Thursday, July 3, 2025
HomeআজকেAajke | মাসের খরচ সামলেও একটু পয়সা বাঁচে? তাহলে একটা কাজ করুন...
Aajke

Aajke | মাসের খরচ সামলেও একটু পয়সা বাঁচে? তাহলে একটা কাজ করুন না, ভালো থাকবেন

কত অজস্র মানুষ তিন চার দিন পরে সেই লঙ্গরের ডাল আর রুটি পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন

Follow Us :

সেই উবুন্তুর গল্প আর কতবার বলব? ঠিক আছে অন্তত আরেকবার বলা যাক। উবুন্তু কথাটা অনেকে জানেন, অনেকে জানেন না। আফ্রিকায় এক ব্রিটিশ সাহেব এক গ্রামে গিয়ে দেখেন বেশ কিছু বাচ্চা ছেলেমেয়ে একসঙ্গে খেলছে। উনি তাদের শারীরিক দক্ষতা ইত্যাদি দেখার জন্য এক ব্যবস্থা করলেন। এক ঝুড়ি কমলালেবু ছিল তাঁর সঙ্গে। উনি বাচ্চাদের এক দূরত্বে দাঁড় করিয়ে বললেন, যখন বলব তখন ছুটবে, আর যে সবচেয়ে আগে আসবে সে তার ইচ্ছে মতো যত খুসি কমলালেবু নিতে পারবে, কিন্তু শর্ত হাতে করেই নিতে হবে। উনি ভালো করে বোঝানোর পরে বললেন রেডি স্টেডি গো। বাচ্চারা একসঙ্গে হাত ধরে উবুন্তু উবুন্তু বলতে বলতে চলে গেল কমলালেবুর ঝুড়ির কাছে, তারপরে সব্বাই ভাগ করে খেল। এটাই উবুন্তু, জুলু ভাষার এই শব্দের মানে তুমি আছ, তাই আমি আছি। হ্যাঁ, সভ্যতার, তথাকথিত সভ্যতার আলোর বাইরে থাকা সেই বাচ্চারা সাহেবকে সেদিন শিখিয়েছিল উবুন্তুর মানে। কোনও এক অমোঘ মুহূর্তে সিস্টেম বদলে যাবে, সমাজ পরিবর্তন হবে, সাম্য আসবে, প্রত্যেকে খেতে পাবে, কেউ এক পেট খিদে নিয়ে শুতে যাবে না। এমন এক দিনের কথা আগে অনেকেই বলতেন, বহু লোক বিশ্বাস করতেন, তারপর ক্রমে সে বিশ্বাস ক্ষীণ হয়ে পড়লেও এখনও আমি আশাবাদী। হতেই পারে এ অনেক শতাব্দীর মনীষীর কাজ, কিন্তু সেই দিন আসবে। কিন্তু যতদিন সেই রাত্রির বৃন্ত থেকে ফুটন্ত এক সকালকে নামিয়ে না আনা যাচ্ছে, ততদিন কী হবে? সেটা ভারি কঠিন প্রশ্ন। বহু আগে এক দেশ জোড়া দুর্ভিক্ষের মাঝে বুদ্ধের সামনে এক ভিক্ষুণী জানিয়েছিলেন তাঁর উপাচারের কথা, বলেছিলেন “আমার ভাণ্ডার আছে ভরে, তোমা-সবাকার ঘরে ঘরে। তোমরা চাহিলে সবে এ পাত্র অক্ষয় হবে। ভিক্ষা-অন্নে বাঁচাব বসুধা– মিটাইব দুর্ভিক্ষের ক্ষুধা।” সেটাই বিষয় আজকে, মাসের খরচ সামলেও একটু পয়সা বাঁচে? তাহলে একটা কাজ করুন না, ভালো থাকবেন।

সেই কোভিডের সময় কমিউনিস্ট পার্টির ছাত্র সংগঠন এসএফআই, বিভিন্ন বাম সংগঠন কমিউনিটি কিচেন চালু করেছিল। বিভিন্ন মানুষের টাকা আর অন্যান্য সাহায্য নিয়ে কখনও বিনামূল্যে, কখনও সামান্য টাকা নিয়ে অভুক্ত মানুষের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছিল ছাত্রযুবরা। এ কাজ বহুকাল ধরেই করে আসছে শিখরা, গুরুদ্বারার তরফে বিভিন্ন জায়গায় লঙ্গর খোলা হয়, সে ইউক্রেনে যুদ্ধের মাঝখানে, নেপালে ভূমিকম্পের মধ্যে, করোনার সময়ে একদল শিখ পুরুষ মহিলা খাবার নিয়ে হাজির সর্বত্র। তাঁরাই তো সেদিনে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভরসা ছিলেন, কত অজস্র মানুষ তিন চার দিন পরে সেই লঙ্গরের ডাল আর রুটি পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন, আমরা দেখেছি, দেখিয়েছি।

আরও পড়ুন: Aajke | সিপিএমের দেওয়াল লিখন তো শুরু হল, আসন ক’টা পাবে?

