Thursday, June 19, 2025
HomeScrollFourth Pillar | থুতু দিয়ে ছাতু মাখছেন নরেন্দ্র মোদি
Fourth Pillar

Fourth Pillar | থুতু দিয়ে ছাতু মাখছেন নরেন্দ্র মোদি

এই বাজারে ৭৪ পয়সা, ৯২ পয়সা বরাদ্দ বাড়িয়েছেন মোদিজি, কত্ত বড় সিদ্ধান্ত

Follow Us :

২ অক্টোবর এলেই বিজেপি কর্মী, নেতাদের গান্ধীজির নয়, হঠাৎই লালবাহাদুর শাস্ত্রীর কথা মনে পড়ে যায়, যিনি নিজেই তাঁর এক সহচরের কাছে বলেছিলেন “আমি লজ্জাই পাই নিজের জন্মদিনের কথাটা বলতে, বাপুর জন্মদিনের সঙ্গে এই সংযোগটা আমার কাছে বিড়ম্বনার।” কিন্তু যাই হোক ওনার জন্মদিন তো বটে। কিন্তু বিজেপি বা আরএসএস কর্মী-নেতারা লালবাহাদুর শাস্ত্রীর জন্য এই যে আকুলতা দেখান তা কেবলমাত্র এটাই বলতে যে তোমাদের গান্ধীই নয়, এই দিনে ভারত মা কা আউর এক সপুত, লালবাহাদুর শাস্ত্রীজি ভি জনম লিয়ে থে। এদিনে লালবাহাদুর শাস্ত্রীর মতো মানুষও জন্মেছিলেন যিনি নাকি দুটো জামাকাপড় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভবনে ঢুকেছিলেন। সত্যি তো ওরকম এক সাধারণ জীবনযাপন ক’জনের মধ্যে দেখা যায়? কিন্তু সেই সময়ে যে মানুষেরা দেশ স্বাধীন করতে জেলে গেছেন, মার খেয়েছেন, অত্যাচার সহ্য করেছেন তাঁদের সেই ত্যাগব্রতের যাবজ্জীবন স্বাধীনতা আসার পর থেকেই উবে যেতে শুরু করেছে। কিন্তু তার পরেও বহু নেতার, সহজ সরল জীবনযাপন আমরা দেখেছি, তাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন কংগ্রেসি। কিন্তু ওই হিন্দু মহাসভা বা জনসংঘের নেতাদের মধ্যেও অনেকেই ছিলেন যাঁদের এই সহজ সরল জীবনযাত্রার কথা আমরা জানি।

আদবানি, জোশি বা বাজপেয়ীর জীবনযাত্রায় বাহুল্য ছিল না, আদবানি আর বাজপেয়ী দুজনেই সিনেমা দেখতে খুব ভালোবাসতেন, নাইট শোতে সিনেমা দেখতে যেতেন। আদবানিজির খাওয়া দাওয়া ছিল খুব সাধারণ, নিরামিষ, অটল বিহারী বাজপেয়ী অবশ্য খান পানে দিলচস্পি রাখতেন, মাছ মাংস তাঁর প্রিয় ছিল, পুরনো জনসংঘিদের মধ্যে তিনিই ছিলেন কবি, তাঁর সান্ধ্য মেহফিল বসত মাঝেসাঝে কিন্তু বসত আর তা ছিল রঙিন, তাঁর কবিতা সত্যিই কবিতা ছিল, বেশ ভালো কবিতা। লিখেছিলেন,

चौराहे पर लुटता चीर, प्यादे से पिट गया वज़ीर,

चलूँ आख़िरी चाल कि बाज़ी छोड़ विरक्ति रचाऊँ मैं?

राह कौन-सी जाऊँ मैं?

सपना जन्मा और मर गया, मधु ऋतु में ही बाग़ झर गया,

तिनके टूटे हुए बटोरूँ या नवसृष्टि सजाऊँ मैं?

राह कौन-सी जाऊँ मैं?

