আলিপুরদুয়ার: ডাইনির অপবাদে পিটিয়ে হত্যা করা হল ৬০ বছর বয়সী চৈতি ওঁরাওকে। শেষ নিঃশ্বাস চলাকালীন তাঁর স্বামী বলিরাম ওঁরাও (৬৫) তাঁকে মরণাপন্ন অবস্থায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু সেখানে তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করে। আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম থানার নারারথলি এলাকার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার অভিযোগের তীর বলিরাম ওঁরাওয়ের দুই ভাইপো সঞ্জয় ওঁরাও ও আলফ ওঁরাও দিকে। স্থানীয় সূত্রে খবর পুলিশ তাঁদের ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে গত দুই বছরের মধ্যে সঞ্জয় ওঁরাওয়ের বোন ও মায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। প্রথম জন বিষপান করেন আর দ্বিতীয় জন গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান। তারপর থেকেই পরিবারের বাকিদের মনে অন্ধবিশ্বাসের ধারনা তৈরি হয়। পরিবারের বাকি লোকেরা মনে করতে থাকে ওই নিঃসন্তান দম্পতিই দুজনকে তুকতাক করে। এবং তাঁরাই বোন এবং মায়ের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন: অভিষেকের সংস্থার সব ডিরেক্টর, সদস্যের সম্পত্তির হিসেব দিল ইডি
বুধবার ছিল সঞ্জয় ওঁরাওয়ের মায়ের শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠান। তা শেষ হতেই রাত গড়িয়ে যায়। সেখানে নিমন্ত্রিত ছিলেন ওই আদিবাসী দম্পতি। পুলিশের অভিযোগ অনুষ্ঠান সেরে বাড়ি ফেরার পরেই নিজের জ্যাঠার বাড়িতে মদ্যপ অবস্থায় লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয় বলিরামের দুই ভাইপো সঞ্জয় ও আলফ। বিনা প্ররোচনায় ওই ভাই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাকে মারধর শুরু করে। প্রচন্ড মারে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চৈতি ওঁরাও। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছোনোর আগেই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারনে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় বলিরাম ওঁরাও বাড়ির উঠোনে পড়েছিলেন। তাঁকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
তদন্তে নেমে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে আলিপুরদুয়ার জেলা আদালতে চালান করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এখনও থমথমে কুমারগ্রামের নারারথলি এলাকা।