২০২১-এর অক্টোবর মাসে আমাদের রাজ্যে মা কিচেন চালু হয়েছিল, ৫ টাকায় ডিম ভাত, কখনও সখনও একটু ডাল তরকারি ভাত। সেটাই বা কম কী? যে দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ প্রতিদিন না খেয়েই শুতে যায়, সেখানে ৫ টাকাতে ভাত ডালও তো যথেষ্ট। তারপর এই মা কিচেনের সংখ্যা বাড়তে থাকে, সাত আটটা থেকে আজ ১৩৮টা জায়গায় মা কিচেন চলছে। সরকারি হিসেব বলছে এই শহর কলকাতার গড়ে ৯ লক্ষ ২ হাজার ৫১৮ জন মানুষ প্রতিমাসে এই খাবার খান। গিয়ে দেখবেন কেবল সেই মুখটা যে আজ প্রথম এই জায়গার হদিশ পেয়েছে, সে তাকিয়ে তার মুখ দেখে যার হাতে খাবার। সেই মুখটাও পেয়ে যাবেন যে বড্ড দেরি করে ফেলেছে, খাবার শেষ হয়ে গেছে। হ্যাঁ, এই মাপের কমিউনিটি কিচেন আর কোনও রাজ্যে চলছে না, আমাদের রাজ্যে আজ আড়াই বছর চলছে। এখন সেই কিচেনে এক নতুন সংযোজন হয়েছে, আপনি এই ১৩৮টা কিচেনের যে কোনও একটাতে গিয়ে একদিনের খরচ দিয়ে, সেদিনের খাবারের দায়িত্ব নিতে পারেন। সেটা আপনার মায়ের জন্মদিন হতে পারে, হতেই পারে আপনার সন্তানের জন্মদিন বা আপনাদের কোনও আনন্দের দিন। আপনার খাওয়া দাওয়া করার পরেও কিছুটা বাঁচে? শখ আহ্লাদের পরেও কিছুটা হাতে থাকে? আপনার সন্তানের ভালো স্কুল, তার বেড়ে ওঠার যাবতীয় খরচা মিটিয়েও আপনার পকেটে কিছু থাকে? তাহলে চলে যান না এই ১৩৮টা কিচেনের যে কোনও একটাতে, আপনার ইচ্ছের কথা জানান, সেই দিনে উপস্থিত থাকুন আপনার মন ভালো হয়ে উঠবে, আপনার সন্তান উবুন্তু বলার প্রথম পাঠটা পড়ে ফেলবে। সে সমাজ বদল যবে হবে হোক, আপাতত অভুক্ত মানুষ খাবার পাক, আপাতত এক পেট খিদে নিয়ে আমার সহনাগরিক শুতে যাবে এমন লজ্জার সামনে আপনার ছোট্ট এই সিদ্ধান্ত আপনাকে একটু কম লজ্জিত করবে। আমরা কিছু মানুষের কাছে গিয়েছিলাম, যাঁরা এটুকু খরচ করতেই পারেন, তাঁদেরকে বলেছি, সরকার কলকাতা শহর তার আশেপাশে ১৩৮টা মা কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছে, মানুষ ৫ টাকাতে খাবার পাচ্ছে, আপনিও সেখানে কিছু টাকা দিয়ে একদিনের খাবারের দায়িত্ব নিতে পারেন। আপনারা কি এই সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক? কত আর খরচ হাজার পনেরো টাকা। শুনুন তাঁরা কী বলেছেন?

কলকাতা আর তার আশেপাশে মা কিচেন চালু আছে। এই কিচেন এবার জেলা কেন্দ্রগুলোতেও চালু হোক, সেখানেও মানুষের খিদে আছে, যেখানে জেলা কেন্দ্রে এমন ব্যবস্থা আছে সেখানেও মানুষকে অংশ নিতে বলা হোক। স্বচ্ছল মানুষজন তাঁদের আনন্দের দিনগুলো ভাগ করে নিন ভুখা মানুষের সঙ্গে। আপনার হাতে দুটো পয়সা বেঁচে যায় মাসের শেষে, ক’টা মানুষকে খাবার জোগান, গ্যারান্টি দিয়ে বলছি মন ভালো হয়ে যাবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Ali Khamenei | খামেনিকে মা/রা অসম্ভব কেন? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Sukanta Majumdar | Samik Bhattacharya | সভাপতি হলেন শমীক, কী বললেন সুকান্ত?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের তথ্য পাচার করছিল এই জুটি, কী সিদ্ধান্ত খামেনির? কী করবে ইজরায়েল?
00:00
Video thumbnail
Alifa Ahmed | বিধানসভায় শপথ গ্রহণ আলিফার, দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Kasba Incident | কোন ফাঁদে গ্রেফতার মনোজিৎ? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
03:21:36
Video thumbnail
Hooligaanism | Melar Gaan | হুলিগানইজমে- এ টুপির রহস্যটা কি ?
01:38
Video thumbnail
Ali Khamenei | খামেনিকে মা/রা অসম্ভব কেন? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
11:21:55
Video thumbnail
BJP Koustav Bagchi | হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের শা/সা/নি কাঠগড়ায় কৌস্তভ বাগচি
11:20:51
Video thumbnail
Samik Bhattacharya | বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলেন শমীক ভট্টাচার্য
11:16:46

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39