Monday, June 9, 2025
HomeআজকেAajke | শীতলকুচি ভুলে যাবেন? কার অর্ডারে গুলি চলেছিল? কে মেরেছিল চার...
Aajke

Aajke | শীতলকুচি ভুলে যাবেন? কার অর্ডারে গুলি চলেছিল? কে মেরেছিল চার নিরীহ গ্রামবাসীকে?

যিনি গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অধিকারী ছিলেন তাঁকে বিজেপি বীরভূম আসনের প্রার্থী করে মাঠে নামিয়েছে

Follow Us :

একটু পিছনের দিকে তাকানো যাক, কারণ আর ক’দিন পরেই উত্তরবঙ্গে ভোট, জলপাই পোশাক পরা কেন্দ্রীয় বাহিনী হাতে ইনসাস রাইফেল নিয়ে মার্চ করা শুরু করেছে। প্রত্যেক বিজেপি প্রার্থী আর নেতা এই উর্দি পরা বাহিনীর উপরেই বিশ্বাস করেন। তাই আবার একটু ফিরে দেখা। আনন্দ বর্মন (১৮), চালমু মিয়া (২৩), জাবেদ আলি (২০), আমজাদ হোসেন (২৮), নামিদ মিয়া (২০) তখন লাশ। পরে দাফন হয়ে গেছে। তার আগে তাদের শরীরে মায়ের চোখের জল পড়েছে, রক্ত শুকিয়েছে, সে জল এখনও শোকায়নি, তাদের প্রত্যেকের গুলি লেগেছে বুক কিংবা বুকের উপরে, দুটো নয় একটাই ক্ষত। যাঁরা বিরোধিতা করবেন এনআরসির, তাঁদের লাশের উপর দিয়েই এনআরসি আসবে, বলেছিলেন রগড়ে দেওয়া নেতা, বিজেপির রাজ্য সভাপতি, দিলীপ ঘোষ, কথা রেখেছেন। গুলি চালিয়ে চার জনের লাশ ফেলে দেওয়ার পর, নতুন হুমকি দিয়েছেন, বাড়াবাড়ি করলে আরও অনেক শীতলকুচি হবে। কথা রেখেছিলেন, তখনকার বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। অক্ষরে অক্ষরে কথা রেখেছিলেন, সিআরপিএফ-কে বলে দেব, গুলি যেন বুক লক্ষ্য করে চালায়, গুলি যেন পা লক্ষ্য করে না চালায়, এমন বাড়াবাড়ি দেখানো হবে, দৌড়নো তো দূরের কথা, এখন যাবে দৌড়ে আর ফিরবে খাটিয়াতে। যা বলেছিলেন, তাই হয়েছিল। সিআরপিএফ-কে আগে থেকেই নির্দেশ দেওয়া ছিল, বুকের তলায় নয়, উপরে গুলি করতে, তারা নির্দেশ পালন করেছিল, চারজনের বুকের উপরে ইনসাস রাইফেলের গুলি, একটাই ক্ষত। সেই ঘটনার বিচার হয়েছে? বিচার তো পরে হবে, কে গুলি চালাতে বলেছিল? সেটা বের করা গেছে? যিনি এই জেলার দায়িত্বে ছিলেন তিনি এখন বীরভূমে বিজেপির প্রার্থী। কেউ জানে না, মানুষগুলো কবরে শুয়ে, কোন দোষে তারা আজ সেখানে? বা তারা নির্দোষ, তাহলে দোষী কারা? আজ তিন বছর পরে যখন আবার উর্দি পরা বাহিনী ঘুরছে, জানাই গেল না? স্বরাষ্ট্র দফতর কী করছে? দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী করছেন? এই প্রশ্ন উঠবে না? উঠছে তো। কারণ ওই উত্তরবঙ্গে এক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও এবারে নির্বাচনের ময়দানে। এমনিতেই মোদি সরকারের এই হাফ মন্ত্রীদের চেয়ে থানার কনস্টেবলেরও গুরুত্ব বেশি, তাহলেও, এই প্রশ্ন তো তাঁকেও করাই যায়। তাই সেই প্রশ্নই বিষয় আজকে। শিতলকুচি ভুলে যাবেন? কার অর্ডারে গুলি চলেছিল? কে মেরেছিল চার নিরীহ গ্রামবাসীকে?

