নয়াদিল্লি: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা (Assembly Polls 2022) ভোটে দলের শোচনীয় পরাজয় মেনে নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Congress leader Rahul Gandhi)৷ এই পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করার কথা জানালেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার বিকেলে টুইটে রাহুল লেখেন, নম্রতার সঙ্গে মানুষের রায় মেনে নিচ্ছি৷ যাঁরা জিতেছেন তাঁদের অভিনন্দন৷ তবে কংগ্রেস কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মত্যাগের জন্য তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি৷ এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করে যাব৷
Humbly accept the people’s verdict. Best wishes to those who have won the mandate.
My gratitude to all Congress workers and volunteers for their hard work and dedication.
We will learn from this and keep working for the interests of the people of India.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) March 10, 2022
কিন্তু দলের অন্দরে আবারও যে যে প্রশ্নগুলি উঠে আসছে তা হল, আর কতবার হারের মুখ দেখার পর নেতাদের শিক্ষা নেওয়া শেষ হবে? কংগ্রেস কি আদৌ নির্বাচনী বিপর্যয় থেকে কোনও শিক্ষা নিচ্ছে? পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে এমন বিশ্রি হারের দায় কি গান্ধী পরিবার এড়াতে পারে? উত্তরপ্রদেশে হারের দায় কার? পঞ্জাবে খারাপ ফলের দায়িত্ব কে নেবে? রাহুলকে বাদ দিয়ে উত্তরপ্রদেশে পায়ের তলার হারানো জমি উদ্ধারের দায়িত্ব সোনিয়া গান্ধী তুলে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কার উপর৷ উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের মুখ ছিলেন প্রিয়াঙ্কা৷ নতুন দায়িত্ব পেয়ে প্রিয়াঙ্কা চেষ্টার কসুর করেননি৷ ‘ম্যায় লড়কি হু, লড় সকতি হু’ স্লোগানকে সামনে রেখে প্রচারে ঝাঁপিয়েছিলেন৷ কিন্তু উত্তরপ্রদেশ তাঁকেই প্রত্যাখ্যান করল৷
পঞ্জাব বাদে বাকি চার রাজ্যে কংগ্রেস যে বিশাল কিছু আহামরি ফল করতে চলেছে এমনটা আশা কেউই করেনি৷ কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল শতাব্দী প্রাচীন দলকে খাদের কিনারা থেকে একেবারে অতলে ঠেলে দেবে এমনটাও কল্পনা করা যায়নি৷ পঞ্জাব তো হাতছাড়া হলই৷ বাকি চার রাজ্যেও শোচনীয় হার হয়েছে কংগ্রেসের৷ উত্তরাখণ্ডে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল হয়৷ এবার তাই সেখানে কংগ্রেসের জয়ের আশা ছিল৷ কিন্তু পাহাড়ি রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে আরেকবার সুযোগ করে দিল৷ গোয়া ও মণিপুরে একই অবস্থা৷ ওই দুই রাজ্যে বিজেপি গতবারের চেয়ে ভালো ফল করেছে৷
আরও পড়ুন: Arvind Kejriwal: পঞ্জাব জয়ের পর দেশের যুব ও মহিলাদের আপে যোগ দেওয়ার আহ্বান কেজরির
উত্তরপ্রদেশেও রেকর্ড ভেঙে এই প্রথম ৩৬ বছর পর কোনও রাজনৈতিক দল পরপর দু’বার ক্ষমতায় আসীন হতে চলেছে৷ দেশের সবথেকে বড় রাজ্যে কংগ্রেসের প্রাপ্তি মাত্র ২ টো আসন৷ স্বাধীনতার পর শতাব্দী প্রাচীন দলের এমন অবস্থা এই প্রথম৷ আর পঞ্জাব? আপের সামনে সব বিরোধী দলই মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ কংগ্রেসের সব হেভিওয়েট প্রার্থীরা হেরেছেন৷ দলের ভোটের হার অর্ধেক কমেছে৷ মুখরক্ষায় দলের তরফে বলা হচ্ছে, আমরা চেষ্টা করেছিলাম লড়াই করার৷ কিন্তু হার-জিত নির্ভর করে মানুষের রায়ের উপর৷ কেন এমন হার হল তার পর্যালোচনা প্রয়োজন৷ দলের এমন দায়সাড়া মন্তব্যে সন্তুষ্ট নয় বিক্ষুব্ধরা৷ বরং তাঁরা মনে করছেন, আগে কংগ্রেসকে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই লড়তে হবে৷ প্রধান বিরোধী দলের জায়গাটা পাকাপোক্ত করে তুলতে হবে৷ তবেই জাতীয় স্তরে বিজেপির সঙ্গে টক্কর দেওয়া সম্ভব৷