আমির খান-কিরণ রাও বিবাহ বিচ্ছেদ এখন প্রায় জাতীয় আলোচনার বিষয়বস্তু। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিবাহ বিচ্ছেদ এখন ‘বার্নিং ইসু’।বিগত কয়েক দিন ধরে এ খবর সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে। প্রশ্ন উঠেছে অনেক। তবে কি মিস্টার পারফেকশনিস্ট পেশাগত কাজে যতটা নির্ভুল ব্যক্তিগত জীবনে অতোটা পারফেক্ট নয়! শোনা যাচ্ছে তাদের এই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নয়। বহুদিনের পরিকল্পনা। তারা মিউচুয়ালি আলাদা থাকতে চান। আবার শোনা যাচ্ছে বয়সে অনেক ছোট বলিউড অভিনেত্রী ফাতিমা সানা শেখ নাকি তাদের দুজনের মধ্যে প্রাচীর গড়ে তুলেছে। এমন নয় যে আমির-কিরণ একে অপরের মুখ দেখবেন না; কোনও পারস্পরিক সম্পর্ক থাকবে না। সে কথা তো ঠিকই। এই মুহূর্তে চলছে আমির খান অভিনীত ‘লাল সিং চাড্ডা’র শুটিং। আর এই ছবির সহকারি প্রযোজক তো কিরণ রাও। কাজেই ব্যক্তিগত সম্পর্ক না থাকার তো কোনো কারণ নেই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আমির-কিরণ বিচ্ছেদের পর বলিউডের অন্যান্য বিগ-স্টার বিচ্ছেদের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তার মধ্যে অবশ্যই আমিরের প্রথম বিয়ে। অর্থাৎ আমির খান-রিনা দত্ত সবচেয়ে আলোচ্য বিষয়। ১৯৮৬ সালে একরকম পরিবারের অমতে রিনা দত্ত কে বিয়ে করেছিলেন আমির খান। কারণ রিনা ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী আর আমির মুসলিম। সে সময় আমিরের বয়স ছিল ২১ আর রিনার ১৯। এই দম্পতির জুনায়েদ ও ইরা নামের পুত্রকন্যা রয়েছে। ২০০২ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এই বিচ্ছেদে আমিরকে মোটা অঙ্কের অর্থ গুনতে হয়েছিল। জানা যায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা রিনাকে দিয়েছিলেন আমির। এবার কিছু খোরপোষ দিতে না হলেও আমিরের দ্বিতীয় ইনিংসও কিরণের সঙ্গে খুব সুখের হলো না। লাগানো ছবি সেটে তাদের পরিচয় হয়েছিল। রিনার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর আমির মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেটে ইরানের সঙ্গে আমির ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলতেন। এক সময় বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় এক বছর লিভ টুগেদার করার পর। ২০০৫ সালে তাদের বিয়ে হয়।
এরপর আরেক সুপারস্টার হৃত্বিক রোশন ও সুজান খান বিয়ে করেছিলেন ২০০০ মালে। তাদের দুই সন্তান । হৃহান ও হৃদান। কিন্তু ২০১৩সালে তাদের চলার পথে ছন্দপতন ঘটে। তারা আলাদা থাকতে শুরু করে। ২০১৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ভাবতে পারেন বিবাহ বিচ্ছেদের সময় প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা খোরপোষ হিসেবে দাবী করেছিলেন সুজান। তার অনেকটাই গুনতে হয়েছিল হৃত্বিককে।
নবাব পুত্র সইফ আলি খান প্রেমে মজেছিলেন অভিনেত্রী অমৃতা সিংয়ের। বয়সে আমেরিকা ১৩ বছরের বড় হওয়া সত্ত্বেও কোন তোয়াক্কা করেননি সইফ। ১৯৯১ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এই জুটি। সংসার আলো করে আসে দুই সন্তান। যাদের একজন বলিউড স্টার সারা আলি খান। পরে ২০০০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে সইফ-অমৃতার। সে সময় এক সাক্ষাৎকারে চাই নিজেই জানিয়েছিলেন যে অমৃতাকে তিনি পাঁচ কোটি টাকা খোরপোষ দিয়েছেন।
১৯৯৮ সালে রিয়া পিল্ল আলীর সঙ্গে দ্বিতীয়বারের জন্য বিয়ের পিঁড়িতে বসেন সঞ্জয় দত্ত। সে সময় মুম্বাই বোমা হামলায় জড়িত থাকায় জেল খাটতে হয়েছিল সঞ্জুবাবাকে। তারপর রিয়ার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় সঞ্জুর। পড়ে কারণ হিসেবে জানা যায় সঞ্জয়ের ‘কান্তি’ ছবির সহ অভিনেত্রী নাদিয়া দুয়ারির সঙ্গে অভিনেতার সম্পর্কের কথা। বিচ্ছেদের পর সঞ্জু রিয়াকে মুম্বাইয়ের সমুদ্রসৈকতে একটি বিলাসবহুল বাংলা একটি মূল্যবান গাড়ি দিয়ে দেন। এছাড়াও নাকি ৫কোটি টাকা দিতে হয়েছিল সঞ্জুকে।
অমিতাভ পুত্র অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের বাগদান সম্পন্ন হলেও চার মাসের মধ্যে সে সম্পর্ক ভেঙে যায়। ২০০৩ সালে মায়ের পছন্দে দিল্লির বিখ্যাত ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে বিহার করিশমার। কিন্তু সে বিয়ে টেকেনি শেষ পর্যন্ত। ২০১৪ সালে তারা বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেন। প্রায় দু বছর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলার পর আইন অনুযায়ী বিচ্ছেদ হয় তাদের। খারে অবস্থিত সঞ্জয়ের বাবার বাড়ি এবং তাদের দুই সন্তানের জন্য ১২কোটি টাকার বন্ড কিনে দিয়েছিলেন সঞ্জয়।
‘দিল চাহতা হ্যায়’ ছবির লিড হেয়ার স্টাইলিস্ট অধুনা ভবানী কে দেখে ভাল লেগে গিয়েছিল ফারহান আখতারের। এরপর শুরু হয় তাদের প্রেম। ২০০০ সালে তারা চার হাত এক করার পরিকল্পনা করেন। তারপর ঘর আলো করে জন্ম নেয় শাক্য ও আকিরা নামে দুই কন্যা সন্তান। কিন্তু তাদের সংসার ভেঙে যায় ২০১৬ সালে। বিচ্ছেদের পর মুম্বাইয়ের বাংলো নিজের অধীনে রাখার দাবি করেছিলেন অধুনা। পরে অবশ্য মুম্বইয়ের ব্যান্ড স্ট্যান্ড এ দশ হাজার স্কোয়ার ফিটের একটি বাড়ি দিতে হয়েছিল ফারহানকে। এছাড়াও ফারহান তার মেয়েদের জন্য প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের টাকা পাঠান।
বৈবাহিক জীবন কাটানোর পর বিচ্ছেদ এবং প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে ব্যাপক অর্থ লাভ প্রায় প্রতিটি সেলিব্রিটির জীবনে দেখা গেলেও আমির-কিরণ কিন্তু ব্যতিক্রম।
আমির-কিরণ কি সত্যি আলাদা?
Follow Us :