আজ বিশ্ব এইডস দিবস। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বহু তারকার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই এইডস রোগ অর্থাৎ এইচআইভি পজিটিভ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) র মত অনুযায়ী যিনি এই ভুগছেন তিনি হয়তো নিজেও জানতে পারেন না এই মারণ রোগ তাকে আক্রান্ত করেছে। এটা স্বীকার করে নেওয়া ভালো যে এখনো এইচআইভি পজিটিভ এর সঙ্গে লড়াই করাটা আমাদের কাছে খুব একটা সহজ কাজ নয়। এই মারুন ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জেতাটা সত্যিই খুব কঠিন কাজ। সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষেরই মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই চিকিৎসা শুরু হতে বেশ খানিকটা দেরি হয়ে যায়। অনেকেই প্রথম অবস্থায় লজ্জায় চেপে রাখেন এই রোগের কথা। আমজনতা থেকে শুরু করে বহু সেলিব্রিটি প্রাণ হারিয়েছে এই রোগে। প্রখ্যাত ব্রিটিশ ‘কুইন’ রক ব্যান্ড এর গায়ক ফ্রেডি মারকিউরির কথা সকলেই জানেন। খুবই জনপ্রিয় গায়ক ছিলেন তিনি। তাঁর গান এখনো অমর হয়ে আছে। তার মৃত্যু হয়েছিল ব্রংকোনিউমোনিয়ায়। আর এই অসুখের কারণে ছিল এইডস। ক্রীড়া জগতের অন্যতম তারকা টেনিস খেলোয়াড় আর্থার অ্যাশের হার্টের অস্ত্রপচারের সময় কোনভাবে তার শরীরে এইডসের ভাইরাস প্রবেশ করে। তার ফলে ১৯৯২ সালে তিনি প্রয়াত হন। তিনিই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ যিনি উইম্বলডনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয় খেতাব জিতেছিলেন। এছাড়াও পৃথিবীর প্রথম সুপার মডেল মার্কিন দেশের গিয়া কারাঙ্গির মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে এইডস আক্রান্ত হয়েছিলেন। নিয়মিত হেরোইন নিতেন বলে নাকি ড্রাগের সিরিঞ্জের মাধ্যমে তার শরীরে এই রোগ প্রবেশ করেছিল। প্রথম অবস্থায় কিছুটা অস্বস্তি জন্য লুকিয়ে রেখেছিলেন এই রোগের কথা জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা ব্রাড ডেভিস। কারণ হলিউড থেকে ব্ল্যাকলিস্টেড হওয়ার আশঙ্কা ছিল তার। অবশেষে ১৯৯১ সালে তার মৃত্যু হয়। এই ব্রান্ড ডেভিসের সঙ্গে ডেটিং করতেন টিমোথি মারফি। পরবর্তীকালে তার শরীর এইডস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি মারা যান। শুধু বিদেশীরা নয় এক ভারতীয় অভিনেত্রীও এই মারণ রোগে প্রাণ হারিয়েছিলেন। দক্ষিণী এই অভিনেত্রীর নাম নিশা নুর।

শোনা যায় রাজনিকান্ত,কামাল হাসানের মতো অভিনেতারা তাঁর সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। প্রযোজকরা তাঁকে নাকি জোর করে দেহব্যবসায় নামিয়েছিলেন। যার ফলে তিনি এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রচণ্ড অর্থকষ্টে এইডসে মৃত্যু হয় আশির দশকের এই লাস্যময়ী সুন্দরী অভিনেত্রীর। মূলত তামিল এবং মালায়ালাম ছবিতেই তিনি অভিনয় করতেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় নায়িকা। বহু হিট ছবিতে তিনি নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সেসময়ের নামজাদা সমস্ত পরিচালকের সঙ্গে তিনি কাজ করেছিলেন। কিন্তু রুপোলি পর্দার সেই নায়িকার জীবন শেষ হয়েছিল হতাশার মধ্যে দিয়ে। প্রচন্ড অর্থকষ্টে কেটেছিল তার জীবনের শেষ দিনগুলো। রাস্তায় কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। গায়ে পোকা-মাছি বসে থাকতো। অবশেষে এইডস-এ তাঁর মৃত্যু হয়।
