরি, আবাস, গরুপাচার, বালি পাচারের পরে নতুন দুর্নীতির খবর এসেছে। রেশনেও দুর্নীতি হয়েছে, কে এক বাকিবুর রহমান, সে তৃণমূলের নেতা, সরকার ঘনিষ্ঠ, সে নাকি কোটি কোটি টাকা গায়েব করে দিয়েছে। কীসের? রেশনের, কারা যায় রেশন দোকানে? অত্যন্ত ছাপোষা নিম্নবিত্ত মানুষ। হ্যাঁ, তাদের টাকা মার গেছে। এবং গ্রামবাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ধানের খেতের শোষক পোকার আক্রমণ, ফসল বাঁচাতে হলে বিঘে পিছু অন্তত ৪০০ টাকা এবং শ্রম। কাশফুলের ছবি তুলছেন? তুলুন। সাদা মেঘ আর শরতের সোনালি রোদ নিয়ে কবিতা গান লিখছেন? লিখুন কিন্তু এগুলো নিয়েও তো ভাবতে হবে। কেন আপনার ঘরের পাশের ঝকঝকে আলো এক্কেবারেই পৌঁছবে না সনাতন মন্ডলের ঘরে, নিতাই জানার ঘরে, শেখ আব্বাসের ঘরে। কেন এই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি ঢেকেই দেবে রাজ্য সরকারের হাজার প্রকল্প? কেন কেউ ভাববে না সেই সব চাষিদের কথা যা আজ ৪০০ টাকা প্রতি বিঘায় বেশি খরচা করছে। এবং শুধু তাই নয়, এরপরেই আসছে মাজরা পোকার আক্রমণ, তাকে সামলাতে আবার খরচ। তাদের ঘরে শারদোৎসবের আলোর প্রবেশ নিষেধ। আপনি ষষ্ঠীতেই মাথাপিছু ৮৫৯ টাকার খাবার বুক করে ফেসবুকে পোস্ট করছেন, বেশ করেছেন। তসলিমা নাসরিন কোন সুদূরে বসেই এক কেজি প্লাস ইলিশ, বাগদা চিংড়ি, ১৫ কিলো কাতলা মাছের গাদা দিয়ে ফুলকপির ঝোল, আর তার পেটি ভাজার বিবরণ দিয়েই ফেলেছেন। বেশ করেছেন। কিন্তু আজ সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, পুজো আসছে, মা আসছে, এই তো সময় উবুন্তু বলার।

উবুন্তু কথাটা অনেকে জানেন, অনেকে জানেন না। আফ্রিকায় এক ব্রিটিশ সাহেব এক গ্রামে গিয়ে দেখেন বেশ কিছু বাচ্চা ছেলেমেয়ে একসঙ্গে খেলছে। উনি তাদের শারীরিক দক্ষতা ইত্যাদি দেখার জন্য এক ব্যবস্থা করলেন। একঝুড়ি কমলালেবু ছিল তাঁর সঙ্গে। উনি বাচ্চাদের এক দূরত্বে দাঁড় করিয়ে বললেন, যখন বলব তখন ছুটবে, আর যে সবচেয়ে আগে আসবে সে তার ইচ্ছেমতো যত খুশি কমলালেবু নিতে পারবে, কিন্তু শর্ত হাতে করেই নিতে হবে। উনি ভালো করে বোঝানোর পরে বললেন রেডি স্টেডি গো। বাচ্চারা একসঙ্গে হাত ধরে উবুন্তু উবুন্তু বলতে বলতে চলে গেল কমলালেবুর ঝুড়ির কাছে, তারপরে সব্বাই ভাগ করে খেলো। এটাই উবুন্তু, জুলু ভাষার এই শব্দের মানে তুমি আছো, তাই আমি আছি।