दो दिन मिले उधार में घाटों के व्यापार में

क्षण-क्षण का हिसाब लूँ या निधि शेष लुटाऊँ मैं?

राह कौन-सी जाऊँ मैं?

কিন্তু এসবের পরে আমাদের দেশে আবির্ভূত হলেন এক চায়ওয়ালা কাম চৌকিদার, ক্রমাগত মিথ্যে বলাটা যাঁর অভ্যেস, এক প্যাথোলজিক্যাল লায়ার বলাই যায়, সেই নরেন্দ্র মোদির। নিজের প্রতিটা দিন উনি ইভেন্ট হিসেবেই দেখেন, কিউরেটেড ইভেন্ট, কাজেই এক বিশাল ব্যয়বহুল জীবনযাপন, যা এর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রীর ছিল না। আপনি নিশ্চয়ই বলবেন যে কেন? জওহরলাল নেহরুর জামাকাপড় নাকি প্যারিস থেকে কাচিয়ে আনা হত, তারচেয়েও কি বেশি। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, জওহরলাল নেহরুর জামাকাপড় প্যারিস থেকে কাচিয়ে আনা হত, কিন্তু সেই প্যারিস ছিল এলাহাবাদে, একটা ড্রাই ক্লিনিংয়ের দোকান, প্যারিস ড্রাই ক্লিনিং, মজা করে সবাই বলত, নেহরুজি কপড়া প্যারিস সে ধুলাকর লাতে হ্যায়, ওনারা তো জানতেন না যে সেই তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটির হাতে পড়ে এই আকার নেবে।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | মহিলারাই দখল নিচ্ছেন মাঝমাঠের

সেই যাই হোক, এই এক প্রধানমন্ত্রী যাঁর মাথা থেকে পা সব ব্র্যান্ডেড, লাখ টাকার ঘড়ি, পেন, দেড় দু’ লাখের রোদচশমা। খেয়াল করে দেখবেন ওনার দিনে চারটে অনুষ্ঠান থাকলে চারটেতে চারটে আলাদা আলাদা পোশাক পরে উনি হাজির হবেন, বাড়িতে ময়ূরকে খাওয়ান আর উনি নাকি মহার্ঘ মাশরুম ছাড়া লাঞ্চ করেন না। ওনার সিকিউরিটির জন্য সারা দিনে খরচ হয় প্রায় পৌনে দু’ কোটি টাকা। ভাবতে পারেন, কেবল ওনার জীবন বাঁচাতেই রাষ্ট্রের খরচ হয়ে যায় মাসে ৪৫-৫০ কোটি টাকা। উনি বিদেশে যান, এর আগে সবাই যেতেন, যেতেন না এমন নয়, উনি একটু ঘন ঘন যান, কিন্তু যেটা নতুন তা হল উনি প্লেন কিনে নিয়েছেন, হ্যাঁ সেটা কেবল ওনার, মানে প্রধানমন্ত্রীর। সেদিন হোয়াটসঅ্যাপে একজন যুক্তি দিচ্ছিল, উনি নাকি হোটেলে থাকেন না, তাতে হোটেলের খরচ বেঁচে যায়। আচ্ছা কোন দেশের কোন প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে গিয়ে নিজের টাকাতে হোটেলে থাকেন? যাই হোক তাঁর জন্য ৮৪৫৮ কোটি টাকার প্লেন কেনা হয়েছে। কেন কেনা হবে না ওনার বিশেষ বন্ধু হাজার কোটি টাকা দিয়ে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স নাইন কিনেছেন, আদানির তো আগেই আছে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তো সেই প্লেনে চেপেই তিনি নির্বাচনী প্রচার করেছেন, আর ২০১৪-তে নির্বাচিত হওয়ার পরে ওই আদানির প্লেনে চেপেই তো আহমেদাবাদ থেকে দিল্লি এসেছিলেন। তারপর থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর প্রায়োরিটিটা দেখুন, তিনি দেশের সর্বত্র বন্দে ভারত চালু করছেন, ধরুন হাওড়া থেকে বোলপুর, সাধারণ ট্রেনে ন্যূনতম ভাড়া হল ৯৫ টাকা, এসি চেয়ারকার ৩১৫ টাকা, সময় নেবে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট, আর ওনার সেই সাধের বন্দে ভারতের টিকিট হল ন্যূনতম ৬৩৫ টাকা, আর তারপরে ১১৫৫ টাকা। সময় লাগে ১ ঘণ্টা ৪২ মিনিট, মানে ২৮ মিনিট আগে আসার জন্য আপনাকে এই দাম দিতে হবে।

