কলকাতা: মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষিত হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের (Maharashtra Assembly Elections) দিকে তাকিয়ে সারা দেশ। মহারাষ্ট্র এ দেশের সবথেকে ধনী রাজ্য। দেশের রাজ্যগুলির মধ্যে মহারাষ্ট্রেই সবথেকে বেশি মানুষ আয়কর দেন।
আরবসাগর পারের রাজ্যটিতে লোকসংখ্যা সওয়া ১১ কোটি। দেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য মহারাষ্ট্রে প্রায় অর্ধেক লোকই শহরবাসী। প্রায় ৪৩ লক্ষ কোটি টাকার রাজ্য-জিডিপি নিয়ে দেশে সবথেকে ধনী রাজ্য এটিই। মহারাষ্ট্রে লোকসভার আসন ৪৮, বিধানসভার আসন ২৮৮টি।
গত ক’বছর ধরেই বিজেপি (BJP) দল ভাঙার খেলা চালাচ্ছে। অভিযোগ, শত-শত কোটি টাকা খরচ হচ্ছে এতে। শিবসেনার ভাঙনে শিবসেনা-কংগ্রেস-এনসিপি সরকার পড়ে যায়। পরে ভাঙা হয় এনসিপি-ও। বিজেপির হিসেব ছিল, নিজেদের ভোটের সঙ্গে শিবসেনা ও এনসিপি-র বেশ খানিকটা ভোট যোগ হলে ৪৮টি লোকসভা আসনের প্রায় সবক’টিই দখল নিতে পারবে তারা। লোকসভা ভোটের ফলাফলে সব হিসেব গুলিয়ে গেল মোদি-শাহের দলের।
কংগ্রেস ১৭টি আসনে লড়ে ১৩টিতে জেতে। শিবসেনা ২১টিতে প্রার্থী দিয়ে পায় ৯ আসন। এনসিপি ১০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৮টি জিতে নেয়। বিরোধী সমর্থিত নির্দল প্রার্থী সাংলি আসনে জয় পায়। বিরোধী মহাবিকাশ আঘাড়ির ঝোলায় যায় ৪৮টির মধ্যে ৩১ আসন। শাসক মহাযুক্তি জোট পায় মাত্র ১৭টি আসন। বিজেপি ৯টি, দলছুট শিবসেনা ৭টি এবং দলছুট এনসিপি ১ আসন পায়। বিরোধী জোট ভোটও বেশি পায় ০.৬ শতাংশ। বাংলা ও মহারাষ্ট্রের খারাপ ফলই লোকসভা ভোটে বিজেপির বাড়া ভাতে ছাই ফেলে।
আরও পড়ুন: ধুন্ধুমার মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন, জিতবে কে?
লোকসভা ভোটে প্রবল ঝটকা বিজেপি নেতাদের বেসামাল করে দেয়। পাইয়ে দেওয়া রেউড়ি প্রকল্পের বারবার বিরোধিতা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোট সামলাতে মহারাষ্ট্রে সেই রাস্তাই আঁকড়ে ধরে হিন্দুত্ববাদী দলটি। নীতি নয়, রেউড়িতেই ভরসা বিজেপি সরকারের। লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পরেই ঘোষণা ‘লড়কি বহিন’ প্রকল্পের। ৪৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে রাজ্যের বড় অংশের মহিলারা মাসে দেড় হাজার টাকা করে পাবেন। বাংলায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রায় সব মহিলারাই পান। কিন্তু মহারাষ্ট্রে যেসব মহিলার পারিবারিক আয় বছরে আড়াই লক্ষ টাকা বা বেশি, তারা পাবেন না এই সুবিধা। মহিলারা বছরে ৩টি করে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার পাবে বিনামূল্যে। কর্মহীনদের জন্য নানা অ্যপ্রেনটিসশিপ-এর ঘোষণা।
সবথেকে উল্লেখযোগ্য রাজ্য সরকারি কর্মীদের বোনাস ঘোষণার ব্যাপারটি। ভারতের নির্বাচন কমিশন ভোট ঘোষণা করার জন্য সাংবাদিক সম্মেলন ডাকে। তার ঠিক আধঘণ্টা আগে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বোনাস ঘোষণা করেন। সরকারি কর্মী ছাড়াও বোনাস পাবেন মুম্বইয়ের পুরকর্মীরা, কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক ও আশা-কর্মীরা। এসব ছাড়াও ওবিসি সহ নানা গোষ্ঠীর মানুষকে আকর্ষণ করতে নানা ঘোষণা করা হয়েছে।
লোকসভা ভোটেও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকার। তাতে তেমন কান দেয়নি জনতা। এবারের ঝুড়ি ঝুড়ি রেউড়ি কি বিধানসভা নির্বাচনে ভোট আনতে পারবে?
দেখুন অন্য খবর: