জোশিমঠ (উত্তরাখণ্ড): ‘ডুবন্ত শহর’ জোশিমঠে সমস্ত নির্মাণকার্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও বুধবার গভীর রাতে পাহাড়ের গর্ভে পাথর খোঁড়া হল বিনা বাধায়। এনডিটিভির এক্সক্লুসিভ একটি খবরে জানা গিয়েছে, শীতের গভীর রাতে জনমানুষহীন এলাকায় সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ হয়েছে। রাত প্রায় ২টো নাগাদ এনডিটিভি সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দিও করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিপন্ন জোশিমঠের কাছেই ড্রিল মেশিন দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ছে শ্রমিকরা। হাইওয়ের কাছে এই এলাকা থেকেই বদ্রীনাথ যাওয়ার পথ শুরু হয়েছে।
যেখানে পাথর খোঁড়া হচ্ছিল, সেখানে ক্রেন আনা ছিল। তাতে করে পাথরের টুকরো বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। শুনশান ওই এলাকার অন্তত কিলোমিটার খানেক দূর থেকে ক্র্যাশারের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু, শ্রমিকদের বাধা দেওয়ার কেউ ছিল না সেখানে। এরমধ্যে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ভাঙন আতঙ্ক আরও বেড়েছে। চামোলি জেলার সুনীল এলাকাতেও তুষারপাত হচ্ছে। হোটেল মালিক ও স্থানীয়দের বিক্ষোভে এখনও পর্যন্ত মালারি ইন হোটেল ভাঙার কাজ শুরু হয়নি। বুলডোজার আনা হলেও তাকে কাজে লাগানো যায়নি।
জোশিমঠের পর কর্ণপ্রয়াগের প্রায় ৫০টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। কর্ণপ্রয়াগের বহুগুণা নগর এলাকায় বাড়িতে ফাটল ধরা ছাড়াও গত কয়েকদিনে অল্পবিস্তর ভূমিধসও হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ফাটল দেখা দেওয়ায় বহু পরিবার আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। কর্ণপ্রয়াগের আপার বাজার ওয়ার্ডের ৩০টি পরিবারও এই বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্য সরকারের কাছে তারা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।
এদিকে, জোশিমঠে আজ, বুধবার ফাটল ধরা বাড়িতে ভাঙাভাঙির কাজ শুরু হতে চলেছে। কিন্তু, কাজে বাদ সেধেছে বৃষ্টি। আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও বলা হয়েছে, আজ থেকে আগামী তিনদিন বৃষ্টি হতে পারে এই অঞ্চলে। এলাকার বাসিন্দারা এই ভূমিক্ষয় ও দুর্দশার জন্য এনটিপিসির বিদ্যুৎ প্রকল্পকে দায়ী করে গতকাল বিক্ষোভ দেখায়। এনটিপিসির তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। আপাতত এই প্রকল্পের সমস্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে জানান, বুধবারের মধ্যে জোশিমঠে মাইক্রো-সিসমিক অবজার্ভেশন সিস্টেম বসানো হবে। হোটেল মালিকরা ইতিমধ্যেই নির্বিচারে বাড়ি ভাঙা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। ভাঙা পড়তে চলা মাউন্ট ভিউ এবং মালারি ইন হোটেল দুটির মালিকরা জানিয়েছেন, নির্মাণ ভাঙতে গেলে এককালীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।