নয়াদিল্লি: ভোট দেওয়ার বয়স (Voting Age) এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ন্যূনতম (Minimum Age for Contesting in Election) বয়সে সমতা আনার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন (Election Commission – EC) সংসদীয় প্যানেল (Parliamentary Panel)-কে এটাও জানিয়েছে, তারা ইলেক্ট্রিক ভোটিং মেশিন (Electronic Voting Machine – EVM)-এর একটি বিশ্বাসযোগ্য এবং সংশোধিত সংস্করণ (Credible and Modified Version) তৈরি করেছে। সূত্রের খবর, চলতি মাসেই দেশের সবকটি রাজনৈতিক দলের (All Politicial Parties) প্রতিনিধিদের সামনে বিজ্ঞান ভবনে (Vigyan Bhavan) নতুন এই ইভিএমের প্রেজেন্টেশন (EVM Presentation) দিতে চায় নির্বাচন কমিশন।
এবিষয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, গত সোমবার কর্মী, জনসাধারণের অভিযোগ, আইন ও বিচার (Personnel, Public Grievances, Law and Justice) সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি (Standing Committee)-র সামনে উপস্থিত হয়ে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, লোকসভা (Lok Sabha), বিধানসভা (Legislative Assemblies), রাজ্যসভা (Rajya Sabha) এবং রাজ্যের বিধানসভার উচ্চকক্ষে (Upper Houses of the State Assemblies) যাওয়ার জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা হিসেবে ন্যূনতম বয়সসীমা কমানোর পক্ষে নয় দেশের নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: Kamarhati Explosion: ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কামারহাটি, আহত দু’জন
সংসদীয় প্যানেল নির্বাচন কমিশনকে লোকসভা ও বিধাসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বয়স ২৫ থেকে কমিয়ে ২১ করতে বলেছিল এবং উচ্চকক্ষে যাওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা ৩০ থেকে কমিয়ে ২৫ করার পরামর্শ দিয়েছল। নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো প্রস্তাবে ১৯৯৮ সালে পোল প্যানেলকে (Poll Panel) দেওয়া সংশোধনী প্রস্তাবের কিছু অংশও রয়েছে।
কমিশনের আধিকারিকরা সংসদীয় প্যানেলকে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। গণপরিষদের সামনে আগেও এরকম প্রস্তাব এসেছিল, কিন্তু বি আর আম্বেদকর (B R Ambedkar) এই ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতায় একটি নতুন অনুচ্ছেদ যুক্ত করেছিলেন, বর্তমানে সেটি ভারতীয় সংবিধানে ধারা ৮৪ (Article 84, Indian Constitution) হিসেবে পরিচিত। ভারতীয় সংবিধানের প্রণেতা বাবা সাহেব আম্বেদকরের প্রস্তাব ছিল, যাঁদের কাছে কিছু উচ্চ যোগ্যতা ও জ্ঞান রয়েছে এবং বৈশ্বিক বিষয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাঁদের আইনসভায় যাওয়া উচিত। পোল প্যানেলের ধারণা ছিল, আইনসভাগুলির হাতে দায়িত্বপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেওয়া হয়েছে। দেশের জন্য নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়নের পাশাপাশি আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়েছ।
আরও পড়ুন: Bengaluru: বেঙ্গালুরুতে মেট্রোর পিলার ভেঙে মা-ছেলের মৃত্যু, জখম বাবা-মেয়ে
তবে প্যানেলের পক্ষ থেকে সদস্যদের জানানো হয়েছে, নির্বাচনের জন্য রিমোট ভোটিং (Remote Voting) সংক্রান্ত বিভিন্ন বিকল্পের বিষয়ে তারা ভাবনাচিন্তা করছেন। নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা সাংসদদের (Ministers of Parliament) সামনে বক্তব্য রেখেছেন, ইভিএমের পরিবর্তিত সংস্করণ (Modified Version of EVM) তৈরি করা হয়েছে, তবে প্রযুক্তি সমস্যা ছাড়াও নানারকম বিশ্লেষণ চলছে। মেশিনটির আইনি ভিত্তি, ভোটার তালিকা সম্পর্কিত বিষয়, প্রশাসনিক সমস্যা, প্রযুক্তি, সময় এবং দূরবর্তী ভোটের পদ্ধতি ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
আগামী ১৬ জানুয়ারি বিজ্ঞান ভবনে কমিশন নতুন ইভিএম নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেবে দেশের সব রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিতে। ওই দিনই একই প্রেজেন্টেশন স্ট্যান্ডিং কমিশনের সামনেও দেওয়া হবে। ভোটারদের সক্রিয় যোগদান বাড়াতে গত ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় ও রাজ্যস্তরের সকল দলগুলিকে চিঠি লিখেছিল রিমোট ভোটিং মেশিন (Remote Voting Machine – RVM) নিয়ে। মেশিনটি ইলেক্ট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (Electronics Corporation of India Ltd – ECIL) তৈরি করেছে। সংশ্লিষ্ট স্থানে মেশিনটি রাখা এবং ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে না। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ রিমোট পোলিং স্টেশনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসার (Returning Officer) মারফৎ রেজিস্টার (Register) করার পর পরিযায়ী ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন। এক একটি আরভিএম ৭২টি নির্বাচনী এলাকা ভোটগ্রহণ করতে সক্ষম হবে। কিন্তু, আরভিএম নিয়ে প্যানেলের সামনে অন্যতম যে সমস্যাটা এসেছে, তা হল নির্বাচনী ফটো পরিচয়পত্রের (Electoral Photo Identity Card) সঙ্গে আধার (Aadhaar) লিঙ্ক করার সম্ভাব্যতা, এই নিয়ে কিছুদিন ধরে কাজ চলছে।