skip to content
Sunday, February 16, 2025
HomeScrollFourth Pillar | দিল্লিতে এগিয়ে কে? আপ না বিজেপি?
Fourth Pillar

Fourth Pillar | দিল্লিতে এগিয়ে কে? আপ না বিজেপি?

আসুন ভারতবর্ষের নির্বাচনী রাজনীতির সেই বিরাট ফর্মুলার দিকে চোখ রাখা যাক

Follow Us :

দিল্লি এক পুরোদস্তুর রাজ্য নয়, আবার সেই অর্থে আগের মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলও নয়। কিন্তু দেশের রাজধানী। দেশ দখলে এনেছে আরএসএস-বিজেপি, কিন্তু দিল্লি তাদের হাতের বাইরে এটা কেবল লজ্জার নয় এক ধরনের অপমানও বটে। তাই প্রতিবার দিল্লি নির্বাচনের সময়ে অমিত শাহ থেকে নরেন্দ্র মোদি, বিজেপি দল তাদের সমস্ত সামর্থ্য আর শক্তি নিয়েই নির্বাচনে নামে, কিন্তু প্রতিবারই তাদের হাতের বাইরেই থাকে দিল্লি কা লাড্ডু। রাত পোহালেই দিল্লির নির্বাচন, তাই আসুন দেখে নেওয়া যাক এবারে সেই লাড্ডু কাদের হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা। চার মাস আগেও কিন্তু ছবিটা ছিল বেশ অস্পষ্ট, কেজরিওয়াল জেলে, তাঁর বিরাট খরচায় বানানো মুখ্যমন্ত্রীর বাংলো নিয়ে নানান কথা, অমিত শাহ যাকে শিসমহল বলেছেন, কেজরিওয়াল মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন জেলে। মনে হচ্ছিল বিজেপি সম্ভবত এবারে কেকওয়াক, অনায়াসে জিতে যাবে। কিন্তু ছবিটা বদলাতে থাকল ক্রমশঃ। কেজরিওয়াল থেকে মণীশ সিসোদিয়া প্রত্যেকেই বেরিয়ে এলেন, বেরিয়ে এসে নিজে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে আবার গদিতে বসবেন এরকম ভুল করলেন না কেজরিওয়াল, অতিশীই কাজ চালাচ্ছেন। সব্বাই জানে যে বকলমে মুখ্যমন্ত্রী সেই কেজরিওয়াল, কিন্তু তবুও মুখ্যমন্ত্রীর পদ আঁকড়ে না ধরার মেসেজটা গেছে মানুষের কাছে।

ঠিক ওইখান থেকেই লড়াইটা ঘুরতে শুরু করে দিল, গলায় মালা পরে কেজরিওয়াল জেল থেকে বের হলেন, বিশাল র‍্যালি হল, মিছিলের সামনে হাত নাড়ছেন কেজরিওয়াল, আম জনতার কাছে লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার মেসেজ, মিছিমিছিই চুরির দোষে কেজরিওয়ালকে জেলে পোরা হয়েছিল। হ্যাঁ, এখনও আমাদের দেশে এই ইডি-সিবিআই মামলায় জেলে গিয়ে বাইরে আসার মানে অন্তত সাধারণ মানুষের কাছে, উনি চোর নন, উনি অপরাধী নন, অন্তত ওনার বিরুদ্ধে সেরকম কোনও প্রমাণ এনে হাজির করতে পারেনি সরকার, ওনাকে মিছি মিছি হ্যারাস করা হচ্ছিল। হ্যাঁ, এই কথাগুলোই ভাবেন আম জনতা। আপনি আইনের ভাষায় যা খুশি তাই ভাবতে পারেন। আমাদের দেশে দুর্নীতির অভিযোগ ক্রমশ তার ধারভার হারাচ্ছে এই কারণেই। বিজেপি সরকার, মোদি–শাহ সরকারের আমলে ইডি আর সিবিআই-এর মামলার পর মামলাতে বহু মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এক, দুই, তিন, চার বছর পরে তাদের অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় হয় তাদের ছেড়ে দিতে হয়েছে, না হলে তারা জামিন পেয়েছে। ফলে মানুষ এই ইডি-সিবিআই-এর গ্রেফতারি ইত্যাদিকে আমল দিতে চায় না। কিন্তু মন্ত্রিসভার মাথা মুখ্যমন্ত্রীকেই যদি জেলে পোরা হয় তাহলে তার প্রভাব পড়বে বইকী, কিন্তু এক্ষেত্রে কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়া জামিন পেয়ে যাওয়ার কারণেই মানুষের কাছে এক অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন গোছের মেসেজ গেছে।