আরও পড়ুন: পুজো, শুভেন্দু অধিকারী এবং ওঁর গরু হারানোর গল্প

হ্যাঁ, সভ্যতার, তথাকথিত সভ্যতার আলোর বাইরে থাকা সেই বাচ্চারা সাহেবকে সেদিন শিখিয়েছিল উবুন্তুর মানে। দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বাদ দিয়েই দেশ এগোবে? এরকম আহাম্মকের মতো কথা দেশের প্রধানমন্ত্রী বলতেই পারেন, আমরা বলব কেন? বিশ্বের ক্ষুধা সূচকে আমাদের দেশ নামছে তো নামছেই, এই এক পেট খিদে নিয়ে বসে থাকা মানুষের প্রধানমন্ত্রী যদি গর্ববোধ করেন তো করুন। তাই বলে কি আলো হবে না? প্যান্ডেল হবে না, পুজোর মেলা হবে না? হবে বইকী, নিশ্চয়ই হবে, সেখানেও তো হাজার লোকের রোজগার জড়িয়ে। যার আছে তিনি খাবার ভাগ করে খাবেন? তেমন সমাজ তৈরি হল কই? কিন্তু কিছুটা, আপনার যা আছে তার কিছুটা ভাগ তাঁদেরও দিন। যাঁরা অভুক্ত, যাঁদের ঘরে শারদোৎসবের আলো ঢোকে না, তারাও পাক কিছু, তাদের জন্য এবার আমরা উবুন্তু বলা শিখি। সমাজ বিপ্লব যাঁদের দায়, তাঁরা ভোট বিপ্লবে মেতে এক বকচ্ছপ আকার ধারণ করেছেন। এবং সে বিপ্লব তো বললেই হবে না, সে অনেক শতাব্দীর মণীষীর কাজ, সে যখন হবে তখন হবে। আজ যাঁরা আমার কথা শুনছেন, তাঁদের উৎসবের বাজেটটা একটু ছোট করে, অন্তত একজনকেও দিন না একটা জামা। একটা বাচ্চার হাতে একটা মিষ্টি, সেও অনেক। আজ আমরা কোনও প্রশ্ন করিনি, কেবল জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেই উবুন্তুর সংবাদ এনে জড়ো করেছি। মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন, তার কিছু টুকরো ঝলক।

এক সকালে হঠাৎ আপনার মানিব্যাগে যতটা আছে, না গুনবেন না, পকেটে যতটা আছে, না গুনবেন না। বাইরে যান, যার দরকার আছে তাকে দিয়ে দিন। আপনার চেনাশোনা কোনও গরিব ঘরের বাচ্চার জন্য খাতা পেনসিল কিনে দিন। হাসপাতালে চলে যান, রক্ত দিয়ে আসুন, বাজারে যান, এক বৃদ্ধা সামান্য একটু শাক, এক মুঠো ডুমুর নিয়ে বসেছেন, সেগুলো নিয়ে একটা ৫০ টাকার নোট দিয়ে আসুন। মন ভালো হয়ে যাবে। পেলে মন ভালো হয়, কিন্তু তা আরও পাবার ইচ্ছেকে জাগায়। দিলে মন ভালো হয়, সে প্রশান্তির তুলনা নেই। শরৎ এসেছে বাংলার উঠোন জুড়ে, মা আসছে, এই তো উবুন্তু বলার সময়, বলুন উবুন্তু।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | শাহজাহানের ফাঁ/সি চাই, সন্দেশখালিতে বিরাট দাবি শুভেন্দুর
00:00
Video thumbnail
Mahua Moitra | বিয়ের পর কী করছেন মুহুয়া? দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Narendra Modi | Nitish Kumar | বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নীতীশই? মোদির গেম প্ল্যান কী?
00:00
Video thumbnail
Weather Update | বর্ষা কবে আসছে? বিরাট আপডেট আবহাওয়া দফতরের
00:00
Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
06:12
Video thumbnail
Birbhum | TMC | বীরভূমে শুরু ২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতি?
02:30:08
Video thumbnail
Mahua Moitra | বিয়ের পর কী করছেন মুহুয়া? দেখুন এই ভিডিও
01:42
Video thumbnail
Child Asthma | কী কী কারণে শিশুদের মধ্যে হাঁফানি দেখা যায়?
00:38
Video thumbnail
Child Asthma | কী কী নিয়ম পালনে হাঁফানি থেকে শিশুদের রক্ষা করা যাবে
01:34