নয়াদিল্লি: আয়কর বা ইনকাম ট্যাক্স (Income Tax)। এটি এমন একটি কর, যা ভারত সরকার প্রতিটি ব্যক্তি কিংবা সংস্থার আয়ের পর লাগু হয়। ভারতে আয়কর সংক্রান্ত যেসব প্রবিধান (Provisions) রয়েছে, তার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে আয়কর আইন ১৯৬১ (Income-Tax Act, 1961)। মানুষ হোক কিংবা কৃত্রিম ব্যক্তি (Natural or Artificial Person), অর্থ উপার্জন করা (Earning an Income) যে কোনও ব্যক্তি আইন অনুযায়ী আয়কর দিতে দায়বদ্ধ, যদি না আইনত কোনও রকম ছাড় (Exempt) দেওয়া হয়।
বাংলা সহ ভারতের সমস্ত রাজ্যেই লটারির টিকিট (Lottery Tickets) বিক্রি হয়, যা এদেশে আইনত স্বীকৃত একটি ব্যবসা। সামান্য পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা জেতার বিষয়ে কম-বেশি সবারই আগ্রহ থাকে। লোকজন লটারি টিকিট এই কারণে কিনে থাকেন। ভারতে একাধিক লটারি সংস্থা রয়েছে। সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, কিংবা মাসিক ভিত্তিতে লটারি প্রতিযোগিতা (Competition) আয়োজন করে থাকে এবং বিজেতা টিকিটের নম্বর ঘোষণা করে আর্থিক পুরস্কার (Financial Rewards) বিতরণের জন্য।
লটারিতে আর্থিক পুরস্কার জেতা ভাগ্যের বিষয়। ধরুন আপনি ভারতে কোনও লটারি প্রতিযোগিতায় আর্থিক পুরস্কার জিতেছেন, তা সে বড় অঙ্কের হোক কিংবা স্বল্প পরিমাণ, আপনার জেতা ওই অর্থ কিন্তু করযোগ্য (Taxable)। ভারত সরকারের আইন তাই বলছে। জানেন কি এরজন্য কত পরিমাণ অর্থ আপনাকে আয়কর হিসেবে দিতে হবে?
দেশের আয়কর আইন অনুসারে লটারি জিতলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে ৩০ শতাংশ অর্থ সরকারের ঘরে জমা করতে হয়। এই আইন ভারতে বসবাসকারী এবং অনাবাসী বিজেতা (Resident and Non-Resident Winners) উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এখানে উল্লেখ্য, ব্যক্তি হোক কিংবা কোনও সংস্থা লটারিতে জেতা পুরস্কারের অর্থ আয়কর নিয়ম অনুযায়ী ৩০ শতাংশ কাটার পর হস্তান্তর (Transfer) করা হয়।
লটারি জেতা, কার্ড গেম জেতা, টিভি প্রোগ্রামে জেতা, ক্রসওয়ার্ড পাজল (Cross-Word Puzzle) জেতা এবং এধরনের অন্যান্য যে কোনও আর্থিক পুরস্কার জেতার ক্ষেত্রে টিডিএস বা ট্যাক্স ডিডাক্টেড অ্যাট সোর্সেস (Tax Deducted at Source – TDS) ধার্য করা হয় ভারতীয় আয়কর আইন ১৯৬১ (Indian Income Tax Act, 1961) অনুসারে। বিজেতাকে সংশ্লিষ্ট প্রতিযোগিতার অর্থ প্রদানের আগে ৩০ শতাংশ টিডিএস কেটে নেওয়া হয়। যদি প্রতিযোগিতার অর্থ ১০,০০০ টাকার বেশি হয়, তাহলে সারচার্জ ও সেস (Surcharge and Cess) যুক্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট টিডিএস বেড়ে ৩১.২ শতাংশ হয়ে যায়।
লটারি কিংবা আর্থিক পুরস্কার জেতার পর জরিমানা ও অন্যান্য আইনি প্রতিক্রিয়া এড়াতে প্রয়োজনীয় কর দেওয়া আবশ্যিক। কারণ, এই ধরনের আর্থিক পুরস্কার জয় অন্যান্য সূত্রে আয়ের অধীনে পড়ে।
উল্লেখ্য, ভারতে মোট তিনটি পদ্ধতিতে আয়কর সংগ্রহ করা হয়। প্রাপকের আয়ের উৎস থেকে অর্থ কেটে নেওয়া বা ট্যাক্সেস ডিডাক্টেড অ্যাট সোর্স (Taxes Deducted at Source – TDS), আয়ের উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ বা ট্যাক্সেস গ্যাদার্ড অ্যাট সোর্স (Taxes Gathered at Source – TCS) এবং বিভিন্ন মনোনীত ব্যাঙ্কে অ্যাডভান্স ট্যাক্স ও সেলফ অ্যাসেসমেন্ট ট্যাক্স (Advance Tax and Self Assessment Tax) হিসেবে জমা করা স্বেচ্ছায় অর্থপ্রদান (Voluntary Payments)। উপার্জনক্ষম প্রতিটি ব্যক্তির সাংবিধানিক দায়িত্ব হলো, নিজের আয় সঠিকভাবে গণনা করা ও কর প্রদান করা।
। এটি এমন একটি কর, যা ভারত সরকার প্রতিটি ব্যক্তি কিংবা সংস্থার আয়ের পর লাগু হয়। ভারতে আয়কর সংক্রান্ত যেসব প্রবিধান (Provisions) রয়েছে, তার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে আয়কর আইন ১৯৬১ (Income-Tax Act, 1961)।){kind=link}