দু’ নম্বর ব্যাপার হল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না থাকা। এমনিতেই বিজেপির নির্বাচনী সাফল্যের সিংহভাগ কিন্তু ওই কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই, কংগ্রেস তাদের কাছে বহুদিন ধরেই সফট টার্গেট। কংগ্রেস জোটে থাকলে ওই বংশানুক্রমিক শাসন, এমার্জেন্সির ইতিহাস সব বার হতো ঝোলা থেকে, আর তার দায়ভাগ গিয়ে পড়ত আম আদমি পার্টির উপরে, কেজরিওয়ালের উপরে। এখন সেই দায় নেই। আর দিল্লির আর এক ইতিহাস হল ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পরে শিখদের গণহত্যা, যার দায় নেওয়ার পরেও, বারবার দুঃখপ্রকাশ করার পরেও কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তোলা হয় এবং কংগ্রেস কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে থাকে। কাজেই ওই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না হওয়ায় বা বলা যাক ইন্ডিয়া জোট না হওয়াতে কিন্তু কেজরিওয়াল অ্যাডভ্যানটেজ, অন্তত শিখ গণহত্যা, জরুরি অবস্থা বা ওই বংশানুক্রমিক শাসনের দায়ভার নিতে হচ্ছে না। তিন নম্বর যা কেজরিওয়ালের পক্ষে কাজ করছে তা হল মহিলাদের ভোট, বাসে টিকিট ফ্রি থেকে এবারে ওই মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সম্মান যোজনার ঘোষণা কেজরিওয়ালকে এগিয়ে রাখবে। আমরা দিল্লি বলতে দিল্লির মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্তদের কথাই ভাবি, কিন্তু দিল্লির ভোটারের ৭০ শতাংশ কলোনির ভোটার, জুগগি ঝোপড়ির ভোটার, গরিব নিম্নবিত্ত মানুষ আদতে ঠিক করে ক্ষমতায় কারা আসবে, গদিতে কারা বসবে, তারাই নির্ণায়ক শক্তি আর সেই এক্কেবারে গরিব মানুষেরা গত ১০ বছরে বিদ্যুতে সাবসিডি থেকে মহল্লা ক্লিনিক থেকে, স্কুল থেকে ফ্রি বাসের টিকিট ইত্যাদির জন্যই কেজরিওয়ালকে ভোট দিয়েছে, এবারেও তার ব্যত্যয় হবে বলে তো মনে হয় না।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | আরএসএস-বিজেপি গান্ধীর হ*ত্যাকারী, জাতির পিতাকে সেদিন তারাই হ*ত্যা করেছে

