কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: গার্ডেনরিচের (ED Raid Gardenreach) এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে মিলল কোটি কোটি টাকা। শনিবার সেই টাকার পাহাড়ের হদিস মিলল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের তল্লাশিতে। যদিও এক বছর আগেই এই হিমশৈলের চূড়ার আঁচ পেতে পারত কলকাতা পুলিশ। কিন্তু কার্যত সমন্বয়ের অভাবে মহানগরীর বুকে বছর খানেক অবাধে চলল অনলাইন গেমে বড়সড় প্রতারণা চক্র। শেষরক্ষা অবশ্য হল না। কিন্তু যে কৃতিত্ব দাবি করতে পারত কলকাতা পুলিশ, বাস্তবে সেই কৃতিত্বের দাবিদার হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।
শনিবার দিনভর তল্লাশি চলল গার্ডেনরীচের বিন্দুবাসিনী লেনের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে। উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা। ইডি জানিয়েছে, অনলাইন গেমের মাধ্যমে বড়সড় প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল তাঁর ছেলে আমির খান। সেই ফাঁদে পা দিয়ে এক দিকে যেমন লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে বহু মানুষ, তেমনই টাকার পাহাড় বেড়েছে আমির খানের বাড়িতে। অথচ, এক বছর আগেই এই প্রতারণার আঁচ পেয়েছিল পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। এ দিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট জানিয়েছে, আমির খান ও অন্যদের নামে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট থানায় অনলাইন প্রতারণার এফআইআর দায়ের করেছিল ফেডারেল ব্যাঙ্ক। অভিযোগ, পার্ক স্ট্রিট থানা সেই এফআইআর ফেলে রাখায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সূত্রের খবর, ফেডারেল ব্যাঘ্রের পার্ক স্ট্রিট শাখায় ৫টি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল আমির। আচমকাই সেই সব অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা ঢুকতে থাকায় নড়েচড়ে বসেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।সব মিলিয়ে ৪৭ কোটি টাকা আমিরের অ্যাকাউন্টে জমা পড়ায় সেই তথা পার্ক স্ট্রিট থানাকে জানায় ফেডারেল ব্যাঙ্ক।
লালবাজারের অভিজ্ঞ পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, শহরের থানাগুলিতে সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হলে সঙ্গে সঙ্গে তা কলকাতা পুলিশের সাইবার থানায় জানানোই দস্তুর। যেহেতু থানাগুলির কাছে অনলাইন সংক্রান্ত তদন্তের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই তাই লালবাজারের সাইবার থানার হাতেই তার তদন্তভার ন্যস্ত করে কলকাতার থানাগুলি। কিন্তু ফেডারেল ব্যাঙ্কের অভিযোগ কেন পার্ক স্ট্রিট থানা থেকে লালবাজারে পৌঁছল না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, আদালতের হস্তক্ষেপ সত্বেও কেন পার্ক স্ট্রিট থানা নিজের হাতে তদন্তভার রাখল ? কেন লালবাজারে পাঠানো হল না ? এখানেও সেই সমন্বয়ের অভাবই দেখছেন অভিজ্ঞ পুলিশকর্তারা। বর্তমান যুগে অনলাইন অথবা বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ দেওয়া-নেওয়া নিয়ে যেখানে বারবার সতর্ক করছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক, সেখানে পার্ক স্ট্রিট থানার এ হেন আচরণ অবাকই করেছে ওই পুলিশকর্তাদের। বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডে পুলিশে সমন্বয়ের অভাব নিয়ে দু’দিন আগেই প্রশাসনিক বৈঠকে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত, সেই সম্বনয়ের অভাবই দেখা গেল কলকাতা পুলিশেও।