কলকাতা ও আগরতলা: আগামিকাল, শনিবার ত্রিপুরায় (Tripura) আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। তিনি এখানে দুটি নির্বাচনী জনসভা করবেন। বিজেপির রাজ্য প্রচার-কর্তা সুনীত সরকার এ খবর জানিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা (CM Manik Saha), দলের রাজ্য নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মহেশ শর্মা প্রধানমন্ত্রীকে আগরতলার (Agartala) মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে উপস্থিত থাকবেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোদি প্রথমে ধলাই জেলার আমবাসায় একটি জনসভায় ভাষণ দেবেন। দুপুর ১২টায় ওই জনসভার পর তিনি গোমতীতে ৩টে নাগাদ আর একটি ভোট প্রচারসভা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ১৩ তারিখ ফের ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচারে আসবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সফরের জন্য এদিন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব দিনভর বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য ত্রিপুরাকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে, শুক্রবারই ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচারে এসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: Cow Hug Day Cancelled: প্রেমদিবসে গো-আলিঙ্গন পালনের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার পশুকল্যাণ পর্ষদের
এক সভায় তিনি বলেন, এক ইঞ্চিও জমি ছাড়বে না তৃণমূল (TMC)। বিজেপিকে (BJP) হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক বলেন, ২০২২ সালে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বদলেছে। এবার সরকার বদলাবে। ত্রিপুরায় তৃণমূল পা রাখার পর বিজেপির পায়ের তলার মাটি কেঁপে গিয়েছে। ত্রিপুরার মানুষ ফের পরিবর্তন চায়। বিজেপিকে কীভাবে হারাতে হয়, বাংলা করে দেখিয়েছে। তৃণমূল একমাত্র দল বুক চিতিয়ে লড়াই করে।
একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, তৃণূলের আন্দোলনের জেরেই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বদল হয়েছে। আপনার ঐক্যবদ্ধ থাকলে ২০২৩ সালে ত্রিপুরার সরকার বদলাবে। তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরার কোনও দল যা পারেনি, তৃণমূল করে দেখিয়েছে। ভয় পাবেন না, নিজের ভোট নিজে গিয়ে দিয়ে আসুন। তৃণমূল আপনার পাশে আছে। তাঁর আরও দাবি, বাংলা-ত্রিপুরা ভাই-ভাই, কোনও কিছুই আলাদা নয়। ত্রিপুরায় জিতলেই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করা হবে বলেও দাবি করেন অভিষেক।
এদিন দুপুরেই তিনি আগরতলায় রওনা হয়ে যান। তার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে (Kolkata Arirport) অভিষেক সাংবাদিকদের বলেন, ত্রিপুরার মানুষ পরিবর্তন চাইছে। পাশাপাশি বাম (CPM)-কংগ্রেস, বিজেপিকেও (BJP) একহাত নেন তৃণমূল নেতা। অভিষেক বলেন, ২৫ বছরের বাম অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে, এক বুক আশা আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ত্রিপুরার মানুষ পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। কিন্তু গত ৫ বছরের বিজেপি শাসনে রাজ্যের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের উপর সন্ত্রাস নামিয়ে এনেছে বিজেপি। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ত্রিপুরার মানুষ এবার এই শাসন থেকেও মুক্তি চায়। তৃণমূল নেতা বলেন, আজ এবং কাল আমার একাধিক সভা রয়েছে। কালকের সভার স্থান আচমকাই পরিবর্তন করে দিয়েছে বিজেপি সরকার। পরিবহণ মালিকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যাতে গাড়ি না দেওয়া হয়, যাতে আমার সভায় লোকজন আসতে না পারে। সেই হুমকি উপেক্ষা করেই দলে দলে লোক আসবে তৃণমূলের সভায়। একটা রাজ্যে যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তবে সেই রাজ্যের কখনও উন্নতি হতে পারে না।
তৃণমূলনেতা আরও বলেন, ত্রিপুরায় বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহার লিখলাম। আমাদের ইস্তাহার থেকে টুকে লিখে দিয়েছে। আমরা বাংলায় কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো একাধিক প্রকল্প চালু করেছি। বিজেপিও আমাদের দেখাদেখি ইস্তাহারে নানান প্রকল্পের কথা বলেছে। তৃণমূল শুধু প্রতিশ্রুতি দেয় না। আমরা যা বলি তা করে দেখাই। অন্যান্য দলগুলি শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়।