কেজরিওয়াল কংগ্রেসের ভোট পায়নি, এবারেও পাবে না, কিন্তু তার হয়ে প্রচারে গেছেন অখিলেশ যাদব, মহুয়া মৈত্র, সাকেত গোখলে। মানে তৃণমূল বা সমাজবাদী দল, মানে বিজেপি বিরোধী ভোট কেজরিওয়ালের দিকে যাবে এমন একটা আবহ তৈরি হয়েছে, এমনিতে কেজরিওয়াল এক সফট হিন্দুত্বের লাইন নিয়েই চলেন, বয়স্ক মানুষজনকে ফ্রিতে তীর্থযাত্রা করানো, হনুমান মন্দিরে গিয়ে পুজো করা, আরএসএস নেতৃত্বকে চিঠি লিখে বিজেপির দুর্নীতির কথা বলা ইত্যাদি কেজরিওয়ালের গেমপ্ল্যান মেনেই হয় কিন্তু দিল্লির বিরাট সংখ্যালঘু মানুষ তাঁদের কাছে খুব বেশি অপশন আছে কি? দু’ তিনটে আসন বাদ দিলে তাঁরা জানেন বিজেপিকে হারাতে পারে এই আপ, কংগ্রেসের সেই ক্ষমতা নেই, কাজেই তাঁদের স্ট্র্যাটেজিক ভোট যাবে ওই আপ-এর দিকে, হ্যাঁ এবারে কংগ্রেস সম্ভবত গোটা দুই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসন পেতেই পারে, কিন্তু সংখ্যালঘু ভোট ওই আসনগুলো বাদ দিলে আপ-এর দিকেই যাবে।

এবারে আসুন ভারতবর্ষের নির্বাচনী রাজনীতির সেই বিরাট ফর্মুলার দিকে চোখ রাখা যাক, যাকে টিনা ফ্যাক্টর বলে– টি আই এন এ, দেয়ার ইজ নো অলটারনেটিভ ফ্যাক্টর। সারা দেশের সর্বত্র এই টিনা ফ্যাক্টর কাজ করে। খুব কয়েকটা ব্যতিক্রম বাদ দিলে এটাই দেশের নির্বাচনী পাটিগণিতের প্রথম কার্যকরী ফরমুলা। ধরুন এই বাংলা, তৃণমূল এগিয়ে কেন? তার প্রথম কারণ হল মমতা ব্যানার্জির বিপরীতে কে? মহম্মদ সেলিম? শুভঙ্কর সরকার? শুভেন্দু অধিকারী? একজনও মাইলখানেকের মধ্যেও নেই, কাজেই তৃণমূল ওই মাইলখানেক এগিয়ে থেকেই নির্বাচনে নামে। সারা দেশের প্রেক্ষিতে নরেন্দ্র মোদি। কে ওনার পরিবর্তে? বিকল্প মুখটি কে? রাহুল গান্ধী, হলে ভালো হত, কিন্তু বাস্তব বলেই দেয় যে ধারেকাছেও নেই, টোয়েন্টি ফোর ইন্টু সেভেন রাজনীতি আর নির্বাচনের মধ্যে বিচরণ করা নরেন্দ্র মোদির সামনে রাহুল গান্ধী এখনও কোনও বিকল্প নয়। ১৫ বছর আরএসএস প্রচারক, ১৫ বছর বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্ব, ১৫ বছর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী আর ১০ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্রিডেনশিয়ালের কাছে স্রেফ রাজীবের ব্যাটা, এটা কোনও যোগ্যতা হল? ঠিক সেরকম কেজরিওয়ালের বিপরীতে কে? বিজেপির কাছেও কোনও মুখ নেই, যাদের কথা উঠেছে তাদের দিল্লির মানুষ কেজরিওয়ালের ধারেকাছেও রাখে না, রমেশ বিধুরির মতো এক বাচালকে কেজরিওয়ালের জায়গাতে কেউই দেখতে চাইবে না। এটাই দিল্লিতে আপ-এর অ্যাডভানটেজ, আপ-এর একটা শক্তপোক্ত মুখ আছে, বিজেপির নেই, কংগ্রেসের ছেড়েই দিন।

