নিউ ইয়র্ক: সম্প্রতি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সম্পন্ন চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির (AI ChatBot – ChatGPT) চতুর্থ সংস্করণ এসেছে। তার প্রখর বুদ্ধিমত্তা (Super Intelligence) নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে এখন। এরই মাঝে খবর, চ্যাটজিপিটির চেয়েও আরও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ডিজিটাল প্রোডাক্ট (Digital Product) তৈরির কাজ চলছে। চ্যাটজিপিটি এই ক’মাসে যা আয়ত্ত করেছে, সেইসব তো ওই ডিজিটাল প্রোডাক্ট জানবেই, তার পাশাপাশি সে নিজেও আরও অনেক কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। ওয়াকিবহল মহল মনে করছে, নতুন এই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) এতটাই শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর হবে, যা আগামী দিনে সমাজ ও মানব সভ্যতার (Society and Humanity) বিপদ ডেকে আনবে।
আরও পড়ুন: SCO Meet | দোভালের ত্রিফলা আক্রমণ চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়াকে
মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্ক এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞদের একটি দল এই নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে, একটি খোলা চিঠি অর্থাৎ ওপেন লেটার (Open Letter) দিয়েছেন তাঁরা। ওই চিঠিতে নাম হয়েছে শিল্প বিশেষজ্ঞরাও। ফিউচার অব লাইফ ইনস্টিটিউট (Future of Life Institute – FLI)। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা (Non-profit Organization)। সংশ্লিষ্ট সংস্থা, সংস্থার কর্ণধার এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে দেওয়া এই খোলা চিঠিতে ১,০০০ জনেরও বেশি ব্যক্তি স্বাক্ষর করেছেন। সই করেছেন টুইটার ও টেসলা কর্ণধার এলন মাস্ক (Twitter and Tesla Owner Elon Musk), অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক (Apple co-founder Steve Wozniak) এবং স্ট্যাবিলিটি এআই সিইও এমাদ মোস্তাক (Stability AI CEO Emad Mostaque)।
খোলা চিঠিতে তাঁদের বার্তা, প্রখর বুদ্ধি-সম্পন্ন (Super Intelligent) যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসছে আগামী দিনে, তাকে যে প্রশিক্ষণ (Training) দেওয়ার কাজ চলছে, তা যেন আগামী ছ’মাস বন্ধ রাখা হয়। তাঁদের দাবি, এই ধরনের অ্যাডভান্সড এআই ডেভেলপমেন্টের সুরক্ষা নীতি বা সেফটি প্রোটোকল (Safety protocol) যতদিন না শেয়ার করা হচ্ছে, ততদিন যেন তা বন্ধ রাখা হয়। তাঁদের আরও দাবি, এই সেফটি প্রোটোকল তৈরি করলেন স্বস্তন্ত্র বিশেষজ্ঞরা (Independent Experts)।
চিঠিতে বলা হয়েছে, “পাওয়ারফুল এআই সিস্টেম (Powerful AI System) তখনই বিকাশ করা উচিত, যখন আমরা নিশ্চিত হব যে তার প্রভাব ইতিবাচক (Positive Effect) হবে এবং তার ঝুঁকি পরিচালনাযোগ্য (Manageable) হবে।” চিঠিতে এটাও উল্লেখ রয়েছে, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতাও (Economic and Political Disruptions) সৃষ্টি করতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সেই সম্ভাবনাও রয়েছে। চিঠিতে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ, এআই ডেভেলপাররা যেন সরকারের আইনপ্রণেতা (Policymakers) এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের (Regulatory Authorities) সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুলিশ বাহিনী ইউরোপোল (EU Police Force – Europol) চ্যাটজিপিটির মতো অ্যাডভান্সড আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Advanced Artificial Intelligence) প্রসঙ্গে নৈতিক ও আইনি উদ্বেগ (Ethical and Legal Concerns) প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি ফিশিং (Phishing), বিভ্রান্ত করা (Disinformation) এবং সাইবার অপরাধের (Cyber Crime) ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রযুক্তির অপব্যবহার প্রসঙ্গেও চিন্তা ব্যক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের শেষ দিকে ওপেনএআই সংস্থার তৈরি চ্যাটজিপিটি আত্মপ্রকাশ করেছে। তারপর থেকে সুপারহিট এই চ্যাটবট। মাইক্রোসফটের (Microsoft) সঙ্গে ওপেনএআই সংস্থার গাঁটছড়া ২০১৯ সাল থেকে। এবছর শুরুর দিকে মাইক্রোসফট অর্থ বিনিয়োগ করেছে চ্যাটজিপিটিকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য। এরপর গুগল এবং আরও অনেক সংস্থা তাদের নিজস্ব প্রোডাক্ট লঞ্চ করেছে। দুনিয়া জুড়ে যেভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রেশারেশি ও লড়াই শুরু হয়েছে, তা নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞ মহল।