কলকাতা: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাজীব পালকে নতুন করে আর রক্ষাকবচ দিল না কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের দেওয়া রক্ষাকবচের মেয়াদ শেষ হওয়ায়, হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজীব। কিন্তু উচ্চ আদালত সেই আবেদনে সাড়া দিল না। শুক্রবার বিচারপতি দীপঙ্কর ঘোষ এই নির্দেশ দেন।
হলদিয়া বন্দরে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে রাজীবের বিরুদ্ধে। একই অভিযোগে অভিযুক্ত শুভেন্দুর আর এক ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদক কিন্তু হাইকোর্ট থেকেই রক্ষাকবচ পেয়েছেন। বিচারপতির এ দিনের রায়ের পর রাজীব পালকে গ্রেফতারে আর কোনও বাধা রইল না।
সূত্রের খবর, হলদিয়া বন্দরে দাবিমতো টাকা না-দেওয়ায়, মালপত্র লোডিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে। শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে এ নিয়ে থানায় একটি এফআইআর-ও হয়। গত বছরের ১২ জুলাই হলদিয়া থানায় এফআইআরটি করেন ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী শেখ সাহাদাত আলি। সাহাদত থাকেন হলদিয়ারই ডিঘাসীপুরে।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপির মিছিল আটকাল বিধাননগর পুলিস
শ্যামল আদকের সঙ্গেই এফআইআরে নাম ছিল রাজীব পাল ও কালু নামে এক ব্যক্তির। এ নিয়ে হলদিয়া পুলিস তদন্ত শুরু করতেই গ্রেফতারির আশঙ্কায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ শ্যামল আদক ও রাজীব পাল। হাইকোর্ট থেকে দু’জনকেই রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, দ্বিতীয় দফায় এ দিন আর রক্ষাকবচ পেলেন না রাজীব।
হলদিয়ার ওই ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীর অভিযোগপত্রে জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সাল থেকে তিনি ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায় নেমেছেন। মূলত, হলদিয়া বন্দর থেকে মালপত্র নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিতেন। অভিযোগ থেকে জানা যায়, খড়্গপুরে একটি ইস্পাত কারখানায় ওই ট্রান্সপোর্ট সংস্থার গাড়ি বেশি যেত। বন্দরের ভিতরে ঢোকার জন্য সেখানকার শ্রমিক ভবনে সিন্ডিকেট চক্রের হাতে ১০০ টাকা নজরানা দিতে হত। বিনিময়ে মিলত একটি স্লিপ। সেই স্লিপ দেখালেই ভিতরে যাওয়ার অনুমতি মিলত। বন্দরের শ্রমিক ভবনই ঠিক করে দিত কোন ট্রান্সপোর্টের গাড়ি কোথায় মালপত্র নিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari-Kunal Ghosh: তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা করছেন শুভেন্দু, দাবি কুণালের
শেখ সাহাদাত আলির দাবি, শ্যামল আদক একদিন জানিয়ে দেন বন্দরে তাঁকে আর কোনও কাজ দেওয়া হবে না। প্রতিবাদ করলেই গুন্ডাবাহিনী দিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে। পরিস্থিতি উপলব্ধি করে বন্দর থেকে মালপত্র নিয়ে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয় তাঁকে। তার জেরে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। এই গোটা ঘটনার পিছনে শ্যামল আদলক ঘনিষ্ঠ রাজীব পালও রয়েছে।