নয়াদিল্লি: সাভারকর (VD Savarkar) সম্পর্কে কংগ্রস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য ব্যাপক ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। এরমধ্যেই বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে (Madhya Pradesh’s Indore) মিলল বোমা বিস্ফোরণের হুমকিপত্র। ভারত জোড়ো যাত্রা ( Bharat Jodo Yatra) আগামী ২৮ নভেম্বর পৌঁছাবে শিব-রাজ্যে।
স্থানীয় একটি স্টেডিয়ামে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের থাকার কথা। কিন্তু, তার আগেই একটি মিষ্টির দোকানে হুমকিপত্র ফেলে দিয়ে যায় কেউ। তাতে লেখা রয়েছে, ভারত জোড়ো যাত্রা ইন্দোরে পৌঁছলে বোমা বিস্ফোরণ হবে। এই চিঠি হাতে পেয়েই তৎপর হয় পুলিশ। একটি মামলা দায়ের করে চিঠির উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: Defamation case against Rahul Gandhi: সাভারকর নিয়ে বিরূপ মন্তব্যে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এফআইআর
অন্যদিকে, বীর সাভারকর সম্পর্কে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের জন্য কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের একনাথ শিণ্ডে পন্থী শিবসেনা নেতা বন্দনা ডোংরে শুক্রবার থানেতে মানহানির মামলা করেছেন। প্রসঙ্গত, রাহুল এখন ভারত জোড়ো যাত্রায় মহারাষ্ট্রে রয়েছেন। আকোলা জেলার ওয়াড়েগাঁওয়ে বৃহস্পতিবার তিনি এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, সাভারকর ব্রিটিশ শাসকদের সাহায্য করেছিলেন। আন্দামান সেলুলার জেল থেকে তিনি প্রাণভয়ে ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে চিঠি লিখেছিলেন। আসলে তিনি মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু সহ অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি।
এর দুদিন আগেই সাভারকরকে রাহুল বিজেপি এবং আরএসএসের আদর্শ বলে মন্তব্য করেন। তিনি আন্দামানে দু-তিন বছর থাকার পরেই ক্ষমাপত্র লিখতে শুরু করেছিলেন। যে চিঠিগুলিতে সাভারকর নিজেকে ব্রিটিশ শাসকদের কাছে ‘দাস’ বলে উল্লেখ করেছেন। রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্য নিয়েই রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
মহারাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে এই মন্তব্য করায় রাজ্যের কংগ্রেস, এনসিপি, উদ্ধব-শিবসেনার জোটেও প্রভাব পড়তে পারে। উদ্ধব ঘনিষ্ঠ শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত শুক্রবার বলেন, বীর সাভারকর সম্পর্কে রাহুল গান্ধী যা বলেছেন, তাতে মহাবিকাশ আঘাড়ি জোটে ফাটল ধরাতে পারে। যদিও জোট ভেঙে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও জানান রাউত। তবে তিক্ততা তৈরি করবে বলে তাঁর দাবি। এর আগে উদ্ধব ঠাকরেও বলেছেন, সাভারকরকে তাঁরা শ্রদ্ধা করেন, গভীর আস্থা ও ভালোবাসা রয়েছে তাঁর প্রতি। সে কারণে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন তিনি।
রাহুলের একধাক্কায় জোটের গায়ের লাগা ক্ষত মেরামতে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এদিন বলেন, আমি সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও দাবি করে বলেন, এতে জোট দুর্বল হবে না। আমরা তো ইতিহাসের বিকৃতি ঘটাইনি। আমরা নতুন করে ইতিহাস লিখিওনি, বদলায়নি। রমেশ আরও বলেন, সাভারকর ও মহম্মদ আলি জিন্না দ্বিজাতিতত্ত্বের জন্মদাতা। এই ইতিহাসকে অস্বীকার করা যায় না। ইংরেজ ভারত ছাড় আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল আরএসএস। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাংলা ভাগের পক্ষে ছিলেন। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে এসব ইতিহাসের আলোচনা প্রয়োজন, সামাজিক মাধ্যমে নয়।
এদিকে, রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র মহানির্মাণ সেনাও রাহুলের কঠোর সমালোচনা করেছে। তাদের এক নেতা বলেন, যেখানে রাহুলের ঠাকুমা, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সাভারকরের প্রশংসা করেছিলেন সেখানে উনি কে অপমান করার! সাভারকরের মৃত্যুতে ইন্দিরাজি দেশের বিশাল ক্ষতি বলে শোকপ্রকাশ করেছিলেন বলে দাবি রাজ অনুগত নেতার।