নয়াদিল্লি: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শরদ যাদব প্রয়াত (Sharad yadav Demise)। ৭৫ বছর বয়সে শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। ট্যুইট করে একথা জানিয়েছেন মেয়ে সুভাষিণী যাদব। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘বাবা আর নেই।’’ তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৪৭ সালের ১ জুলাই মধ্যপ্রদেশের বাবাই গ্রামে জন্ম শরদের। জবলপুর রবার্টসন কলেজ এবং গভর্নমেন্ট সায়েন্স কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা। জবলপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রিও নেন। কৃষিবিদ, শিক্ষাবিদ এবং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবেই পরিচয় দিতেন নিজের। তবে জন্মভূমি মধ্যপ্রদেশ হলেও, কর্মভূমি ছিল বিহার।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আরজেডি নেতা শরদ যাদবের রাজনৈতিক জীবন –
* সত্তরের দশকে জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে যে আন্দোলনের সাক্ষী ছিল ভারত, সেই আন্দোলনের হাত ধরেই উঠে এসেছিলে শরদ যাদব। ১৯৭৪ সালে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর থেকে লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিলেন। সেইসময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৭।
* ১৯৭৯ সালে জনতা পার্টি ভেঙে গেলে চরণ সিংহের শিবিরে চলে যান শরদ যাদব। ১৯৮১ সালে অমেঠী থেকে জিতে রাজীব গান্ধী লোকসভায় প্রবেশ করলে, লোকদলের টিকিটে প্রার্থী হওয়া শরদকে পরাজিত করেন তিনি। এর পর ১৯৮৪ সালে বদায়ুঁ থেকে লোকদলের পরাজিত হন লোকসভা নির্বাচনে। তবে ১৯৮৯ সালে জনতা দলের প্রার্থী হিসেবে সেখানেই বিজয়ী হন।
* তার পর থেকে মধেপুরা থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে শুরু করেন শরদ। ১৯৯১, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৯ সালে ওই আসন থেকে জয়ী হন।
* ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারে একাধিক মন্ত্রক সামলেছিলেন। কিন্তু ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। সেইসময় রাজ্যসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন শরদ যাদব। ২০০৯ সালে বিহারের মাধেপুরা থেকে ফের জিতেছিলেন তিনি।
* ১৯৯৮ এবং ২০০৪ সালে শরদ যাদবকে পরাজিত করেন লালুপ্রসাদ যাদব। পরে লালুর রাষ্ট্রীয় জনতা দলের টিকিটেও ভোটে দাঁড়ান ওই কেন্দ্রে।
* ২০১৭ সালে ‘মহাগঠবন্ধন’ ভেঙে বিজেপির সঙ্গে সরকার গঠন করেছিলেন নীতীশ, তখন সেই পথে হাঁটতে রাজি হননি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা জেডিইউয়ের প্রাক্তন সভাপতি।
* ২০১৮ সালে নিজের দল লোকতান্ত্রিক জনতা দল গঠন করেন শরদ যাদব। অল ইন্ডিয়া ব্যাওকওয়ার্ড (SC/ST/OBC) অ্যান্ড মাইনরিটি কমিউনিটিজ এমপ্লয়িজ ফেডারেশনেরও প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
সম্প্রতি শারীরিক কারণে শরদ যাদবকে সেভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যাচ্ছিল না। তবে নিজেই বলতেন যে মণ্ডল কমিশন, বর্ণভিত্তিক জনগণনা এবং মহিলা সংরক্ষণ বিলের জন্য তিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।