সারা দেশে সাধারণ ট্রেনগুলো তুলে উনি বন্দে ভারত চালু করছেন, কাদের জন্য? সারা দেশে এয়ারপোর্টের সংখ্যা বাড়ছে, নতুন এয়ারপোর্টগুলোর চেহারা দেখে আসুন, কোটি কোটি কোটি টাকা দিয়ে ফাইভ স্টার এয়ারপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে সাধারণ মানুষের টাকায়, তারপর সেগুলো তুলে দেওয়া হচ্ছে ওনার চিরসখাদের হাতে, চোর জোচ্চরদের হাতে। সারা দেশের খনিজ সম্পদ নামমাত্র দামে তুলে দেওয়া হচ্ছে আদানি আম্বানি আর কিছু ফড়েদের হাতে। ঘর উজাড় হচ্ছে আদিবাসীদের, তাদের নদীতে এখন রাসায়নিক বর্জ্য, হাত দিলে ঘা হয়ে যাচ্ছে, তাদের পাহাড় এখন লুঠেরাদের হাতে, তাদের জঙ্গল কেটে সাফ, বন্যা আর ধস নামছে সর্বত্র। মোদিজির বিকাশের থিওরি মেনে এমনকী করোনা কালেও আদানি আম্বানিদের সম্পত্তি বেড়েছে ১০০, ১৫০ গুণ। ওদিকে না খেতে পাওয়া মানুষদের জন্য যে ১০০ দিনের রোজগার যোজনার ব্যয়বরাদ্দ কমানো হচ্ছে, যেখানে মানুষ কাজ করেছেন, এই বাংলাতে তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। টাকা আটকে বসে রয়েছেন গ্রামীণ আবাস প্রকল্পের, এই সমস্ত সামাজিক খাতে ব্যয়বরাদ্দ কমছে। কাজেই বৈষম্য বাড়ছে। কতটা? দেশের জনসংখ্যা কমবেশি ১৪০ কোটি, তার মধ্যে ১.৪ কোটির আছে ৪০ শতাংশ সম্পদ। যাদের রোজগার সবচেয়ে কম, সেই তলার সারির ৫০ শতাংশ মানুষের কাছে, মানে ৭০ কোটি মানুষের কাছে আছে দেশের ১৫ শতাংশ সম্পদ। এটা হচ্ছে মোদিজির সবকা সাথ সবকা বিকাশ। উপরের দিক থেকে ১০ শতাংশ, মানে ১৪ কোটি মানুষের কাছে আছে ৭৭ শতাংশ সম্পদ। মোদিজির অর্থনীতি, কেবল নির্বাচনের আগে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ওই ওরা এসে মানে সংখ্যালঘুরা আপনাদের মানে হিন্দুদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নিয়ে যাবে। আর সেই তীব্র বিষ ছড়িয়ে ভোট কুড়োচ্ছেন, আবার ক্ষমতায় বসে ওই আদানি আম্বানিদের জন্যই যা যা করার করে যাচ্ছেন।