মহামান্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিলেন, যে প্রায় ৩৫০ সশস্ত্র গ্রামবাসী ঘিরে ধরেছিলেন কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনীকে, অতএব গুলিচালনা ছিল জায়েজ, মানুষের মৃত্যু জায়েজ, টিট ফর ট্যাট। গগন নিনাদিত আওয়াজ শোনা গিয়েছিল, কে দিয়েছিল উসকানি? কম জামাকাপড় পরে বের হলে রেপ তো হবেই, কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বলকে উসকানি দিলে লাশ তো পড়বেই, ফরমুলা, ই ইজ ইকুয়াল টু এমসি স্কোয়ার। কাকদ্বীপের অহল্যা মা তো উসকানিই দিয়েছিল, গর্ভধারিণী মায়ের পেট চিরে উসকানির জবাব দেওয়া হয়েছিল, যাতে ভবিষ্যতেও কেউ কারও উসকানিতে রাষ্ট্রের মুখোমুখি না হয়। ১৯৪৯, ২৭ এপ্রিল, লতিকা, প্রতিভা, অমিয়া, গীতা ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির উসকানিতে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন রাষ্ট্রকে, উসকানির জবাবেই গুলি চালিয়েছিল পুলিশ, বুকের বা বুকের উপরে, তাঁরা শহীদ হয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: Aajke | অনন্ত মহারাজ ওরফে নগেন্দ্র রায়ের জন্য উত্তর আর দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির আসন কমবে

পুলিশের রিপোর্ট পড়ে দেখুন, জেনারেল ও ডায়ারের বক্তব্যের জেরক্স কপি, জালিয়ানওয়ালাবাগে নিরস্ত্র মানুষজন, আসলে নেতাদের উসকানিতে ঘিরে ধরেছিল ইংরেজ ফৌজকে, তারপর তিনি উপায় না দেখে গুলি চালান। মহারানির রাজত্বে দেশদ্রোহীদের শাস্তি বিধানের জন্যই গুলি চালানো হয়েছিল, সেদিনের পুলিশের, প্রশাসনের বিবৃতি তার জেরক্স কপি, যার মাথায় বসেছিলেন তিনি যিনি আজ বিজেপির প্রার্থী। নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থায় প্রত্যেক বুথে সিসিটিভি থাকার কথা ছিল, এ ছাড়াও তাঁদের ভিডিওগ্রাফাররা ছবি তুলবেন, এমন ব্যবস্থাও থাকার কথা ছিল। ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার পরের কথা ছেড়েই দিন, আজ অবধি সেই সিসিটিভি বা ভিডিও ফুটেজ কিন্তু আসেনি, যা পেলে ঘটনার কিছুটা মুল্যায়ন তো করা যেত। এবার আসা যাক নির্বাচন কমিশন, পুলিশ এবং সুরক্ষা বাহিনীর বিবৃতিতে, সবটাই ছিল অভিন্ন বিবৃতি, তাঁদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল একটি ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাকে সেবা শুশ্রুষার মধ্যে সুরক্ষা বাহিনী নাকি তাদের গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়। গ্রামবাসীরা ভুল বোঝে, এবং তারা নাকি দা, কাস্তের মতো ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাজির হয়, ৩৫০ গ্রামবাসী ঘিরে ধরে সুরক্ষা বাহিনীকে, তারা সুরক্ষা বাহিনীর অস্ত্রশস্ত্র কেড়ে নিতে চায়, তারা ইভিএম মেশিন লুঠপাট করার চেষ্টা চালায়। এরপর সুরক্ষা বাহিনী ব্ল্যাঙ্ক ফায়ার করে, মানে আকাশের দিকে বন্দুক তুলে গুলি চালায়, তাতেও সামলানো না গেলে সুরক্ষা বাহিনী ভিড়ের উপর গুলি চালায় তাতে ৪ জন নিহত, ৫ জন আহত হয়, নিহত একজনের গায়ে ২টো অন্যদের গায়ে একটা করে গুলি লাগে। আহত নিহতদের ৯৫ শতাংশের গুলি বুক বা তার উপরে লেগেছে, জানিয়েছিলেন এসপি নিজে, জেনেছিলাম মাথাভাঙা হাসপাতাল থেকে, স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে। ৩৫০ গ্রামবাসী দা, কাটারি, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হাজির হল, তারা অস্ত্র নিয়ে এল, কিন্তু আশ্চর্য, চালাল না, একবারের জন্যও না। কারণ এই ঘটনায় একজনও, হ্যাঁ, একজনও সুরক্ষা কর্মী আহত হননি, আজ সেই হত্যার পিছনের সত্যিটা জানার দাবি তো করতেই হবে। আমরা আমাদের দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, ২০২১-এর এপ্রিলে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডে মৃতের প্রত্যেকের মৃত্যু ইনসাস রাইফেলের গুলিতে হয়েছে। কেন আজ তিন বছর পরেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেই হত্যার পেছনে দোষীদের সামনে আনলেন না? কেন সেই হত্যাকাণ্ডের সময় যিনি গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়ার অধিকারী ছিলেন তাঁকে বিজেপি বীরভূম আসনের প্রার্থী করে মাঠে নামিয়েছে? শুনুন মানুষজন কী বলছেন?

