নয়াদিল্লি: কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) ‘মিরজাফর’ (Mir Jafar) বলল বিজেপি (BJP)। লন্ডনে (London) গিয়ে রাহুলের বিজেপি-বিরোধী মন্তব্যকে ভারত-বিরোধী বক্তব্য বলে দিনের পর দিন সংসদ অচল করে দেওয়া কেন্দ্রের শাসকদল এবার ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু করল। মঙ্গলবার বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ব্রিটেনে গিয়ে রাহুল যা বলেছেন, তার জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতেই হবে। ভারতের রাজনীতিতে রাহুল এযুগের মিরজাফর।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে সম্বিত পাত্র বলেন, রাহুল দেশের অপমান করেছেন। তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে। উনি একালের মিরজাফর। উনি শুধু দেশকেই অপমান করেননি, বিদেশি শক্তিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার দাবি করেছেন। কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীর এটা একটা ষড়যন্ত্র। লোকসভায় খুব কম দিনই রাহুল হাজির থাকেন এবং তিনি বলে বেড়াচ্ছেন কেউ তাঁকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মন্তব্য সম্বিতের।
ফের একবার রাহুলকে মিরজাফর সম্বোধন করে সম্বিত বলেন, মিরজাফরও একই কাজ করেছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহায্য পেতে ২৪ পরগনাকে তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এখন রাহুল গান্ধীও সেই একই ধরনের রাজনীতি করছেন। উনি ভারতের ‘শাহজাদা’ (Sahzada) হওয়ার জন্য বিদেশি দেশগুলির সাহায্য ভিক্ষা করছেন।
সংসদীয় (Parliament) বিতর্কে রাহুল গান্ধীর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে সম্বিত বলেন, গণতন্ত্রের আত্মা হল আলোচনা। কিন্তু, রাহুল গান্ধী ২০১৯ সাল থেকে মাত্র ৬ বার হাজির ছিলেন সংসদে। তিনি বিতর্কেও অংশ নেননি। বিদেশ থেকে ফেরার পর এক প্রশ্নের জবাবে রাহুল বলেছিলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি একজন সাংসদ। তাঁর এই কথাকে হাতিয়ার করে বিজেপি নেতা বলেন, উনি জানেনই না কী বলতে হয়। দলের জয়রাম রমেশের শেখানো বুলিতে কথা বলেন। কিন্তু, এবার নিজে থেকে ওই কথা বলে ফেলেছেন রাহুল।
এদিকে, রাহুলের মন্তব্যকে ঘিরে এদিনও সংসদে ধুমধাড়াক্কা হট্টগোল বাধে। একদিকে আদানি ইস্যু, অন্যদিকে রাহুলের ক্ষমার দাবিতে সভা দিনের মতো মুলতুবি করে দিতে হয়। আগামী বৃহস্পতিবার ফের সংসদ বসবে।
প্রসঙ্গত, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রাহুল বলেছিলেন, ভারতে গণতন্ত্র এখন বিপন্ন। এই কথাতেই চটেছেন বিজেপির সাংসদরা। তাঁদের দাবি, বিদেশের মাটিতে বসে ভারতের অপমান করেছেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ। এই নিয়ে হইচই করে প্রায় রোজই সংসদের দুই কক্ষ অচল করে দিচ্ছে বিজেপি। সংসদের অধিবেশন শাসকদলের প্রতিনিধিরা বানচাল করছেন, এ দৃশ্য অবশ্য বিরল। যাই হোক, রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে চিৎকার জুড়ছেন বিজেপি সাংসদরা। সেই দাবি উড়িয়ে কংগ্রেস পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছে, যারা গণতন্ত্র চুরমার করছে, তারাই আবার তা বাঁচানোর বুলি ঝাড়ছে।