ওয়েবডেস্ক- উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বাহরাইচ মামলায় (Bahraich case) একজনের ফাঁসি, ৯ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিল আদালত (Court)। ইউপির বাহরাইচে সহিংসতায় মৃত্যুদণ্ডের রায়কে উত্তরপ্রদেশের বিচারক মনুস্মৃতি উদ্ধৃত করেছেন। ২০২৪ সালের বাহরাইচে সহিংসতায় রাম গোপাল মিশ্র হত্যার ঘটনায় সরফরাজকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও ৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। ওই রায়ে উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক পবন কুমার শর্মা, গোপাল মিশ্রর উপর নির্যাতনের অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়ার পরে রায়ের পর্যবেক্ষণে মনুস্মৃতি উদ্ধৃত করেছেন।
মঙ্গলবার অতিরিক্ত দায়রা জজ (প্রথম) পবন কুমার ২০২৪ সালের বাহরাইচ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা মামলায় ১০ জন দোষী সাব্যস্ত করেন। রায়ে বিচারক আব্দুল হামিদ এবং তার তিন ছেলে সহ ১০ জন প্রধান অভিযুক্তকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১০৩/২ সহ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন। প্রমাণের অভাবে তিনজন আসামী মুক্তি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালত সাজা ঘোষণা করল।
বাহরাইচ পুলিশ নিজেই বিচারকের আদেশের প্রতিলিপিতে বর্ণিত নির্যাতনের দাবিগুলিকে খণ্ডন করেছে। এই ঘটনাকে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে এই হচ্ছে ভারতীয় বিচার বিভাগের অবস্থা। যে মৃত্যুদণ্ডের জন্য নির্যাতনের যে দাবি করা হয়েছিল, পুলিশই তা খণ্ডন করেছে।
আরও পড়ুন- ওড়িশায় বাঙালি নিগ্রহ! গর্জে উঠল তৃণমূল, এবার বিজেপি কী করবে?
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন নিহত রামগোপাল মিশ্রের স্ত্রী রোলি। বিচারকের রায় শোনার পরেই রোলির জবাব, ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে আদালত। স্বামীর নিহতদের সাজা ঘোষণার পরেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন নিহতের স্ত্রী । এদিন রায় ঘোষণার পরেই সাংবাদিকদের সামনে আসেন তিনি। রোলি বলেন, দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে তিনি এই রায় শোনার জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করেছেন। আদালত ন্যায় বিচার করেছে। যেভাবে আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, আমি এত জঘন্য অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে আদালতের রায়ে আমি সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট। রোলির কথায় “ঈশ্বর কে ঘরে দেরি হে, অন্ধের নেহি”। সঠিক বিচার হয়েছে। এর জন্য যোগী সরকারকে আমার তরফ থেকে কৃতজ্ঞতা। যদি সুযোগ পাই, তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই ন্যায়বিচারের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আজ আমার কাছে বলার মতো খুব বেশি ভাষা নেই, তবে আমার হৃদয় শান্তিতে আছে এটা জেনে যে আমার স্বামী আজ সত্যিকারের শ্রদ্ধাঞ্জলি পেয়েছেন। সেই দিনের ঘটনা আমি কোনদিন ভুলতে পারব না। এই দিনটির জন্য আমি অনেক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে হেঁটে এসেছি। ঈশ্বরের প্রতি আমার বিশ্বাস ছিল যে, আমার সঙ্গে ন্যায় বিচার হবে। শব্দ দিয়ে আমি আমার ব্যথা প্রকাশ করতে পারছি না।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর রামগোপাল মিশ্র নামে একজন হিন্দু ব্যক্তিকে হত্যার পর বাহরাইচে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় উত্তপ্ত হয়। বাহরাইচের মাহসি তহসিলে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় সংঘর্ষ হয়। খুন হন ২৮ বছরের যুবক রাম গোপাল মিশ্র। ঘটনার প্রায় ১৪ মাস পর রায় হল।
দেখুন আরও খবর-







