মঞ্চে প্রধান বিচারপতি থেকে শুরু করে রাজ্যের আইনমন্ত্রী-মুখ্যসচিব। এমন এক মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “বিচার কখনও এক পক্ষ হয় না, নিরপেক্ষ হয়।” একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের প্রতি তাঁর বার্তা ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ করবেন না। এ বিষয়ে আদালতকেই নজর দিতে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। আইনজীবীদির এক অনুষ্ঠানে এ দিন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী অনেকটা ক্ষোভের সুরেই বলেন, অনেক মামলা বছরের পর পর ঝুলে রয়েছে। সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা উচিত। তাঁর আবেদন, বিচারকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে মহিলা বিচারকের সংখ্যাও।
আজ, ২৫ অগস্ট নব মহাকরণের একটি বড় অংশের দায়িত্ব কলকাতা হাই কোর্ট কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাই কোর্ট-সহ বেশ কয়েকটি আদালতের পরিবেশ ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে পড়েছিল। তাই আদালতের কাজের সুবিধার জন্য প্রায় ৫০ হাজার বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন ছিল। সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আদালতগুলির কিছু শাখাও সরানো জরুরি হয়ে পড়েছিল। সেই গুরুত্ব বিবেচনা করে নব মহাকরণের বড় অংশ রাজ্য সরকার আদালত কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত জুন মাসে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর। মনে করা হচ্ছে সেই বৈঠকেই নব মহাকরণে আদালতের বড় অংশ সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এ বিষয়ে বৈঠক করে দফতরগুলি সরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ দিন নব মহাকরণের ব্লক-বি-এর নবম তলায় হস্তান্তর সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আইন ব্যবস্থাকে নিরপেক্ষ হতে হবে। মিডিয়া ট্রায়ালের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, এই বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া উচিত বিচার ব্যবস্থার। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা নিজে আইন পাশ। সেই কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, আমার অনুমতি আছে। প্রয়োজনে মামলা লড়তে আদালতে আসতে পারি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, মানবাধিকার সংক্রান্ত মামলা নিয়ে আমি কোর্টে আসতেই পারি। আমার লাইসেন্স আছে।
বামফ্রন্ট জমানায় রাজ্য সরকারের প্রায় সমস্ত সরকারি দফতর বসত মহাকরণে। কিন্তু পরে কিছু দফতরের আধিকারিকদের জন্য স্থান পর্যাপ্ত না হওয়ায় সরকারি কাজে অসুবিধা হয়। সেই সমস্যার সমাধানের জন্য তৈরি করা হয়েছিল নব মহাকরণ বা নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং। সেখানে এক থেকে সাত তলা পর্যন্ত বসতেন কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রী, আধিকারিক ও কর্মীরা। কিন্তু আদালতের কাজের জন্য এ বার সরানো হল বেশ কিাছু দফতর। আবাসন, জনস্বাস্থ্য কারিগরির মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজারহাট নিউটাউনে। তবে শ্রম ও সমবায় দফতরের মতো বেশ কিছু দফতর নব মহাকরণ থেকেই পরিচালিত হবে বলে সূত্রের খবর। কারণ, এক থেকে ন’তলা পর্যন্ত আদালত কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হলেও, বাকি অংশ থাকবে রাজ্য সরকারের হাতেই।