নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় (Pranab Mukherjee) মধ্যে একটি ‘অদ্ভুত’ সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন প্রণবকন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় (Sharmistha Mukherjee)। যখনই দেখা হত বাবার প্রায় হাত দিয়ে প্রণাম করেছেন মোদি। সততা এবং মনখোলা ভাব নিয়েই মোদী তাঁর বাবার পায় হাত দিতেন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। বাবাকে নিয়ে লেখা শর্মিষ্ঠার স্মৃতিচারণমূলক বই ‘ইন প্রণব, মাই ফাদার: এ ডটার রিমেম্বার্স’ গ্রন্থে তাঁর বাবার বিস্তারিত জীবন কাহিনি বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী না করার জন্য বাবার মধ্যে সোনিয়া গান্ধীর প্রতি কোনও বিদ্বেষ ছিল না। এমনকী মনমোহন সিংকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য তাঁর মধ্যে বিরোধিতার মনোভাব ছিল না।
এ বিষয়ে শর্মিষ্ঠা জানিয়েছেন, ‘বিজেপি নেতা শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসাবে সব সময় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতার পা ছুঁয়ে প্রনাম করতেন।’ প্রধানমন্ত্রী মোদি এই কাজটি সততার সঙ্গে প্রকাশ্যেই করতেন বলে জানিয়েছেন শর্মিষ্ঠা। তিনি আরও জানান, তাঁর বাবা রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার সময় নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে খুব ভালো করেই ওয়াকিবহাল ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মোদিকে তিনি বলেছিলেন, ভিন্ন মতাদর্শের হলেও তিনি তাঁর শাসনে কখনো হস্তক্ষেপ করবেন না।
আরও পড়ুন: নেহেরুর ভুলের জন্যই POK, নাহলে ভারতেরই থাকত: অমিত শাহ
প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর ডায়েরিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাহুল গান্ধী সম্পর্কে আলাদা আলাদা করে মতামত প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়েছে নানা ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট। সেগুলিই তাঁর বইতে চ্যাপ্টার অনুযায়ী তুলে ধরেছেন কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, যখন মোদি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তখন বাবা লিখেছিলেন—তিনি কংগ্রেস সরকার এবং এর নীতির তীব্র সমালোচক কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিনি সর্বদা আমার পা ছুঁতেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রণব মুখার্জি বিশ্বাস করতেন, নির্বাচিত সরকারে হস্তক্ষেপ না করাও তার দায়িত্ব। তাই প্রথম সাক্ষাতেই মোদিকে প্রনব বলেছিলেন, আমরা ভিন্ন মতাদর্শের, কিন্তু জনগণ আপনাকে একটি ম্যান্ডেট দিয়েছে। আমি সরকারে হস্তক্ষেপ করব না, এটা আপনার কাজ। তবে সাংবিধানিক কোনও বিষয়ে আপনার সাহায্যের প্রয়োজন হলে আমি সেখানে থাকব।
দেখুন আরও অন্য খবর