ওয়াশিংটন: একের পর এক বোমা বিস্ফোরণের হুমকি। যার ফলে মঙ্গলবার আমেরিকায় বন্ধ থাকল প্রায় ১২টি কৃষ্ণাঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক দিন ধরেই এই বিস্ফোরণের হুমকি আসছিল কৃষ্ণাঙ্গদের ওই সব প্রতিষ্ঠানে। এর জেরে মঙ্গলবার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ রাখা হয়। তারপরেও হুমকি আসা বন্ধ হয়নি। বুধবারও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ফোন আসে।
শুধুমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ কলেজগুলিতে একের পর এক বিস্ফোরণের হুমকি আসার বিষয়টিকে হালকা ভাবে নিচ্ছেন না ফ্লোরিডার জ্যাকসনভিলার এডওয়ার্ড ওয়াটার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র প্রেসিডেন্ট এ.হ্যাচারি ফাইসন। তাঁর মতে, এই হুমকির পিছনে নিশ্চয়ই কিছু বদ মতলব আছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ জ্যাকসনভিলার এক শেরিফের কাছে কোনও এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, ওয়াটার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বেশ কিছু বোমা রাখা আছে। আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে সেগুলি ফাটবে। বিস্ফোরণের পর কলেজে গুলিও চলবে বলে জানায় সেই ব্যক্তি।
সেদিন দুপুরে ক্যাম্পাস চত্বরে বোমার খোঁজে কুকুর নিয়ে টহল দেয় পুলিস। বোমা রাখার বিষয়টি নিয়ে জ্যাকসনভিলার পুলিস কিছু জানায়নি। এরই মধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এফবিআই। তারা স্থানীয় পুলিসের সঙ্গে যৌথ ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ওই দিন ২টো ৫৫ মিনিট নাগাদ বোমা বিস্ফোরণের হুমকি-ফোন পায় ওয়াশিংটনের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও। এর পরই পুরো ক্যাম্পাস দ্রুত খালি করে দেওয়া হয়।
ওয়াটার্স এবং হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও মেরিল্যান্ডের মর্গ্যান স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, জর্জিয়ার স্পেলম্যান কলেজ এবং লুইসিয়ানার জেভিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ধরনের হুমকি-ফোন আসে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’ কিন্তু কী কারণে এই হুমকি, সে সম্পর্কে সঠিক করে কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউস।
মাস কয়েক আগে কিছু চরমপন্থী শ্বেতাঙ্গ গোষ্ঠীর হুমকি নিয়ে আগাম সতর্ক করেছিল এক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা। তারা জানায়, ওই গোষ্ঠীর সদস্যরা কৃষ্ণাঙ্গদের উপর মারণ-হামলা চালানোর চেষ্টা করবে।
আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছেন বহু কৃষ্ণাজ্ঞ নাগরিক। হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক লোপেজ ম্যাথুস বলেন, ‘জাতির সমস্যা, নাগরিক অধিকারের সমস্যা এবং সমতার অভাব প্রকট হওয়ার কারণে কৃষ্ণাঙ্গ কলেজগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করছে এক শ্রেণির মানুষ।’ তিনি আরও জানান, ১৯১৯ সালে ওয়াশিংটনে দাঙ্গার সময় বর্ণবাদী হামলাকারীদের হুমকির মুখে পড়েছিল হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এর পর ১৯৬০ সালে মার্কিন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সময় ফের হামলার মুখে পড়েছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়।