তবে এরই মধ্যে এক ব্যতিক্রমী খবর এসেছে, উনি এক জায়গায় ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়েছেন। পিএম পোশনের (PM POSAN) আওতায় প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে পড়ুয়াদের খাবারের (মিড ডে মিল) জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়াল মোদি সরকার। জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তিও আর তাতে বলা হয়েছে প্রাথমিকে ৫ টাকা ৪৫ পয়সা বরাদ্দ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬ টাকা ১৯ পয়সা। উচ্চপ্রাথমিকে ৮ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯ টাকা ২৯ পয়সা। অর্থাৎ প্রাথমিকে বরাদ্দ বাড়ল মাত্র ৭৪ পয়সা। অন্যদিকে উচ্চ প্রাথমিকে বরাদ্দ বাড়ল মাত্র ৯২ পয়সা। ভাবুন একবার, এই বাজারে ৭৪ পয়সা, ৯২ পয়সা বরাদ্দ বাড়িয়েছেন মোদিজি, কত্ত বড় সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও পার্বত্য অঞ্চলেও বাড়ানো হয়েছে বরাদ্দ। সেখানেও ওই একইরকম বৃদ্ধি। ইতিমধ্যে রাজ্যের একাধিক শিক্ষক সংগঠন কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তাদের বক্তব্য, দিনের পর দিন জিনিসপত্রের দাম যেখানে আকাশছোঁয়া সেখানে কেন্দ্রকে পড়ুয়াদের খাবারের জন্য যে হারে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন তা একেবারই করছে না। এতে পুষ্টিকর খাবার তো দূর অস্ত, ন্যূনতম খাবার জোগাড় করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে রাজ্যগুলির। খাবারের সঙ্গে একটা ডিম দেবে স্কুলের মাস্টারমশাইরা? টাকা কই? আর আমাদের শেষ পাওয়া মোদি সরকারের তথ্যই বলছে, উপযুক্ত পুষ্টির অভাবে মারা যাচ্ছে সদ্যোজাত শিশু, সেই মৃত্যুর সংখ্যা কমছে না, কমছে না উপযুক্ত পুষ্টির অভাবে রোগগ্রস্ত শিশুর সংখ্যাও। তাতে কী? ওনার প্লেন কেনা আছে, ওনার সুরক্ষার বন্দোবস্ত আছে, ওনার পুষ্টির কোনও অভাব নেই। শুধু হঠাৎ মনে পড়েছে বলেই তিনি এই ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়েছেন, মোদিজি থুতু দিয়ে ছাতু মাখার চেষ্টা করছেন, দেশের আম আদমি এই চেষ্টার কথা মাথায় রাখুন, সময় এলে তার জবাব দিন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | এবার টুকরো হবে, ইজরায়েলকে আকাশেই চরম জবাব ইরানের, কোথায় পালাবেন নেতানিয়াহু?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | পুতিনের সমর্থনে চাঙ্গা খামেনি, ট্রাম্পকে চরম হু/ঙ্কার, ইজরায়েলের কী অবস্থা করবে ইরান?
00:00
Video thumbnail
100 Days Work | ১০০ দিনের কাজ নিয়ে বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের, দেখুন বড় খবর
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইজরায়েলকে সমর্থন ট্রাম্পের ইরানকে সমর্থন পুতিনের, তৃতীয় বিশ্বযু/দ্ধ লেগেই গেল!
00:00
Video thumbnail
Politics | বিজেপিই ভরসা সব দাগ ফরসা
03:30
Video thumbnail
Politics | বিজেপি মেতেছে তরজায় আরএসএস 'পাড়ায় পাড়ায়'
03:22
Video thumbnail
Politics | ট্রাম্পের দাবীকে এবার বাতিল করল সরকার
03:50
Video thumbnail
Bangla Bolche | ব/ঞ্চনার ইতিহাসের শিকার বাংলা?
03:44
Video thumbnail
Bangla Bolche | ব/ঞ্চনা কি শুধু বাংলাকেই?
03:13
Video thumbnail
Benjamin Netanyahu | এবার টুকরো হবে, ইজরায়েলকে আকাশেই চরম জবাব ইরানের, কোথায় পালাবেন নেতানিয়াহু?
05:18:55