কলকাতা : বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে একজোট হওয়ার ধ্বনি বরাবর শোনা গিয়েছে দুজনের মুখেই । টলিউডের হেভিওয়েট দুজনেই। একজন অভিনেতা-প্রযোজক আর একজন পরিচালক। কথা হচ্ছে দেব ও সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বার্থে একজোট হওয়ার কথা বরাবর শোনা গিয়েছে দুজনের মুখেই। কিন্তু আচমকাই বিবাদ বেঁধেছে দুজনের মধ্যেই। তা এই দুই মহারথীর মধ্যে বিবাদের কারণ কি?
ইতিমধ্যেই সকলেই জেনে গেছেন যে, বিরসা দাশগুপ্ত পরিচালিত ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গ রহস্য’ ছবিতে ব্যোমকেশের চরিত্রে অভিনয় করছেন দেব। অন্যদিকে, ওই একই সময়ে মুক্তি পাচ্ছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ব্যোমকেশের ওয়েব সিরিজ। এই ব্যোমকেশ নিয়ে সৃজিত আর দেবের তরজা অনেকদিনেরই। সৃজিতের এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে। এরপরেই দেবের সিদ্ধান্ত সৃজিতের সঙ্গে আপাতত কোনো কাজই করবেন না তিনি। আর এই গোটা বিষয় নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়লেন না দেবের ‘ব্যোমকেশ’ পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত। আসলে প্রথমে ‘ব্যোমকেশ ও দুর্গ রহস্য’ ছবিটি পরিচালনা করার কথা ছিল সৃজিতের। ব্যোমকেশ হিসেবে তিনি বেছে নেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য্যকে। এর ফলেই মতবিরোধ বেঁধে যায় প্রযোজনা সংস্থা এবং স্বত্বধারী প্রযোজকের সঙ্গে। প্রজেক্ট থেকে সরে দাঁড়ান সৃজিত। এরপর ছবি পরিচালনার দায়িত্ব পান বিরসা। আর অন্যদিকে অনির্বাণকে নিয়েই হইচই প্ল্যাটফর্মে ‘ব্যোমকেশ ও দূর্গ রহস্য’ আনছেন সৃজিত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সৃজিত জানান, ব্যোমকেশ হিসেবে তিনি দেবকে চাননি। তাঁর কথায়, “আমি আমার মতো করে ছবিটা করবো বলেছিলাম। যদি এই শর্তে ছবি হয় তাহলে হবে, নাহলে নয়। শরদিন্দুর ব্যোমকেশের ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে আমি। আর শরদিন্দুর লেখা পরে ব্যোমকেশের যে রূপ আমার মন গেঁথে গিয়েছে, তার সঙ্গে দেবের তুলনায় অনির্বাণ বেশি খাপ খায়।” উল্লেখ্য, আগামীতে দেবকে নিয়ে দুটি প্রজেক্ট ভেবেছেন সৃজিত। জানা গেছে, বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলার বায়োপিক তৈরি করতে চলেছেন সৃজিত। সেখানেই দেবকে কাস্টিং করার কথা ভেবেছেন তিনি। যদিও সেই প্রসঙ্গে উড়িয়ে দেব জানিয়েছেন, “সিরাজ আমি করছি না। বাকিটা আমি আর জানি না।” দেবের এই পোস্টের কমেন্ট সেকশনে হাসি-মাখানো কান্না এবং হাততালি-র ইমোটিকন জুড়ে দেন বিরসা।
এতো গেলো দূরে দূরে থেকে গোলাগুলি ছোড়া। কিন্তু এর মধ্যেও নাকি আবার অন্য গল্প আছে। নিন্দুকদের ফিসফাস দেব সৃজিতের এই ঝগড়া আর বিরসার দূরে দাঁড়িয়ে মিচকি হাসি আসলে কিছুই না। দুজনের ব্যোমকেশকেই খবরে ভাসিয়ে রাখার কৌশল। যত বেশি ঝামেলা, তত বেশি ডিজিটাল মিডিয়ায় পোস্ট, কমেন্টস, পাল্টা কমেন্টস। তত বেশি লোকমুখে আলোচনা। হাজার হোক সেটাই তো প্রচার। বিনা পয়সায় যদি এতো ভালো প্রচার পাওয়া যায় তবে তা ছাড়ে কে?