Placeholder canvas

Placeholder canvas
Homeটক অন ফ্যাক্টসTalk On Facts | গোল নয় পৃথিবীর ! রাস্তাও শেষ হয়...

Talk On Facts | গোল নয় পৃথিবীর ! রাস্তাও শেষ হয় এখানে…

Follow Us :

মনে আছে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমার সেই জনপ্রিয় গান ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ । হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন কথা হচ্ছে এক পথের। পৃথিবীরই শেষ সীমানা নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। অ্যাডভেঞ্চার (Adventure) প্রেমীরা সেই স্থানে দেখতে চান নিজের চোখে। আগের প্রতিবেদন ভারতের শেষ রাস্তার রহস্য নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজও এ রকম এক রাস্তার কথা নিয়ে এসেছি আপনাদের জন্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ দেশ নরওয়ে। আর এখানেই আছে পৃথিবীর শেষ রাস্তা। এই রাস্তা ধরেই স্থল পথে উত্তর মেরুর সবচেয়ে কাছে যাওয়া যায়। সেকারণেই একে বলা হয় দ্যা লাস্ট রোড অব দ্যা ওয়ার্ল্ড। তবে এই রাস্তার প্রাতিষ্ঠানিক নাম ‘ই সিক্সটি নাইন হাইওয়ে’ (E 69 highway)। এই রাস্তা দিয়ে গেলে মনে হবে আকাশ আর মাটি একসঙ্গে মিশে গেছে। রাস্তার দু’পাশ বরফে ঢাকা থাকে ও রাস্তাটির দিয়ে শেষ মাথায় রয়েছে শুধু বরফ ও সমুদ্র। কিন্তু সেখানে একা যাওয়া বারন। একা গেলেই নাকি হতে পারে বিপদ।

এই রাস্তা হয় উত্তর গোলার্ধ (Northern Hemisphere) অর্থাৎ নিরক্ষরেখার ঠিক উপরে রয়েছে। এই রাস্তাটি উত্তর মেরুর গাঁ ঘেঁসে আঁকাবাঁকা ভাবে চলে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের কথায় এই রাস্তাই ইউরোপের নর্ডক্যাপ (Europe’s Nordkapp) ও নরওয়ের ওল্ডফিউওর্ড গ্রামকে সংযুক্ত করেছে। ই-৬৯ হাইওয়ে’ দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৯ কিলোমিটার। গোটা রাস্তা জু়ড়ে রয়েছে পাঁচটি ট্যানেল। যার মধ্যে সবথেকে বড় ট্যানেলটি হল নর্থ কেপ। এটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬.৯ কিলোমটার। টানেলটি সমুদ্রতলের প্রায় ২১২ মিটার নিচে দিয়ে গেছে। এই পথ দিয়ে গেলে দুপাশে নজরে আসবে অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য। সঙ্গে উপরি পাওনা সমুদ্র এবং বরফ, বরফ আর শুধুই বরফ।

কিন্ত সুন্দরের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। ওই রাস্তায় যাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম না মানলে ওই রাস্তায় যাওয়ার অনুমতি মিলবে না, নিয়ম না মানলে ভয়ঙ্কর বিপদ লুকিয়ে রয়েছে ওই রাস্তার পরতে পরতে। তাই ‘ই-৬৯ হাইওয়ে’তে একা যাওয়ার কোনও অনুমতি নেই। গতিতে বাতায় বইতে থাকে। আর তেমনই ঠান্ডা। এতটাই ঠান্ডা যে গ্রীষ্মকালেও এখানে বরফ পড়ে। আর শীতকালে এই রাস্তা বরফের চাদরে ঢাকা থাকে। বন্ধ থাকে রাস্তা। সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন হওয়ায় যে কোনও মুহূর্তে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে যায়। এখানকার আবহাওয়া একেবারে অনিশ্চিত। হঠাৎই ভয়ঙ্কর ঝড় শুরু হয়ে যায়। আবহাওয়ার অনিশ্চিতার কারণেই এখানে কাউকে একা যেতে দেওয়া হয় না। 

এই হাইওয়েতে অনেক জায়গা আছে, যেখানে একা হাঁটা বা গাড়ি চালানোও নিষিদ্ধ। অনেক মানুষ একসঙ্গে আছে, তবেই আপনি এর মধ্য দিয়ে যেতে পারবেন নাহলে। এর পেছনের কারণ, সর্বত্র পড়ে থাকা বরফের মোটা চাদরের কারণে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। উত্তর মেরুর কাছাকাছি থাকার কারণে শীতকালে রাত শেষ হয় না এবং গ্রীষ্মে সূর্য অস্ত যায় না। কখনো কখনো এখানে প্রায় ছয় মাস সূর্যের আলো পড়ে না। শীতকালে, এখানে তাপমাত্রা মাইনাস ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে মাইনাস ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকে, যেখানে গ্রীষ্মে গড় তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। এ রাস্তায় তাই শীতকালে কখনও রাত শেষ হতে চায় না, দিনের পর দিন দেখাই দেয় না সূর্য। আর গরমকালে এই রাস্তায় দিনরাত সূর্য জ্বলে থাকে উজ্জ্বল আলোয়। টানা ৬ মাস সূর্য ডোবে না।

নরওয়ের E 69 হাইওয়ে তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয় ১৯৩০ নাগাদ। ১৯৩৪ সালে হাইওয়ে তৈরির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। পর্যটন, মৎস্যচাষ ইত্যাদির পরিকল্পনাও তাতে সামিল ছিল। রাস্তার সম্প্রসারণ হয়েছে ধীরে ধীরে। রাস্তার বর্তমান দৈর্ঘ্য ১২৯ কিলোমিটার সম্পূর্ণ হয়েছে ১৯৯২ সালে।

RELATED ARTICLES

Most Popular