দিল্লির নির্বাচনী পাটিগণিতে এক মজার অঙ্ক হল, দু’ দলের কমিটেড ভোটার পার্সেন্টেজ, আপ এবং বিজেপির কমিটেড ভোটার কিন্তু কমবেশি এক, ওদিকে এক বিরাট ভোটার সংখ্যা আছেন, যাঁরা লোকসভা ভোটে বিজেপির দিকে যান, বিধানসভা ভোটে আপ-এর দিকে আসেন, একই ভোটার যাঁরা লোকসভাতে বিজেপিকে ১৫-২০-২২ শতাংশ ভোটে এগিয়ে রাখেন বিজেপিকে, তাঁরাই আবার বিধানসভাতে আপকে ওই ১৫ শতাংশ বা তার বেশি ভোটে এগিয়ে রাখেন আপকে। মানে সোজা কথা, দেশের ফরেন পলিসি, অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত, দেশ চালানো, এসব থাক বিজেপির হাতে, আর দিল্লির জুগগি ঝুপড়ি, মহল্লা ক্লিনিক, স্কুল, বাস এগুলো দেখুক আপ, ময়লা পরিষ্কার থেকে রাস্তার আলো থেকে জল আপ দেখুক, মানুষ এটাই চায়। চায় বলেই লোকসভাতে সব আসনে বিজেপি এগিয়ে থাকে, বিধানসভাতে আপ-এর জয়জয়কার। তো এবারে কী হবে? খুব সাধারণ হিসেব বলে ১৫ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থাকা দলকে হারানো প্রায় অসম্ভব। তবে এটাও ঠিক যে মাস চারেক আগে সেরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছিল, যা আর নেই, বরং কেজরিওয়াল বা আপ নিজেদেরকে গুছিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সেই এক্কেবারে ৬৫-৬৮-৬২ আসন, না, সেটা আর সম্ভব নয়, কেজরিওয়াল অ্যান্ড কোম্পানি ৭০-এর মধ্যে ৪৫-এর মতো আসন পাওয়ার মতো জায়গাতে আছে, তাদের ইন্টারনাল সার্ভেও সেই কথা বলছে। বিজেপি ২০টার মতো আসন পাবে, কংগ্রেস গোটা দুই পাবে আর গোটা ৩ এক্কেবারে এদিক ওদিক, যে কোনওদিকে যেতে পারে। মানে রাত পোহালেই ভোট, সেই ভোটে আবার ক্ষমতায় ফিরতে চলেছেন কেজরিওয়াল, আগামী দিল্লির লাড্ডু কেজরিওয়ালেরই হাতে।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Bangladesh | মাথায় হাত পড়বে ইউনুসের? আবার বাংলাদেশের অনুদান বাতিল করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র!
00:00
Video thumbnail
Modi-Trump | হোয়াইট হাউসে মোদি-ট্রাম্প বৈঠক, কী সুবিধা পেতে চলেছে ভারত? দেখুন সরাসরি
06:24:45
Video thumbnail
Mohan Bhagwat | RSS | বর্ধমানে RSS প্রধান মোহন ভাগবতের সভা, কেমন চলছে প্রস্তুতি? দেখুন সরাসরি
04:35:50
Video thumbnail
Ghatal Master Plan| Dev | ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিশেষ বৈঠক, উপস্থিত থাকবেন সাংসদ দেব,দেখুন LIVE
02:35:35
Video thumbnail
Mohan Bhagwat | RSS | বর্ধমানে RSS প্রধান মোহন ভগবতের সভা, দেখুন সরাসরি
03:22:03
Video thumbnail
Abhishek Banerjee | অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সেবাশ্রয় প্রকল্পে বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসায় ২ শিশু
01:50
Video thumbnail
Fake Lottery | মমতা, অভিষেকের ছবি দিয়ে লটারির কুপন বিক্রি, আটক এক ফটোকপির দোকানের মালিক
03:38
Video thumbnail
Top News | দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে চার মহিলা মুখ নিয়ে জল্পনা
07:15
Video thumbnail
Weather Update | বুধবার থেকে বৃষ্টি! টানা ২ দিন বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে? কী বলছে আবহাওয়া দফতর?
00:00
Video thumbnail
Weather Update | বুধবার থেকে বৃষ্টি! টানা ২ দিন বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে? কী বলছে আবহাওয়া দফতর?
01:51