চেন্নাই: পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আইআইটি মাদ্রাজ (IIT Madras) অধ্যাপক আশিসকুমার সেনকে সাসপেন্ড (Suspend) করল। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (Mechanical Engineering Department) অধ্যাপক তিনি। গত ৩১ মার্চ গবেষণারত মেধাবী পড়ুয়া (Research Scholar) শচীনকুমার জৈনের আত্মহত্যার ঘটনায় অধ্যাপক আশিস সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ৩২ বছরের শচীন পশ্চিমবঙ্গেরই (West Bengal) ছাত্র। হস্টেলের ঘরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর কয়েকঘণ্টা আগে তিনি হোয়াটস অ্যাপে পোস্ট করেন, দুঃখিত, আমি খুব ভালো ছাত্র নই।
গত সপ্তাহেই অধ্যাপক সেনকে সাসপেন্ডকে সাসপেন্ড করে বোর্ড অফ গভর্নর্স। সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত কমিটি অধ্যাপককে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছিল, অধ্যাপক তাঁর ছাত্রকে হেনস্তা করেছিলেন তার প্রমাণ মিলেছে।
আরও পড়ুন: রাজস্থানের কোটায় বাংলার মেধাবী ছাত্রের আত্মহত্যা
শচীনের আত্মহত্যার পর তাঁর ভাই ভবেশকুমার জৈন তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। অধ্যাপক সেন শচীনকে হেনস্তা করতেন, যে কারণে সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছিল। শচীনের মৃত্যুর পর আইআইটি মাদ্রাজ ক্যাম্পাসে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভ হয়। গত এপ্রিলে কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যার মাথায় ছিলেন প্রাক্তন ডিজিপি জি তিলকবতী।
তদন্ত কমিটি শচীনের সহপাঠী, বিভাগীয় শিক্ষক এবং ডিনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। অগাস্টে কমিটি তার রিপোর্ট পেশ করে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, কোনও প্রত্যক্ষ প্রমাণ নেই। তবে কমিটি গবেষণার কাজে নিযুক্ত সমস্ত ছাত্র, সংলগ্ন গবেষণাগারের পড়ুয়া এবং যাঁরা সদ্য প্রাক্তনী তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছে। তাঁদের সাক্ষ্যে বোঝা গিয়েছে, শচীনই প্রথম ছাত্র নয়, এর আগেও অনেকেই হেনস্তার শিকার হয়েছে, এমন দৃষ্টান্ত মিলেছে।
রিপোর্টে কমিটি পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ও বিকাশের জন্য আরও বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। ছাত্রদের মতামত জেনে পিএইচডি পড়ুয়া (PhD Student) এবং তাঁদের গাইডদের সম্পর্কের বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। আইআইটি মাদ্রাজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বোর্ড অফ গভর্নর্সের নির্দেশ অনুযায়ী অধ্যাপক আশিস সেনকে সাসপেন্ড করা হল। এরপর বাকি যা নিয়মবিধি তা পালন করা হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসের মধ্যে আইআইটি মাদ্রাজের চারজন পড়ুয়া আত্মহত্যা করেন। এরপর ক্যাম্পাসের ১২ হাজার ছাত্রছাত্রীর সমীক্ষা করা হয়। তাতে প্রমাণ মেলে এর মধ্যে এখানকার ২ শতাংশ পড়ুয়া প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন।
অন্য খবর দেখুন