৩৫০ জন গ্রামবাসী দা কাটারির মতো অস্ত্র নিয়ে ঘিরে ধরেছিল কেন্দ্রীয় সুরক্ষা কর্মীদের, একটা বন্দুক, ইনসাস রাইফেল ছিনতাই হল না, একজনের গায়ে সেই ধারালো অস্ত্রের ক্ষত ছিল না, কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মারা গেল ৪ জন, স্পট ডেড। রাইফেল ছিনতাইয়ের গল্পটা আজিজুল হকের তৃতীয় কেন্দ্রীয় কমিটির গল্পের মতো শোনাচ্ছে। এইখানেই শেষ নয়, এই উত্তেজিত গ্রামবাসী নাকি ইভিএম লুঠ করার চেষ্টা চালাচ্ছিল, তাতেই নাকি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুরক্ষা বাহিনী। তো ঘটনা যখন ঘটছে, তখন ভোট শেষ হতে অনেক বাকি, ইভিএম বুথের মধ্যে, সেখানে সিসিটিভি আছে, কেউ ঢোকার ফুটেজ কী আছে? নেই, কেউ বা অনেকে ঢুকে ইভিএম ছিনতাই করার চেষ্টা করছে, এমন ছবি সিসিটিভিতে আসার কথা, নেই। কেন নেই? আসলে আষাঢ়ে গপ্পের কোনও প্রমাণ থাকা সম্ভব নয়, এখানেও নেই। কিন্তু গুলি চালানোটা তো বাস্তব, রূঢ় বাস্তব চার জনের মৃত্যু।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Sheikh Hasina | ফের সরাসরি বক্তব্য রাখছেন হাসিনা, কী বলছেন শুনুন
03:02:26
Video thumbnail
Sheikh Hasina | এই প্রথম সরাসরি বক্তব্য রাখছেন শেখ হাসিনা, দেখুন Live
03:04:05
Video thumbnail
Dilip Ghosh | Suvendu Adhikari | দিলীপের প্রত্যাবর্তন, চাপে শুভেন্দু?
00:42
Video thumbnail
Rekha Patra | সন্দেশখালির শুভেন্দুর সভায় মঞ্চে নেই রেখা পাত্র, হঠাৎ কী হল? ফুলবদল কী সময়ের অপেক্ষা?
01:56
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | শুভেন্দুর আচরণে ক্ষু/ব্ধ বিজেপি কর্মীর স্ত্রী, কেন? দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:32:54
Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Nitish Kumar | BJP | বিজেপি-নীতীশ জোট আদৌ টিকবে? আসন রফাতেই শুরু প্রবল ঝা/মেলা, দেখুন এই ভিডিও
02:57:19
Video thumbnail
Rekha Patra | Suvendu Adhikari | সন্দেশ শুভেন্দুর গলায় আটকে, মঞ্চে নেই রেখা, কী বলছে সন্দেশখালি?
06:40
Video thumbnail
Rekha Patra | Suvendu Adhikari | সন্দেশ শুভেন্দুর গলায় আটকে, মঞ্চে নেই রেখা, কী বলছে সন্দেশখালি?
00:00
Video thumbnail
TMC | দেশ ওপারে, ভোট এপারে, কাকদ্বীপ কাণ্ডে তদন্তের নির্দেশ তৃণমূলের
05:32