মুম্বই: শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে দলের একটা বড় অংশের বিধায়ক হঠাৎ বিদ্রোহী হয়ে উঠতেই টলমল উদ্ধব ঠাকরের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি৷ বুধবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, বিদ্রোহীদের দাবি মেনে তিনি ইস্তফা দিতে তৈরি৷ কিন্তু বিক্ষুব্ধদের একজন কাউকে তাঁর সামনে এসে সেই দাবি পেশ করতে হবে৷ হিন্দুত্বের আদর্শ থেকে শিবসেনার বিচ্যুতি ঘটেনি বলে দাবি করে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘যতক্ষণ শিব সৈনিকরা পাশে আছে, ততক্ষণ আমার কোনও চিন্তা নেই৷’ শিন্ডেকে তাঁর চ্যালেঞ্জ, ভিনরাজ্য থেকে কেন, যা বলার সামনে এসে বলুন৷
মহা বিকাশ অগাড়ি সরকারে শিবসেনার ৪৪ জন বিধায়ক রয়েছে৷ তাদের মধ্যে ৩০ জনকে নিয়ে এই মুহূর্তে গুয়াহাটিতে রয়েছেন একনাথ শিন্ডে৷ ফলে সংকট তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্রে৷ যখন তখন সরকার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ তারপরই এদিন বিকাল পাঁচটায় দলের সব বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকে বসার ডাক দেন উদ্ধব৷ পরে ফেসবুক লাইভে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যদি একজন বিধায়কও আমাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে না চান তাহলে এই মুহূর্তে জিনিসপত্র নিয়ে আমি বর্ষা বাংলো (মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন) ছেড়ে মাতোশ্রীতে চলে যাব৷ আপনারা চাইলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে তৈরি৷ একজনও কারও আপত্তি থাকলে সরে যাব৷ এটা আমার কাছে খুবই লজ্জাজনক হবে যদিও একজনও কেউ আমার বিরুদ্ধে চলে যায়৷’
শিবসেনার বিরুদ্ধে হিন্দুত্বের লাইন থেকে সরে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন একনাথ শিন্ডে৷ সেই দাবি খারিজ করে দেন উদ্ধব৷ তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাণে রয়েছে হিন্দুত্ব৷ কে হিন্দুত্বের জন্য কী করেছে তা নিয়ে আলোচনা করার সময় এটা নয়৷ আমি সবসময় চেষ্টা করেছি বাল সাহেবের হিন্দুত্বকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার৷’ তবে দলের বিধায়করা এভাবে বিদ্রোহী হয়ে ওঠায় ব্যথিত হয়েছেন শিবসেনা সুপ্রিমো৷ আবেগঘন গলায় তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস ও এনসিপির আপত্তি থাকলে সেটা আলাদা বিষয়৷ কিন্তু নিজের লোকই আমাকে যদি না চায় তাহলে আর কী বলব? তবে আমার বদলে অন্য কোনও শিব সৈনিক মুখ্যমন্ত্রী হলে আমি খুব খুশি হব৷ ’
আরও পড়ুন: Maharashtra crisis: মহারাষ্ট্রে দুই পক্ষের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে, প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে পরিস্থিতি
ফেসবুক পোস্টেই উদ্ধব আরও বলেন, ‘২০১৯ সালে এনসিপি প্রধান আমাকে রাজ্যের দায়িত্ব নিতে বলেন৷ মূলত তাঁর অনুরোধেই আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে রাজি হই৷ কংগ্রেস নেতারাও আমাকে একই অনুরোধ করেছিলেন৷ এনসিপি এবং কংগ্রেসের কাছ থেকে আমি সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি৷ কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীও নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন৷ তবে করোনা পর্বে আমি মানুষের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ রাখতে পারিনি৷ আমার নিজেরও শরীর খুব অসুস্থ ছিল৷’
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এই মুহূর্তে উদ্ধব ইস্তফা দিচ্ছেন না৷ দলের অনেক নেতাই তাঁকে তাড়াহুড়ো করে কোনও হঠকারি সিদ্ধান্ত নিতে নিষেধ করেছেন৷ একই কথা বলেছেন শরদ পাওয়ার এবং কমন নাথও৷ ফেসবুক লাইভের পর শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন উদ্ধব ঠাকরে৷ সেখানে ছিলেন সুপ্রিয়া সুলে, জিতেন্দ্র ওয়াধ৷
