জলপাইগুড়ি: পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ তুলেছিল এক সহপাঠী। এরপরই স্কুল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার্থীর অভিভাবককে ডেকে অপমান করে বলে অভিযোগ। এই খবর সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করল অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। পুলিশ জানায়, ছাত্রীর ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে। সুনীতিবালা সদর বালিকা বিদ্যালয়ের বয়স ১৩-র ওই ছাত্রীর নাম শ্রেয়া ঘোষ। সে জলপাইগুড়ির দেবনগর এলাকার বাসিন্দা। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সহ আরও দুই শিক্ষিকার নামে কোতোয়ালি থানার অভিযোগ দায়ের করেছে মৃত ছাত্রীর পরিবার।
জানা গিয়েছে, গত ৭ ডিসেম্বর স্কুলে অষ্টম শ্রেণির সংস্কৃত পরীক্ষা ছিল। শ্রেয়ার পরিবারের অভিযোগ, সংস্কৃত পরীক্ষা চলাকালীন এক সহপাঠী স্কুলের শিক্ষিকাকে অভিযোগ করে, শ্রেয়া নকল করেছে। সহপাঠীর কথা শুনে শ্রেয়াকে তল্লাশি করেন শিক্ষিকা। তল্লাশি করেও শ্রেয়ার কাছ থেকে কোনও নকল করার প্রমাণ পাননি শিক্ষিকা। কিন্তু তারপরও শ্রেয়ার পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাঁদের ৮ ডিসেম্বর শ্রেয়ার সামনেই অপমান করা হয় বলে অভিযোগ। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে শ্রেয়া ৯ ডিসেম্বর গলার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ।
উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে শ্রেয়া সমস্ত কিছু লিখে গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। আর সেই সুইসাইড নোটের ভিত্তিতেই প্রধান শিক্ষিকা সহ আরও দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে পরিবার। কোতোয়ালি তানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মৃত ছাত্রীর বাবা দেবদুলাল ঘোষ জানান, তাঁর মেয়ে নকল করেনি। অন্য এক ছাত্রীর কথা শুনে মেয়েকে ফাঁসানো হয়েছে। চাপ দিয়ে লেখানো হয় নকল করার কথা। এরপর তাঁদের ডেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ কটূ কথা শুনিয়ে দেয়। বাবা-মায়ের অপমান সহ্য করতে না পেরেই মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এর জন্য দায়ী প্রধান শিক্ষিকা সহ আরও দুই শিক্ষিকা। পুলিশ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা দাস জানান, নকল করেছিল ওই ছাত্রী। স্কুলের এক শিক্ষিকা এসে তা জানান। এমনকী নকল যে করেছে, সেটা লিখেও দিয়েছে। অভিভাবকদের ডেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনার দুই দিন বাদে আত্মহত্যা কেন করল, সেটা জানা নেই। তবে স্কুলের তরফে কোনও চাপ কিংবা অপমান করা হয়নি। শুধু সর্তক করা হয়েছিল।