নয়াদিল্লি: আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তারপরেই সম্ভবত দ্বিতীয়বারের জন্য কর্নাটকের কুর্সিতে বসতে চলেছেন সিদ্দারামাইয়া। প্রবীণ ও অভিজ্ঞতার নিরিখে ছাড়াও দলের অধিকাংশ বিধায়কের সমর্থন তাঁর দিকে রয়েছে। সেই কারণে দলের হাইকমান্ড তাঁকেই সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রী করতে চলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কন্নড়-বিজয়ের অন্যতম কারিগর ডিকে শিবকুমারের দিকে বিধায়কদের তেমন একটা সমর্থন নেই। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগের খাঁড়া ঝুলে রয়েছে। অঢেল ধনসম্পত্তির মালিক শিবকুমারের বিরুদ্ধে ইডি মামলা ছাড়াও এক পুলিশ অফিসারকে বড় পদে উন্নীত করায় অভিযুক্ত তিনি। এসব বিচার করে ডিকেএসকে ফের একবার শূন্য হাতেই ফিরতে হতে পারে নয়াদিল্লি থেকে।
আজ, সোমবারই নয়াদিল্লিতে বসতে চলেছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক। বেঙ্গালুরু থেকে সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার সেই বৈঠকে যোগ দেবেন। সিদ্দারামাইয়া প্রস্তাব দিয়েছেন ভাগের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার। অর্থাৎ তাঁর ইচ্ছে তিনি ২ বছর এবং শিবকুমারকে ৩ বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করা হোক। কিন্তু, শিবকুমার সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক দোটানায় রয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড।
আরও পড়ুন: Weather Breaking | ৬ দিন ধরে ভিজবে বাংলা! ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা জারি করল হাওয়া অফিস
দাক্ষিণাত্য জয়ের পরেও কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে গলায় কাঁটা বিঁধে রয়েছে কংগ্রেসের। বেঙ্গালুরুতে রবিবার রাত দেড়টা পর্যন্ত চলা বৈঠকেও ফয়সালা না হওয়ায় আজ, সোমবার রাজ্যের দুই শীর্ষ নেতা ডিকে শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়াকে ডাকা হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মেনে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। এদিন দুপুরের মধ্যেই শিবকুমার ও সিদ্দারামাইয়া পৌঁছে যাবেন দিল্লিতে।
তবে মুখ্যমন্ত্রী মুখ বাছাই করতে কংগ্রেসকে অনেকগুলি সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক কষতে হবে। কারণ কর্নাটকের প্রধান দুই সম্প্রদায় ভোক্কালিগা এবং লিঙ্গায়তরা কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করার ব্যাপারে একমত। আবার অন্যদিকে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার পিছনে প্রায় শ’খানেক বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। এই অবস্থায় শ্যাম ও কুল রাখা দায় হয়ে উঠেছে দলীয় নেতৃত্বের।
দলের প্রবীণ নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা, কেসি বেণুগোপাল এবং তিন অবজার্ভাররাও এদিন দিল্লিতে চলে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে ভোক্কালিগা সম্প্রদায় তাদের শীর্ষ নেতা ডিকেএসকে সমর্থন জানিয়ে রেখেছে। রাজ্যে লিঙ্গায়তভুক্তদের পরেই ভোক্কালিগারাই জনসংখ্যায় বেশি। কিন্তু, বিস্ময়করভাবে ডিকেএস লিঙ্গায়তদেরও সমর্থন পাচ্ছেন। ফলে এই দুই সম্প্রদায়ের পছন্দের ব্যক্তিকে এককথায় দূরে ঠেলে দেওয়া সহজ হবে না কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, হেভিওয়েট নেতা সিদ্দারামাইয়া শিবিরে প্রায় ১০০ জন বিধায়ক রয়েছেন। সেই হিসেব দলনেতা নির্বাচনে তিনি অঙ্কের হিসেবে অনেকটাই এগিয়ে। অবজার্ভারদের সেকথা জানিয়ে দেওয়াও হয়েছে। দিল্লির নেতৃত্ব সিদ্দারামাইয়াকে ফোন করে জানিয়েছে, চার বছরের বিজেপির অপশাসনের সমস্যা মেটাতে আপনার মতো অভিজ্ঞ ব্যক্তিকেই এসময়ে প্রয়োজন।